Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেপরোয়া ছিনতাইকারী চক্র

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উমর ফারুক আলহাদী : রাজধানীতে আবারো বেপরোয়া ছিনতাইকারী চক্র। হঠাৎ করে বেড়েছে ছিনতাই। চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ছিনতাইকারীরা প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবর্ষণ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহত করে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লুটপাট চালায়। এরা এতটাই বেপরোয়া যে, এখন শুধু রাস্তাঘাটে নয়, যাত্রীবাহী বাসে, রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করে টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। শুধু রাতেই নয়, দিনের আলোতেও সমান তালে ছিনতাই করে যাচ্ছে তারা। ঝামেলা এড়াতে বেশিরভাগ ভুক্তভোগী মামলা বা থানায় অভিযোগ দেননি। তাই পুলিশের কাছে ছিনতাইয়ের সঠিক পরিসংখ্যানও নেই। তবে, ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছিনতাইয়ের শিকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ভোরে রাজধানীর রাস্তাঘাট অনিরাপদ। কোন ধরনের নিরাপত্তা নেই। এ সময় বিভিন্ন পয়েন্টে ওঁৎ পেতে থাকে ছিনতাইকারীরা। রাজধানীর শতাধিক স্পটে প্রতিনিয়ত ছিনতাই হচ্ছে। ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ গুলশান, বনানী ও নিউ মার্কেট থানা এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। কিন্তু নিউ মার্কেট থানা এলাকায় ১২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা সিসি ক্যামেরায় শনাক্ত করার পরেও পুলিশ ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তির অভিযোগ, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার পরেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ এদের গ্রেফতার করতে পারেনি। ঢাকা কলেজ-এর আশপাশ এলাকাসহ কাঁটাবন ও নিলক্ষেত এলাকা ওই ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রণে। এদের অধিকাংশই রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও প্রভাব কাটিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে নিউ মার্কেট থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের নাকের ডগায় দাঁড়িয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে ছিনতাইকারীরা নির্বিঘেœ পালিয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার এবং ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার করতে পারছে না। এমন কি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার পরেও গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এ অভিযোগ উঠেছে নিউমার্কেট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে নিউমার্কেটের বিশ্বাস বিল্ডার্স ভবনের সামনে ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের পর একটি ছিনতাইকারী দল সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এতে দেখা যাচ্ছে, একটি ব্যাগ হাতে করে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত এক যুবক রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় পিছন থেকে তিন যুবক এসে তার গতিরোধ করে এবং তার হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে তারা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বিশ্বাস বিল্ডার্সের সামনে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। গত বুধবার পুলিশ ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করলেও এখনো তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছিল, ছিনতাইয়ের শিকার ওই ব্যক্তি বিশ্বাস বিল্ডার্সের সহকারী পরিচালক মো. সজিব। তিনি মঙ্গলবার সকালে ঢাকা কলেজের পার্শ্ববর্তী ইসলামী ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। পরে ওই টাকাগুলো একটি ব্যাগে করে নিয়ে বিশ্বাস বিল্ডার্সে আসছিলেন। কিন্তু নিজ কর্মস্থলের সামনে আসা মাত্র ছিনতাইকারীরা অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি নিউমার্কেট থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ছিনতাইয়ের ঘটনা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পুলিশ সংগ্রহ করে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করলেও এখনও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি কেন। কী কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়নি তা রহস্যজনক বলে দাবী করছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি। গতকাল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অপরাধীদের এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে কমপক্ষে ১৫ জন  চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৫ জন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় পায়ে গুলি করে এক নারীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের জসীমউদ্দীন সড়কে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে প্রাইভেটকারে করে শাহানা করিম (৫০) ও তার মেয়ে নাতিকা রেজওয়ানা করিম (২৮) যাচ্ছিলেন। এসময় মোটর সাইকেলে করে এসে চারজন দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ এবং গুলি করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অস্ত্রধারী চার যুবক একটি যাত্রীবাহী বাসের গতিরোধ করে। এরপর তারা তিনজনকে গুলি করে ৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরদিন মঙ্গলবার ফেব্রুয়ারি সকালে নিউমার্কেট এলাকায় গুলি করে বিশ্বাস বিল্ডার্সের এক কর্মীর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা উত্তোলন করেন বিশ্বাস বিল্ডার্সের সহকারী পরিচালক মো. সজিব। এরপর তিনি বিশ্বাস বিল্ডার্স ভবনের নিচে পৌঁছলে কয়েকজন যুবক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সজিবের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়।
গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স ক্লাবের সামনে সশস্ত্র ছিনতাইকারী চক্র গুলি করেছে মনিরুজ্জামান মাসুম নামের এক শিক্ষার্থীকে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার জন্য ওই শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের ছাত্র মনিরুজ্জামান মাসুম বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মাসুম তার বন্ধুসহ ট্যুরে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট নিয়ে বাইকে এজেন্সি অফিসে যাচ্ছিলেন। এ সময় চারটা বাইক টিচার্স ক্লাবের সামনে তাদের বাইকের গতিরোধ করে পাসপোর্টের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করে। ব্যাগ না দেয়ায় মানুষ আসতে দেখে মাসুমের পায়ে গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। এ সময় গুলিটি তার প্যান্টের পকেটে থাকা মোবাইলে লেগে পায়ে আঘাত হানে। এর আগের দিন সোমবার দুপুর প্রায় দেড়টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস পৌঁছলে অস্ত্রধারী চার যুবক বাসের গতিরোধ করে কমান্ডো স্টাইলে বাসের ভেতের ঢুকে। ওই চার যুবক অস্ত্র তাক করে সবাইকে শান্তি থাকতে বলে। এরপর দুইজন অস্ত্রধারী নির্দিষ্ট তিনজনের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। ওই তিনজনের পায়ে গুলি করে বাসের মধ্যে ফেলে দেয়। তারপর তাদের কাছে থাকা ৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চার যুবক বাস থেকে নেমে চলে যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে ফিল্মি স্টাইলের এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার সময়ে ছিনতাইকারী চক্রের গুলিতে আহত ছানোয়ার ও আবুলকে, সানোয়ার হোসেন, আবুল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
তারও আগের দিন রবিবার বেলা বারোটায় রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা একটি প্রাইভেটকার গতিরোধ করে মা-মায়েকে গুলি করে নগদ ৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। উত্তরায় ছিনতাইকারী চক্র ছিনতাই কাজে ব্যবহার করেছে একটি প্রাইভেটকার। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে জসীমউদ্দীন সড়কে যমুনা ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে শাহানা করিম (৫০) ও তার মেয়ে নাতিকা রেজওয়ানা করিমকে (২৮) গুলি করে ৫ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন। দুটি মোটর সাইকেলযোগে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এসে তাদের গাড়ির গতিরোধ করে ৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ব্যাংক থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠার পরই দুটি মোটরসাইকেল যোগে চার দুর্বৃত্ত তাদের গাড়ি গতিরোধ করে গাড়ির ভেতরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। একটি গুলি শাহানার হাতে লেগে তার মেয়ে নাতিকার উরুতে বিদ্ধ হয়। ওই সময় তারা পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা টাকা নিয়ে চলে যায়। আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অস্ত্রোপচার করা হয় বলে জানান উত্তরা পশ্চিম থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে বেশিরভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বাড়তি ঝামেলা এড়াতে থানায় মামলা বা জিডি না করে হাসপাতালে বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। এ কারণে ছিনতাইয়ের সঠিক পরিসংখ্যান থাকে না থানাগুলোতে। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে গড়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে ২৩টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। গত বছর জানুয়ারি থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিনতাইয়ের শিকার ২৬২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। রাজধানীর ৪৯টি থানায় যেসব জিডি করা হয় তার বেশিরভাগই থানার আশপাশের রাস্তায় মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিনতাইয়ের অভিযোগ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ছিনতাইকারীদের ধরতে পারছে না পুলিশ। থানায় অভিযোগ করেও খোয়া যাওয়া জিনিস ফেরত পাওয়া যায় না।
সর্বশেষ শুক্রবার ভোরে রাজধানীর টিকাটুলি এলাকায় চলন্ত বাসে দুই মাছ ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত ব্যবসায়ী আলম মিয়া (৫০) ও শফিকুল ইসলাম (৩০) ঢামেকে চিকিৎসাধীন। আহত শফিকুল জানান, কাপ্তান বাজারে তারা মাছের ব্যবসা করেন। শুক্রবার ভোরে তারা মাছের আড়তে যাওয়ার জন্য বঙ্গভবনের পাশের রাস্তা থেকে একটি বাসে ওঠেন। বাসটি টিকাটুলি যাওয়ার পরপরই বাসের ভেতরে থাকা ৪/৫ জন তাদের ছুরিকাঘাত করে টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি, মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, গুলি করে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর পুলিশ তাদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নামে। এ অভিযানে মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকা থেকে চারজনকে আটক করা হয়। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতার কারণেই বাড়ছে ছিনতাই। ডিএমপি’র আটটি ক্রাইম জোনে শতাধিক ছিনতাইয়ের স্পট আর এসব জায়গায় সক্রিয় রয়েছে কয়েক ডজন ছিনতাইকারী চক্র। এদের মধ্যে মিরপুর ১ নম্বর গোলচত্বর থেকে টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করছে ছিনতাইকারী চক্রের একটি গ্রুপ। মেরুল বাড্ডা, রামপুরা মহাখালী, গুলশান, পান্থপথ, ফার্মগেট, মতিঝিল, ওয়ারী মৌচাক, হাতিরঝিল, শান্তিনগর, কাকরাইল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া, বাবুবাজার, রাজারবাগ, কমলাপুর, ধানমন্ডি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গড়ে উঠেছে এলাকাভিত্তিক ছিনতাইকারী চক্রের গ্রুপ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ছিনতাই প্রতিরোধে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ ৮-১০টি চিহ্নিত ছিনতাই চক্রের ৩৫ থেকে ৪০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে গত দুই মাসে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন থানা পুলিশও বেশ কিছু ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ কারণে গত ২ মাস ধরে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেকাংশে কমে যায়। জানুয়ারিতে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে ১৯টি। অন্যান্য সময় এই সংখ্যা আরো বেশি ছিল বলে পুলিশ দাবী করছে। তবে চলতি মাসে শুরুতেই গত ১১ দিনে ৯ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা স্বীকার করে বলেন, এই দুই মাসে অনেক ছিনতাইকারী জামিনে ছাড়া পেয়েছে বলে জানা গেছে। এখন তাদের ধরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছিনতাইকারী চক্র ছিনতাই কাজে ব্যবহার করছে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল। ছিনতাইকারী চক্রের টার্গেট মহিলাদের ভ্যানেটিব্যাগ, ব্যাগভর্তি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসেট। রাজধানীর ৪৯টি থানার ৮টি ডিভিশনাল জোনে চিহ্নিত ১৩৫টি ছিনতাই স্পট। রাজধানীতে গড়ে প্রতি মাসে ২৩টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে। গত তিনদিনে রাজধানীতে দিনদুপুরে গুলি করে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাইয়ের তিনটি ঘটনা ঘটেছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম, উত্তরা পূর্ব থানা এলাকা, বাড্ডা, বনানী, খিলক্ষেত, ভাষানটেক, মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, দারুস সালাম, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, গুলিস্তান, রামপুরা, হাজারিবাগসহ মহানগরীর থানা এলাকায় অন্তত প্রায় একশ’ ছিনতাইয়ের স্পট রয়েছে। ওই স্পটগুলোতে মোটরসাইকেলে, মাইক্রোবাসে ও অতর্কিত হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ছিনতাই হচ্ছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ