পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ থেকে ক্রমান্বয়ে মুসলিম পরিচিতি মুছে ও মুসলমানদেরকে ঈমানহারা করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবির মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা অপসারণের দাবী জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী।
গতকাল (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিশে^র কোন দেশের সরকার নিজ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় বিশ^াস ও চেতনাবোধের বিরুদ্ধে এমন আগ্রাসী ভূমিকা নেয়ার নজির নেই, যেটা বাংলাদেশে হচ্ছে। তিনি বলেন, কোন মুসলমানের পক্ষে মূর্তিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক বা এমন ভাবনা অন্তরে পোষণ করার সুযোগ নেই। কেউ এমনটা বিশ^াস করলে তার ঈমান থাকবে না। অবিলম্বে এই মূর্তি অপসারণের দাবী জানিয়ে হেফাজত মহাসচিব বলেন, অন্যথায় ঈমান, আক্বীদা ও ঐতিহ্য বিরোধী এই মূর্তি অপসারণের দাবীতে উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামবে।
হেফাজত মহাসচিব বিবৃতিতে আরো বলেন, সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশ শাসন এবং জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত করার স্বার্থেই কাজ করছে বলে দাবী করে থাকে। কিন্তু জনগণের ধর্মীয় বিশ^াসের উপর একের পর আঘাত হেনে দেশে যে অস্থিরতা ও গণঅসন্তোষ তৈরি করা হচ্ছে, এটা তো ফ্যাসিস্ট আচরণ ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, সরকারের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া ইসলাম বিদ্বেষী কিছু কুচক্রী ও বিদেশী তল্পিবাহক জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিদেশী প্রভুদেরকে খুশী করতে ভুল পরামর্শ দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করছে বলে প্রতীয়মান। গ্রিক দেবিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক ভাবার সুযোগ যে কোন একজন সাধারণ মুসলমানেরও নেই, এটা তো কারো অজানা থাকবার কথা নয়।
হেফাজত মহাসচিব সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী অপসারণের দাবীতে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটা মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা ও জাতীয় ঐতিহ্য রক্ষার প্রশ্ন। এই বিষয়ে আপোষরফার কোনই সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ইসলামে তো ঈমানের পর পরই ইনসাফ ও ন্যায়-নীতির কথা বলা হয়েছে। তাহলে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ধর্মীয় ও আদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন ভাস্কর্য স্থাপন করতে হলে, সেটা তো পবিত্র কুরআন বা ইসলামের নিদর্শন বুঝায় এমন কোন ভাস্কর্যই স্থাপন করা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু ন্যায়-নীতি ও আদর্শ বিচার ব্যবস্থায় মুসলমানদের এমন গৌরবময় ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে গ্রিক দেবি থেমিসকে এনে শাড়ি পরাতে হবে কেন? কেন মুসলমানদেরকে ঈমানহারা করার এই আয়োজন?
বিবৃতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী থেমিসকে অপসারণের জন্য বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম যে কারণে দাবী জানাচ্ছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গত সোমবার বিবিসিকে ‘যে ভাস্কর্যকে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, সেটাই এখানে নির্মাণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ’ বলে স্বীকারোক্তি দিয়ে কার্যতঃ ওলামায়ে কেরামের দাবীর যৌক্তিকতাকেই প্রমাণ করেছেন। বিবিসিকে দেওয়া অ্যাটর্নি জেনারেলের স্বীকারোক্তি থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বাংলাদেশ থেকে মুসলিম ঐতিহ্য মুছে ফেলে মানুষকে ঈমানহারা করে নাস্তিক্যবাদি ধ্যানধারণা প্রতিষ্ঠার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই গ্রিক মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, বিবিসির একই প্রতিবেদনে অ্যাটর্নি জেনারেল ‘রোমান আইন থেকেই আমাদের বিচারের বিষয়ের উৎপত্তি। সেজন্যই অন্যান্য দেশের মতো এই ভাস্কর্য করা হয়েছে’ বলে যে উক্তি করেছেন, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।