Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসি সদস্যদের বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে -সুজন সম্পাদক

| প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সার্চ কমিটি যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্যদের বাছাই করেছে তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। সার্চ কমিটির সাথে সংলাপের জন্য ডাকা বিশিষ্ট নাগরিকদের পরামর্শও আমলে নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গতকাল (শুক্রবার) নগরীর জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের মিলনায়তনে সুজন আয়োজিত আঞ্চলিক পরিকল্পনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। নতুন নির্বাচন কমিশন ‘গঠন প্রক্রিয়া’ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও নবগঠিত কমিশনকে স্বাগত জানিয়ে তারা সফল হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন সুজন সম্পাদক।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রেসিডেন্ট ৩১টি দলের সাথে সংলাপ করলেন, তারা এ ধরনের অনুসন্ধান কমিটির কথা দাবি করেছিল কী না; আমি তো এটা শুনি নাই। বরং রাজনৈতিক দলগুলো দাবি করেছিলো একটা আইন করার জন্য। কিন্তু তা করা হলো না। অনুসন্ধান কমিটির কারো কারো বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। অমি নিশ্চিত করে বলতে পারব না এ অভিযোগুলো কতটা সত্য।
তিনি বলেন, অনুসন্ধান কমিটি যে করতে হয়েছে আমরা খুব আশাবাদী ছিলাম। কমিটির কিছু সদস্য হতাশা ব্যক্ত করেছেন। আমাদেরও অনেক প্রশ্ন আছে। কি হল, কিভাবে হল বোধগম্য নয়, সুস্পষ্ট নয়। সার্চ কমিটির সাথে সংলাপের জন্য ডাকা বিশিষ্ট নাগরিকদের পরামর্শও আমলে নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অনুসন্ধান কমিটি আমাদের ১৬ জনকে ডেকেছিল, আমারও সেখানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমি বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। সুস্পষ্টভাবে কতগুলো দাবি দিয়েছি সেখানে। বিশিষ্টজনদের মধ্যে অত্যন্ত সিনিয়র একজন সুস্পষ্টভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন- আমাদের যাদেরকে ডাকা হয়েছিল তাদের মধ্য থেকে একজনকে ‘আস্থায়’ নেয়ার জন্য। কিন্তু তাও করা হয়নি।
সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের নাম দিয়েছে তাদের নামও তড়িঘড়ি করে প্রকাশ করায় অনেকগুলো প্রশ্ন তৈরী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। দেশের মানুষের কাছে অনেক প্রশ্ন। আমাদেরও অনেক প্রশ্ন। যেমনিভাবে অনুসন্ধান কমিটির কারো কারো মনে প্রশ্ন আছে, তেমনিভাবে অনেক নাগরিকের মনেও প্রশ্ন।
সার্চ কমিটি সুপারিশকৃত দশজনকে কি যোগ্যতায়, কিসের মানদ-ে বাছাই করা হয়েছে সেটা ‘অস্পষ্ট’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছিলাম যোগ্যতা ও অযোগ্যতার সুস্পষ্ট মানদ-ে- যাতে নির্বাচন কমিশন সদস্যদের বাছাই করা হয়। এটা করা হলে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিরা সুপারিশে আসত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি না তারা যে দশজনের নাম সুপারিশ করেছে সেটা কোন যুক্তিতে, কি ধরনের মানদ- ব্যবহার করেছেন, সেটা কতটা বস্তুনিষ্ট ছিল আমরা সেটা নিশ্চিত নই।
আমরা আশা করেছিলাম তারা যে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে কতগুলো সুনির্দিষ্ট মানদ-ের আলোকে যেন একটি গণশুনানি করা হয়। যেমন দশটা নাম সুপারিশ করবেÑ প্রেসিডেন্টের কাছে দিবে, সাথে প্রতিবেদন দিবে যে, কি কারণে তারা এ দশজনকে সুপারিশ করল।
প্রতিবেদনে নাগরিক সমাজের পরামর্শ কতটা গ্রহণ করা হল সেটা উল্লেখ থাকলে আজকে এত প্রশ্ন উঠত না বলেও দাবি সুজন সম্পাদকের। শুধু তাই নয়, আমরা বলেছিলাম গোপনীয়তার সংস্কৃতির পরিবর্তে স্বচ্ছতার যেন চর্চা করা হয়। অর্থাৎ তারা সুনির্দিষ্ট মানদ-ের আলোকে যে সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরী করবে সেটা যেন প্রকাশ করা হয়।
গণশুনানি হলে জনগণকে ‘আস্থায়’ নেয়া হত বলে দাবি করে তিনি বলেন, গণশুনানি হলে জনগণ তাদের মত দিতে পারত। এভাবে জনগণকে আস্থায় নিলে আস্থার সংকটটা কেটে যেত। পুরো বিষয়টি কিভাবে হল আমার মনে অনেক মনে প্রশ্ন আছে। আমি নিশ্চিত নই এটা কিভাবে হল। এখন একটা নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি তারা সফল হবে।
জনগণের আস্থার আলোকে নির্বাচন কমিশনকে সফল হতে হলে সর্বোচ্চ সাহসিকতা, সতর্কতা, সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতা দেখাতে হবে বলে জানান তিনি। এ কাজে বর্তমান কমিশন সফল হবে বলেও আশাবাদ তার।  
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পূর্ববর্তী কমিশন যে অনাস্থা তৈরী করেছে আশাকরি সেটা থেকে বর্তমান কমিশন বের হয়ে আসবে। তাদের কাজের মধ্য দিয়ে বুঝা যাবে তারা কতটা নিরপেক্ষ। একটা কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়ে আগাতে হবে। তাদের কথার সাথে কাজের মিল থাকতে হবে। বৃক্ষ তার ফলে পরিচয়। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত কিন্তু যথেষ্ট নয়। অর্থাৎ এটা নেসেসারি কন্ডিশন, সাফিশিয়েন্ট কন্ডিশন না।
এর জন্য নির্বাচনকালীন সরকার, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ আচরণ করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে মত তার। বিএনপিনির্বাচন কমিশন নিয়ে যে অভিযোগ সেটার ‘সারবত্তা’ জনগণ বিচার করবে বলে জানান তিনি।
ছোট দলের প্রস্তাবিত নামগুলোই সার্চ কমিটিতে আসার বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেটা আমারও প্রশ্ন। এটা কি কাকতালৗয় নাকি কারসাজি? ভবিষ্যতে একটা আইন করে সার্চ কমিটির বিষয়টা একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্যও সুপারিশ করেন তিনি। আইনের মাধ্যমে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হবে। কি ধরনের সার্চ কমিটি গঠন করা যাবে সেটাও উল্লেখ থাকবে। আইন থাকলে প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছ থাকবে।
আঞ্চলিক পরিকল্পনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইস্টডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. মু. সিকান্দার খান, সুজন চট্টগ্রাম জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবীর চৌধুরী ও সমন্বয়কারী সাখাওয়াত হোসেন।



 

Show all comments
  • md jahangir alam ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৭:১০ পিএম says : 0
    গনতন্ত এখন কবরে আমরা এটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ