Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জয়শঙ্কর ঢাকা আসছেন ২৩ ফেব্রুয়ারি

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : ঝটিকা সফরে ঢাকা আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তার সফরকে কেন্দ্র করে গতকাল বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরের বিষয়ে আলোচনা করাই জয়শঙ্করের সফরের মূল উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সম্ভাব্য তারিখ এবং ওই সময় বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতাগুলোর বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের আসন্ন সফরে আলোচনা হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারতে যাওয়া নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। সেই সফরকে ফলপ্রসূ করার জন্যও উভয় পক্ষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সফরের বিষয়ে আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন এ ভারত সফরে বাংলাদেশের পক্ষে তিস্তা চুক্তির উপর জোর দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য অমীমাংসিত বিষয়গুলোও থাকবে। অন্যদিকে ভারতের অন্যতম দাবি হিসেবে থাকবে সামরিক খাতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায় ও শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এদিকে ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মোদি-মমতার দ্ব›েদ্বই আটকে আছে তিস্তা চুক্তি। এতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ভালোর দিকেই যাচ্ছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের জন্য এটা ভালো সময় নয়। কেননা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ রয়েছে। তাদের এই বিরোধের কারণেই তিস্তা চুক্তি আটকে আছে। বিশেষ করে মোদি এবং মমতার মধ্যে দ্ব›দ্ব দীর্ঘদিনের। অতীতেও তাদের এই দ্ব›েদ্বর কারণেই ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বেশ প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।
এতে আরো বলা হয়, ২০১৫ সালের জুনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশে সফর করেছিলেন মমতা। সে সময়ও নয়াদিল্লী এবং ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই চুক্তি আটকে রেখেছে।
এর আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশে সফরের সময় তিস্তা চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার শেষ মুহূর্তেই ওই চুক্তি বাতিল করা হয়।
শুধু তাই নয়, গঙ্গা ব্যারাজেও মমতার আপত্তি। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, সম্ভাব্য চুক্তিগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিনিময় করা তালিকায় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্থান পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে এ চুক্তির জোরালো কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পে ভারত সায় দিয়েছে বলে বাংলাদেশী কর্মকর্তারা বললেও শেষ পর্যন্ত এটিও অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত ‘রাজ্যকে ডুবিয়ে পদ্মার বাঁধে নারাজ মমতা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আপত্তির পর গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপত্তি জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার মনে করছে, বাংলাদেশে পদ্মা নদীতে ব্যারাজ হলে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদে নদীভাঙন তীব্র হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গকে বন্যা ও ভাঙনের মুখে ঠেলে দিয়ে ঢাকাকে বাঁধ (ব্যারাজ) দিতে দেয়া যাবে না। এমনকি এ নিয়ে দুই দেশের আলোচনার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গ থাকবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৫ ও ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় সফরের ফিরতি সফর হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই ভারতে পূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সফরে যাবেন। এ সফরে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে উভয় দেশ এরই মধ্যে কয়েক ডজন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) খসড়া চূড়ান্ত করেছে। গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাবিষয়ক এক বৈঠকে ওই চুক্তি ও এমওইউগুলোর খসড়া পর্যালোচনা করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ