পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : চওড়া হাসি। ব্যক্তিগত আক্রমণে না গিয়ে পরিণত জবাব। পাখির চোখ যুব সমাজের ভোট এবং নিশানায় নরেন্দ্র মোদী। উল্টর প্রদেশের প্রথম দফার ভোটের দিন রাহুল গান্ধী-অখিলেশ যাদবের যুগলবন্দি বোঝাল, দু’জনেই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই গত কয়েক দিনে নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত আক্রমণের পরিণত জবাব দিলেন রাহুল-অখিলেশ। ‘কাম কি বাত’ (কাজের কথা) দিয়েই জবাব দিলেন মোদীর কটাক্ষের। লাক্ষেèৗয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করলেন, ক্ষমতায় এলে প্রধান কোন ১০টি প্রতিশ্রুতি পালন করবে সপা-কংগ্রেস সরকার। গত দু’-তিন দিন ধরেই ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে রাজ্যসভায় তার পূর্বসূরি মনমোহন সিংহকে দুর্নীতি থেকে গা বাঁচানো নিয়ে আক্রমণ করে বলেন, ‘বর্ষাতি পরে স্নান করা ওঁর থেকে শিখতে হয়’! এর পর গত শনিবার রাহুলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওঁর নামে গুগল খুঁজলে সব থেকে বেশি জোক্স মেলে’!
পাল্টা জবাবে গতকাল রাহুল কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণে যাননি। তা-ই বলে মোদীকে বিঁধতেও ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘মোদীজি গুগল সার্চ করতে ভালোবাসেন। অন্যের ঠিকুজি-কোষ্ঠী পড়তে ভালোবাসেন। অন্যের স্নানঘরে উঁকি মারতে ভালোবাসেন! এসব উনি ফ্রি-টাইমে করুন, সন্ধ্যাবেলা করুন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আসল কাজটা তো করুন! চাকরি দিন, চাষীদের সুরাহা দিন। নিরাপত্তার কাজটা করুন’।
কম যাননি অখিলেশও। তিনি বলেন, ‘এ তো নিছক ভোট। রাগ করা, আবেগতাড়িত হওয়া উচিত নয়। মোদীজি কো গুস্সা কিঁউ আতা হ্যায়? কারণ উনি বুঝতে পারছেন, পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে। এখন ইন্টারনেটেই ঠিকুজি-কোষ্ঠী পাওয়া যায়। উনি ‘মান কি বাত’ করেন, ‘কাম কি বাত’-ও করুন!’
প্রথমে পরিকল্পনা ছিল, গতকাল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে যখন ভোট গ্রহণ পর্ব চলবে, তখন পূর্ব উত্তর প্রদেশে গিয়ে মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে ‘রোড শো’ করবেন রাহুল-অখিলেশ। টেলিভিশনের মাধ্যমে তাদের যুগলবন্দির বার্তা পৌঁছবে ভোটারদের কাছে। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে এই কাজটাই করেছিলেন মোদী। দেশের এক প্রান্তে যখন ভোট চলছে, তখন অন্য প্রান্তে প্রচারে যেতেন মোদী। এখন ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর রাহুলের পাশে। রবিদাস জয়ন্তীর জন্য বারাণসীর ‘রোড শো’ বাতিল করতে হলেও গতকাল লাক্ষেèৗয়ে যুগলে হাজির হন দুই নেতা। দশ দফা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন। যা আসলে সপা-কংগ্রেস জোটের অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি।
এবার উত্তর প্রদেশে ২৪ শতাংশ ভোটারের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এঁদের হাতেই সরকার গড়ার চাবিকাঠি। সে দিকে চোখ রেখেই রাহুল-অখিলেশের প্রতিশ্রুতির তালিকায় যুবক-যুবতীদের জন্য ফ্রি স্মার্টফোন, চাকরি, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মতো বিষয় জায়গা পেয়েছে সব থেকে উপরে। মোদী সপা-কংগ্রেসের জোটকে ‘দুই পরিবারের জোট’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। গতকাল অখিলেশ-রাহুল একে ‘তারুণ্যের জোট’ আখ্যা দিয়েছেন। অখিলেশের সরকার সম্পর্কে উত্তর প্রদেশের জনতার সবথেকে বড় নালিশ ছিল, আইন-শৃঙ্খলার দুরবস্থা। সে কথা মাথায় রেখেই গতকাল দ্রুত, কার্যকরী পদক্ষেপের জন্য পুলিশ বাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গরিব, মহিলা, সংখ্যালঘু, দলিতদের কথা তো আছেই।
উত্তরপ্রদেশ ঘুরে রাহুল কৃষকদের ঋণ মওকুফ, সস্তায় বিদ্যুৎ এবং ফসলের ন্যায্য দামের দাবি তুলেছিলেন। সপা-কংগ্রেস জোট সরকারে এলে এই তিনটি দাবিই পূরণ হবে বলে গতকাল জানিয়েছেন রাহুল।
এলেই বিজেপি কৃষকদের ঋণ মওকুফ করবেÑ মোদী এ কথা বলে নোট বাতিলের ক্ষতে প্রলেপ দিতে চেয়েছেন এবং সেই সঙ্গেই রাহুল-অখিলেশ জুটিকে বারবার বিঁধেছেন। পাল্টা উত্তরও এসেছে। বদায়ুঁ থেকে লাক্ষেèৗয়ে দিনভর চলেছে কথার তরজা। প্রচারে রাহুল-অখিলেশের বার্তা, ‘কাম বোলতা হ্যায় (কাজ কথা বলে)’।
বদায়ুঁতে অখিলেশের উদ্দেশে মোদীর পাল্টা কটাক্ষ, ‘কারনামা বোলতা হ্যায় (দুষ্কর্ম কথা বলে)!’ অখিলেশ লাক্ষেèৗয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘অচ্ছে দিন কোথায়?’ বদায়ুঁতে মোদীর জবাব, ‘অচ্ছে দিনের দায়িত্ব অখিলেশের। তিনিই গত পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে রয়েছেন’। অখিলেশ বলেছেন, ‘মোদীজি যদি একবার আগরা-লাক্ষেèৗ এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেন, তাহলে তিনিও সপা-কে ভোট দেবেন’। মোদী বলেছেন, ‘ভোটের ফল বের হলেই সব হিসাব পরিষ্কার হয়ে যাবে’।
এ তো গেল কথার লড়াই। কিন্তু গত শনিবার লক্ষেèৗয়ে সকলের নজর কেড়েছে রাহুল-অখিলেশ যুগলবন্দির নিখুঁত তালমিল। উত্তরপ্রদেশে সপা-কংগ্রেসের জোট হলেও এক ডজনের বেশি আসনে রফা হয়নি। দুই দলই প্রার্থী দিয়েছে। সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠলে গতকাল রাহুল-অখিলেশ যুক্তি দিয়েছেন, সার্বিকভাবে এর জন্য জোটে কোনও সমস্যা নেই।
রাহুলের যুক্তি, ‘৯৯ শতাংশ আসনেই সমস্যা নেই। কিছু আসনে সমস্যা থাকলেও সেটা কোনও ব্যাপার নয়’। অখিলেশ বলেন, ‘বার্তা স্পষ্ট, সরকার আমাদেরই হবে’।
প্রথম দিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল প্রথম কথা বলেছিলেন। এদিন তিনি বড় ভাইয়ের মতো অখিলেশকে এগিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এবার অখিলেশ প্রথমে বলবেন’। অখিলেশ মুচকি হেসে বলেন, ‘খুব ভালো কথা যে, উনি লক্ষেèৗতে এসে ‘পহলে আপ’-এর রীতি শিখে নিয়েছেন’। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।