পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সউদী আরবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আসছে। তবে তা অত্যন্ত ধীরগতিতে। দেশটির অনেক নাগরিকই পুরনো জীবনযাত্রা ধরে রাখতে চায়। তবে অধিকাংশ জনগণই সউদী শাসকদের পরিবর্তনের জন্য চাপ দিচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশটির সমাজ ব্যবস্থায় নাটকীয় পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। রিয়াদের গাল্ফ রিসার্চ সেন্টারের জন স্ফ্যাকিয়ানাকিস বলেন, ‘সময় দ্রæত শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় কয়েক বছর আগে এর রাজস্ব অর্ধেকে নেমে আসে। বর্তমানে এটি তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাজেট ঘাটতি দেখা দেয়ায় সউদী সরকারকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এতে দেশটির সমাজব্যবস্থার বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলছে। স্ফ্যাকিয়ানাকিস বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে সউদী আরব রাজস্বের জন্য একটি খাতের ওপরেই নির্ভরশীল ছিল।’ দেশটির ৯০ শতাংশ রাজস্ব আসে তেল ও গ্যাস থেকে। তিনি আরো বলেন, ‘এখন দেশটির রাজস্বের আরো উৎসের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।’ গত বছর রূপকল্প ২০৩০ শীর্ষক নতুন মাস্টারপ্ল্যান করেছে দেশটির সরকার। সউদী আরবের ৩১ বছর বয়সী ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এর প্রণয়ন ও অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি পরামর্শকদের সহায়তায় উচ্চাভিলাষী রূপকল্পের বøুপ্রিন্ট তৈরি করেছেন। দেশটির তেলমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ্ বলেন, ‘রূপকল্প ২০৩০ ও অন্যান্য লক্ষ্য অর্জন ও বাস্তবায়ন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’
রাষ্ট্রীয় বৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর সাবেক এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমানে জ্বালানি, শিল্প ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। বাজেট ঘাটতি দেখা দেয়ায় সরকার বেশ কিছু কঠোর অর্থনৈতিক সংস্কারে হাত দিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন কমানো ও অপচয় রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতকে রাজস্বের অন্যতম বৃহৎ উৎস হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি এখনো এই খাত থেকে খুব একটা বেশি রাজস্ব আসছে না। সউদী আরবের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই তরুণ। এদের মধ্যে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ সাবেক বাদশাহ্ আব্দুল্লাহ্র বৃত্তির আওতায় পশ্চিমা দেশগুলোর বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া করেছে। বিদেশে লেখাপড়া শেষে পরিবারের সদস্যদের টানে এদের অনেকে দেশে ফিরে এসেছে। এখন তারা দেশে কাজ করতে চাইছে। কিন্তু দিনশেষে তারা সউদী আরবের কঠোর রক্ষণশীল জীবনযাত্রার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারছে না। দেশটিতে সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি অনাত্মীয় নারী-পুরুষ রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে বসতেও পারে না। রিয়াদের বাসিন্দারা জরুরি ভিত্তিতে নতুন রেস্তোরাঁ খোলার দাবি করছে। সেখানে নারী-পুরুষ পাশাপাশি বসার ক্ষেত্রে শিথিলতা ও সঙ্গীতের ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছে তারা।
তরুণী ওয়ালিদ আল-সায়েদান বলেন, ‘আমাদের এখানে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি ও সিনেমা চালু করা উচিত।’
তবে চলতি বছর ৮০টি সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এতে লাইট শো ও সঙ্গীতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটিতে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমোদনের বিষয়টি অর্থনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অনেক সউদী যুক্তি দেখাচ্ছে, নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমোদনের ফলে দেশের অর্থনীতির গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেগবান হবে। এছাড়াও রাজনৈতিক সংস্কার, মানবাধিকার অথবা নারীদের স্বাধীনতা ও চলাফেরার ওপর যে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে তা শিথিল করাও ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সউদী আরবের বাসিন্দারা সব সময়ই সস্তায় পেট্রোল কিনে থাকেন। এই জ্বালানির জন্য তাদেরকে কর দিতে হয় না। এছাড়াও তাদের পানি ও বিদ্যুৎ বিলও দিতে হয় না। কিন্তু দেশটিতে চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে এগুলোর ওপর থেকে ভর্তুতি হ্রাস এবং একটি সেলস ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও একটি নতুন ‘সিটিজেনস অ্যাকাউন্ট’ দেশটির দরিদ্র পরিবারগুলোর ব্যয় মেটাতে সহায়তা করবে। সউদী আরবে সমাজব্যবস্থা, অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় শিগগিরই পরিবর্তন আসছে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদের এক সফল নারী ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি আমার পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বাজি ধরেছি, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। তবে এখন আমার মনে হচ্ছে, এটা আগামী বছরের গোড়ার দিকে হবে। ৪০ বছরের বেশি বয়সের নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া হবে।’ সূত্র : সিনহুয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।