Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বেলাবতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে দুই পরিবারের ৯ জনসহ নিহত ১২

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অন্যান্য স্থানে আরও ৪ জনের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে : মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ একটি সিএনজিকে পাশ কাটাতে গিয়ে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই পরিবারের ৭ জনসহ ১২ জনের মর্মান্তিক প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
গতকাল  (রোববার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেলাব উপজেলাধীন দড়িকান্দী নামক স্থানে এই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের হাসন (৩৫), তার স্ত্রী হালিমা (২৬), পুত্র ইশান (১২) ও শ্যালিকা জুম্মা (১৬), মানিক (৫০), স্ত্রী মাফিয়া (৪০), পুত্র অন্তর (৭) ও পুত্রবধূ শারমিন (২০), নাজমুল (৩৬) ও বোন সাধনা (৪০) এবং ড্রাইভারের সহকারী হিরা মিয়া (৪২)। নিহত অপরজন হচ্ছেন হাইয়েসের ড্রাইভার। তার নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। সে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে কুতুব উদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা (৩০) ও ফাতেমা বেগম (৩০) ও অজ্ঞাতনামা ড্রাইভারকে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ও পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।  
ভৈরব হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান ও কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ ইসলাম জানিয়েছেন, একই ইউনিয়নের হাওড় এলাকা ছাতিরচর গ্রামের বাসিন্দা হাসান ও মানিক পরিবার দীর্ঘ দিন যাবত ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের বস্তিতে বসবাস করে ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে ও দিনমজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তারা ছাতিরচরের একটি গ্রাম্য মেলায় যোগ দিতে বছরে একবার গ্রামে আসতো। গতকাল রবিবার তারা এই গ্রাম্য মেলায় যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস নিয়ে ছাতিরচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। মাইক্রোবাসটি বেলাব উপজেলার দড়িকান্দী এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ সামনের একটি পার্শ্ব রাস্তা থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা মাইক্রোবাসটির সামনে পড়ে। মাইক্রোবাসটি সিএনজিটিকে পাশ কাটিয়ে যাবার সময় বিপরীত দিক থেকে অগ্রদূত পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস দ্রুত বেগে এসে মাইক্রোবাসটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে মাইক্রোবাসটি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুই পরিবারের ৯ জনসহ ১১ জন মাইক্রোযাত্রী। আহত হয় আরো ১০ জন। আশপাশের লোকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ও আহত যাত্রীদেরকে উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানা পুলিশ স্থানীয় সহযোগিতায় লাশগুলো উদ্ধার করে। পরে লাশের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার লোকেরা বিনা ময়না তদন্তেই লাশগুলো গ্রামের বাড়ি ছাতিরচরে নিয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মোজ্জাম্মেল হক, বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা, ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল আলম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদানের ঘোষণা  দেয়া হয়েছে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান  মোঃ হানিফ ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ছাতিরচর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিকেল পৌনে ৪টায় নিহতদের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। এ সময় হাজার হাজার মানুষ নিহতদের লাশ দেখার জন্য গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমায়। তিনি আরো জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের গোরস্থানে তাদেরকে দাফন করা হয়েছে।
মাগুরায় নিহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে
মাগুরা জেলা সংবাদদাতা : মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ জনে। শনিবার ভোর ৫টার দিকে  মাগুরা-যশোর মহাসড়কের মঘিরঢাল এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায়  মাইক্রোবাসের তিন যাত্রী নিহত হয় । পরে ঢাকায় নেয়ার পথে কোমর মোল্লা নামের অপর যাত্রী নিহত হয়। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ জনে। আহত হয়েছে  ৯ জন। নিহতরা হচ্ছে খাদিজা (৩০),  ছুটু বিবি (৫৫) মজিরন (৪৯) ও কোমর মোল্লা (৪৬)। নিহতদের  বাড়ি রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার চিনাপ্রতাপ গ্রামে। নিহতরা একই পরিবারের সদস্য।
এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
সখিপুর উপজেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের সখিপুরে গত শনিবার রাত সাতটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আরিফ শিকদার (১৭)-এর মৃত্যু হয়েছে। তার পিতার নাম হেকমত শিকদার, বাড়ি উপজেলার বেলতলী এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একটি মোটর সাইকেলে তিন আরোহী সাগরদিঘী-সখিপুর সড়ক ধরে দ্রুতবেগে বড় চওনার দিকে আসছিল। কুতুবপুর নামক স্থানে মোটর সাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। আশপাশের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে সখিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফ শিকদারকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আরিফের সহপাঠী অপর দুই আরোহী আল-আমিন, মেহেদীকে সখিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘাটাইলে ট্রাক চাপায় স্কুল ছাত্র নিহত
ঘাটাইল উপজেলা সংবাদদাতা :  গতকাল (রোববার) দুপুরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মিনি  ট্রাকের  চাপায় সৈকত (১৩) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। উপজেলার মাটিআটা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্কুলে যাবার পথে একটি দ্রুতগামী মিনি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। এ সময় চালক গাড়ি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। নিহত স্কুল ছাত্রের বাড়ি উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে। তার বাবার নাম বুলবুল খলিফা। সে ধলাপাড়া হক টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট স্কুলের ষষ্ঠ  শ্রেণির শিক্ষার্থী।
কসবায় মোটর সাইকেল আরোহীর মৃত্যু
কসবা উপজেলা সংবাদদাতা : ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় গতকাল (১২  ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে মোটর সাইকেল চালক রিফাত মিয়ার (২৬)। তিনি কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের যমুনা গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে; রিফাত মিয়া একটি মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে কসবা উপজেলা সদরে রওয়ানা করেন। এতে চালকসহ তিনজন ছিলো। মোটর সাইকেলটি কসবা-কুটি সড়কের লেশিয়ারা এলাকায় প্রবেশ পথে একটি রিকশার সাথে ধাক্কা লেগে মোটর সাইকেলটি গতি হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে চালক রিফাত মিয়া গুরুতর আহত হন। অন্যরা সুস্থ রয়েছেন। গুরুতর আহত রিফাত মিয়াকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
কসবায় মটর সাইকেল আরোহী নিহত
কসবা (ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়া) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় গতকাল রোববার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মটর সাইকেল চালক রিফাত মিয়ার (২৬)। তিনি কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের যমুনা গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে; রিফাত মিয়া একটি মটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে কসবা উপজেলা সদরে রওয়ানা করেন। এতে চালকসহ তিনজন রয়েছে। কসবা-কুটি সড়কের লেশিয়ারা এলাকায় প্রবেশ পথে একটি রিকসার সাথে ধাক্কা লেগে মটর সাইকেলটি গতি হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে চালক রিফাত মিয়া গুরুতর আহত হন। অন্যরা সুস্থ রয়েছেন। গুরুতর আহত রিফাত মিয়াকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ