পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৫ ভরি স্বর্ণ ও টাকা আত্মসাৎ : গ্রেফতার ২
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড থেকে : সীতাকু-ের বড়দারোগারহাটে এক যুবতীর অশ্লীল ছবি তৈরী করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে প্রায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ ৭ লাখ টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করেছে এক প্রতারক যুবক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি যুবতীর মা বাদী হয়ে সীতাকু- থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত যুবক ও তার ভাইকে গ্রেফতার করে কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে।
জানা যায়, সীতাকু-ের টেরিয়াইল এলাকার এক প্রবাসীর বাড়ির কেয়ারটেকারের আত্মীয় পরিচয়ে রংপুরের পীরগাছা থানার শালমারা গ্রামের মোঃ আবু সালেকের পুত্র মোঃ শামীম প্রকাশ রানা (২৩) গত ৫/৬ মাস আগে ঐ বাড়িতে বেড়াতে আসে। সেখানে সে কিছুদিন অবস্থান করার সুযোগে গৃহকর্তার যুবতী মেয়ে কলেজ ছাত্রী নওরিনের (ছদ্মনাম) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মোবাইলে কথাবার্তা ও নানান ছবি আদান প্রদান হতে থাকে। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার পর নওরিনকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বেশ কিছু ছবি সংগ্রহের পর বখাটে লম্পট যুবক শামীম ঐ ছবি দিয়ে অশ্লীল বেশ কিছু ছবি তৈরী করে। পরে একটি ফেইসবুক আইডিতে নওরিনের কয়েকটি অশ্লীল ছবি প্রকাশ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। নওরিন তাকে এসব ছবি প্রচার বন্ধ করতে অনুরোধ করলে সে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। সেই সাথে টাকা আনতে পারলে তাকে বিয়ে করারও আশ্বাস দেয়। এক পর্যায়ে মান-সম্মানের ভয়ে নওরিন পাগলের মত হয়ে উঠে। সে নিজের ঘরে থাকা মায়ের ১৫ ভরি স্বর্ণ ও নগদ আরো ১৫ হাজার টাকাসহ প্রায় ৭ লাখ টাকার সম্পদ প্রতারক প্রেমিকের হাতে তুলে দেয়। এরপর প্রতারক শামীম টাকা ও গয়না নিয়ে তাকে সীতাকু- বাজারে বসিয়ে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। নওরিন ভেবেছিলো বিয়ে না করলেও টাকা পেয়ে সে অশ্লীল ছবি প্রচার থেকে বিরত হবে। কার্যত হয়েছে উল্টোটা। নওরিনের কাছ থেকে এক সাথে এত গয়না ও টাকা পেয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং বারবার তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করতে থাকে। এতে দারুণ ভেঙে পড়ে নওরিন। বাধ্য হয়ে সে তার মায়ের কাছে সব কথা স্বীকার করে। তার মা বিষয়টি প্রবাসী পিতা ও কয়েকজন আপনজনের সাথে আলাপ করে সীতাকু- থানায় জানালে পুলিশ নওরিনকে উক্ত প্রতারকের সাথে আলাপ চালিয়ে যেতে পরামর্শ দেয়। পুলিশের পরামর্শ মত নওরিন প্রতারক প্রেমিককে জানায়, তার টাকা ও স্বর্ণালংকার দেবার কথা বাড়ির সবাই জেনে গেছে। এখন আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এসময় শামীম তাকে পরামর্শ দিয়ে বলে আত্মহত্যার কোন প্রয়োজন নেই, আরো কিছু টাকা নিয়ে আসতে পারলে সে তাকে বিয়ে করবে। এ পর্যায়ে পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী নওরিন ৬৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে শামীমের সাথে দেখা করতে চাইলে শামীম ফেনীতে তার সাথে দেখা করতে রাজি হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বুধবার নওরিনকে নিয়ে ফেনীতে ফাঁদ পাতেন সীতাকু- থানার এস.আই মোঃ আশরাফুল। সেই ফাঁদে পা দিয়ে অতিলোভী লম্পট কথিত প্রেমিক শামীম নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হলে এস.আই আশরাফ তাকে গ্রেফতার করে। থানায় আনার পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সব কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয় শামীম। পরে শামীমকে দিয়ে তার বাড়িতে ফোনে কথা বলিয়ে পেঁপে গাছের নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় সাড়ে ৫ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করে তার ভাই মোঃ রাসেল (২০) দিয়ে সীতাকু- থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি ছাত্রী নওরিনের মা বাদী হয়ে সীতাকু- থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রতারক প্রেমিক শামীম প্রকাশ রানা (২৩), তার ভাই মোঃ রাসেল (২০), বাবা মোঃ আবু ছালেক (৫০) ও মা শাহিদা বেগমকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ঐ মামলায় প্রতারক শামীম ও তার ভাই রাসেলকে গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল আদালতে প্রেরণ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।