Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশের বহিঃবাণিজ্যে ঘাটতি দিন দিন বেড়ে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক লেনদেনে উদ্ধৃতিতে থাকা বাংলাদেশ ঘাটতিতে পড়ে পদ্মা সেতুসহ বড় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পরে। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই ঘাটতি আরও বেড়েছে।
এসব কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ঘাটতি বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত লেনদেন ভারসাম্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ কোটি ৩০ লাখ ডলারে (৬ হাজার ২৮১ কোটি টাকা)। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫০ কোটি ৪০ লাখ ডলার (৩ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা)।
অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে বড় উদ্ধৃত নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের শুরুতেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঋণাত্মক ধারায় (ঘাটতি) চলে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ৩৭০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। তার আগের বছরে (২০১৪-১৫ অর্থবছরে) এই উদ্ধৃতের পরিমাণ ছিল ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পরিচালক জায়েদ বখত মনে করছেন, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য খাতে আমদানি ব্যয় বাড়ায় লেনদেন ভারসাম্যে এই ঘাটতি দেখা গিয়েছে।
‘তবে এখনই বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই,’ বলেন তিনি।
‘বেশ কিছু দিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল। এ খাতে আমাদের খরচও কম হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দাম বাড়ায় আমদানি ব্যয়ও বাড়ছে। তাছাড়া পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি। খাদ্যপণ্য (চাল ও গম) আমদানিতেও খরচ বাড়ছে।’
এ সব কারণেই লেনদেন ভারসাম্যে এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন এই গবেষক।
‘এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যাপিটাল মেশিনারি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়া মানে দেশে বিনিয়োগ বাড়া। অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হওয়া। সেটাই হচ্ছে। তাছাড়া
বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে ৩২ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। এ অবস্থায় আমদানি ব্যয় বাড়লেও তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’
২০১২ সালে বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল (প্রায় ১৫৯ লিটার) জ্বালানি তেলের দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১৫ ডলার। দফায় দফায় কমে এক পর্যায়ে ২০১৬ সালে তা ৩০ ডলারে নেমে আসে। চলতি সপ্তাহে এ মূল্য ৫৩ থেকে ৫৭ ডলারে ওঠানামা করছে।
নিয়মিত আমদানি-রফতানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাবে উদ্ধৃত থাকার অর্থ হল, নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ