পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গত শনিবার ছিল বিজেপির ‘সমর্পণ দিবস’। বিজেপির প্রাণপুরুষ দীনদয়াল শর্মার মৃত্যুদিন ঘিরে বিজেপি এই সমর্পণ দিবস পালন করে আসছে।
দিবসটিকে ঘিরে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দিলীপ ঘোষ অমর্ত্য সেন সম্পর্কে বলেন, ‘অমর্ত্য সেনের চরিত্র নেই। মেরুদ- নেই।’ কলকাতার মৌলালি যুবকেন্দ্রে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় দিলীপ ঘোষ এই অর্থনীতিবিদের ওপর তাঁর ক্ষোভ ঝাড়েন।
ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় যাঁরা সরব হয়েছিলেন, তাদের একজন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছিলেন, এটি গুরুতর ভুল। এতে দেশের অর্থনীতির তো বটেই, বিশেষত গরিব মানুষের ক্ষতি হবে বেশি।
অবশ্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শনিবারের জনসভায় কোন পরিপ্রেক্ষিতে অমর্ত্য সেনের সমালোচনা করলেন তা স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের একজন নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। বাঙালি। ...তিনি কী করেছেন? বাংলার কেউ বোঝে না। দুনিয়ার কেউ বোঝে না। তিনি নিজেও বোঝেন কি-না, সন্দেহ আছে। কী দিয়েছেন দেশকে? কী করেছেন তিনি?’ এখানেই থামেননি দিলীপ। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের লোকদের নিয়েই আমরা আজ গর্ববোধ করি, যাদের মেরুদ- নেই, চরিত্র নেই।’ তাঁর মতে, ‘এদের (অর্থাৎ অমর্ত্য সেনদের) কেনা যায়, বিক্রি করা যায়। চমকানো যায়। পায়ে পড়ে যায়।’
অমর্ত্য সেনকে নিয়ে এমন মন্তব্যে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। প্রখ্যাত চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অমর্ত্য সেনকে বোঝার ক্ষমতা তাঁদের নেই। এই মন্তব্য আসলে মূর্খতার পরিচয় দেয়।’
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপির রাজনীতি ও সংস্কৃতি কী, এখন তা ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ছে। দিলীপ ঘোষকে এই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে বলছি। তাঁর দল বেচাকেনায় পটু, তাই এ বিষয় ভালোই বোঝেন।’
কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘এ ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য বাংলার মানুষ সমর্থন করবে না।’
সিপিএম সাংসদ মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘দিলীপ ঘোষ আরএসএসের চিন্তা-ভাবনায় সমৃদ্ধ। ধর্মের নামে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা যুক্তিবাদী মানুষকে বুঝবেন কেমন করে?’
পশ্চিমবঙ্গের তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘দিলীপ ঘোষের মন্তব্য চিন্তাহীনতা, শিক্ষাহীনতার ফসল।’
সাবেক সাংসদ কৃষ্ণা বসু বলেছেন, ‘এ ধরনের মন্তব্য প্রতিবাদের অযোগ্য।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস বলেছেন, ‘এ মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক, অনভিপ্রেত। অমর্ত্য সেনের পা-িত্য, ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর।’
তবে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সমালোচনা করলেও অমর্ত্য সেন নিজের মতো প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (দিলীপ ঘোষ) যা ঠিক মনে করেছেন, তা বলেছেন। তাঁর বলার অধিকার আছে। আপত্তির কোনো কারণ নেই। সবকিছু নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। যদি এসব তাঁর আলোচ্য বিষয় বলে মনে হয়, তবে অবশ্যই আলোচনা করা উচিত।’ সূত্র : অনন্দবাজার পত্রিকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।