Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে ১১ ভুয়া ডিবি সদস্য গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গাড়ী, অস্ত্র, গুলি, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ, ডিবি পুলিশের জ্যাকেট ও ব্যাগ উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার : ছাঁটাই করা চুল। শরীরে দামি পোশাক। কোমরে পিস্তল। এক হাতে ওয়াকিটকি। অন্যহাতে হ্যান্ডকাফ। গায়ে জ্যাকেট। যাতে ইংরেজিতে লেখা ডিবি। আর বিচরণ দামি মাইক্রোবাসে।
একসাথে অন্ততঃ ৬/৭ জন। তাদের দেখে সবাই ধরে নেবে এরা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য। আসল সত্য এরা সক্রিয় দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী। আর ছিনতাইয়ের কৌশল হিসেবে এবং সাধারণের চোখ ফাঁকি দিতেই তাদের এ অভিনব কৌশল। শনিবার রাতে এ চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে, অস্ত্র, ওয়াকিটকি, ডিবি লেখা জ্যাকেট ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী।
ছিনতাইকারী এ চক্রটির মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২৫ থেকে ৪০-এর মধ্যে। তাদের বসের বয়সটা একটু বেশি। টার্গেট তাদের গভীর রাতের প্রাইভেটকার, সিএনজি বা রিকশার যাত্রী। ডিবি পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে ওই যাত্রীদের জিম্মী করে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তাদের চোখ বেঁধে ঘুরে বেড়ায় তাদের মতো করে নিরাপদ এলাকায়। পরে তাদের টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় সবকিছু। এক সময় গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় গাড়িতে তুলে নেয়া ব্যক্তিদের। কখনো কখনো এরা সরাসরি অংশ নেয় ডাকাতিতেও। দিনের বেলা যারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হন সেসব ব্যক্তিদেরই এরা টার্গেট করে। এজন্য তাদের নিয়োজিত রয়েছে সোর্স নামধারী তাদেরই সদস্য। ব্যাংকে এদের নিজস্ব সোর্স বেশি। যাদের কাছেও ব্যাংকের চেকবইসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজ-পত্র থাকে। যে কেউ তাদের দেখলে মনে করবেন তারা ব্যাংকিং সংক্রান্ত কাজে এসেছেন। আসলে তারাও ওই দুর্বৃত্ত দলের সদস্য। তারা পান ছিনতাইকরা টাকার একটি বড় অংশ। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, শনিবার রাতে সবুজবাগ এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একটি চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশের পূর্ব বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিম।  তাদের কাছ থেকে ৩টি গাড়ি, ৫ রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন, ৩টি বিদেশী পিস্তল, দুটি দেশীয় পাইপ গান, একটি ওয়াকিটকি, ৫টি ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ৫টি হ্যান্ডকাফ ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। রাজধানীতে এ ধরনের ভুয়া ডিবি পুলিশের ৬-৭টি চক্র সক্রিয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ইউসুফ কাজী, আলাউদ্দিন আলী, আকাশ রহমান মিন্টু, আফসার আলী, ফারুক হোসেন, আবদুল মালেক মিয়া, মাসুদ পারভেজ, শাহীন কাজী, লিটন শেখ, মাসুম গাজী, আসলাম শেখ। তাদের আরো কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিলো। পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে যেন কোনো দোকানী পুলিশের সামগ্রী বিক্রি না করেন এ ব্যাপারে নিষেধজ্ঞা আছে। তারপরও গ্রেফতারকৃতদের কাছে কীভাবে এসব সামগ্রী গেলো তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতরা এর আগে কতগুলো ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। ডিবির যুগ্ম কমিশনার জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইউসুফ কাজীকেই দলনেতা মনে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ছিনতাই বা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো ভাড়া করে আনা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা গাড়িচালককে ম্যানেজ করে ফেলে। কখনও আবার তারা নিজেদের লোক দিয়ে গাড়ি চালায়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ