পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ড. আকবর আলি খান বলেছেন, ইতঃপূর্বে বাংলাদেশে কোনো সার্চ কমিটি যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সফলতার পরিচয় দেয়নি। সম্প্রতি গঠিত সার্চ কমিটিও নির্বাচন কমিশনার সুপারিশের ক্ষেত্রে সফল হয়নি। যাদের অতীতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পৃক্ততার ইতিহাস রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই সেসব লোককে নির্বাচন কমিশনার বাছাই না করাই শ্রেয়। আর নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে তা নিয়ে এখন ভাবা উচিত। এটি শুধু রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, জনগণই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণভোট একটি উত্তম পদ্ধতি হতে পারে। এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আরো দুই মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখা যেতে পারে এ মর্মে অভিমত দেয়া হয়েছিল, সেই বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার এফডিসিতে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক যৌথভাবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থায় (এফডিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আকবর আলি খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য সার্চ কমিটিকে ১০ দিনের সময় দেয়া হয়েছিল। তারা বিভিন্ন দল থেকে প্রার্থীর নাম নিয়ে তাদের পছন্দমতো নাম বাছাই করেছে। কিন্তু এত সহজে ১০ দিনে লোকের তালিকা দেখে বাছাই করা সম্ভব নয়। যাদের অতীতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পৃক্ততার ইতিহাস রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই সেসব লোককে নির্বাচন কমিশনার বাছাই না করাই শ্রেয়। যদি তিনি কোনো লোকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হন, তাকে দেয়া হবে না। এটা ব্যক্তির প্রতি বিচার করার বিষয় নয়, এটা নির্বাচন করার জন্য।
আকবর আলী খান আরো বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে বিরাজমান অসহিষ্ণুতা ও অশালীন বাকযুদ্ধ গণতন্ত্রের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য সহায়ক নয়। কথায় কথায় আমরা নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সাথে তুলনা করি। কিন্তু আমরা সেই দেশের অন্য ভালো দিকগুলো নিয়ে কথা বলি না বলে উল্লেখ করেন ড. আকবর আলী খান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণভোট গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তিশালী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ দেশে গণভোট শক্তিশালী করার জন্য দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। যে দেশে রাজনৈতিক দলগুলো বিবাদে লিপ্ত থাকে, একে অপরকে অভদ্র ভাষায় গালিগালাজ করে এবং কথায় কথায় শোধ নেয়ার চেষ্টা করে, সে দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী হওয়া সম্ভব নয়।
শিল্প উদ্যোক্তা এম এ সবুর বলেন, টেকসই গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বদিচ্ছা ও সক্ষমতা দুটিই জরুরি। তিনি আরো বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সফলতা নির্ভর করবে সরকারি দল সুষ্ঠু নির্বাচনে কতটুকু আন্তরিক তার উপর। তবে তিনি আশাবাদ বক্ত্য করেন নির্বাচন কমিশন তার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। ইতোমধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে। নতুন এই নির্বাচন কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। তিনি বলেন, বিরোধী জোট গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি করে আসছে। তাই উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে অধিক গণতন্ত্রকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
ছায়া বিতর্কের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নয়, বর্তমান সরকারই যথেষ্ট’। উদ্বোধনী প্রতিযোগিতায় এতে সরকার দলের হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি দলের হয়ে অংশ নেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতায় সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি জয়লাভ করে। পরে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা ক্যাডেট কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এস এম মোর্শেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম। বিতর্কে মক স্পিকার হিসেবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিতার্কিকদের সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার যৌথ আয়োজনে বছরব্যাপী আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৩২টি বিশ^বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।