পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজার অফিস : বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের আইন-শৃংখলা বাহিনী ও মগদস্যুদের হাতে নির্মমভাবে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে নিযুক্ত তিনটি দেশের হাইকমিশনার গতকাল কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। তারা সেখানে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের সাথে কথা বলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নির্যাতন ও গণহত্যার ব্যাপারে অবগত হন। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছান তারা। জানাগেছে, তাদের সাথে আলাপকালে রোহিঙ্গারা তাদের উপর নির্যাতনের প্রতিকার চান তারা। এর সাথে নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব পেলে নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফিরতে চান বলেও তারা রাষ্ট্রদূতদের জানান। এসময় রাষ্ট্রদূতরা আরাকানে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেন।
অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত মিজ জুলিয়া নিব্লেট, ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালিসন ব্লেক ও কানাডার রাষ্ট্রদূত বিনো পিয়েরে লারামি এর আগে গত বুধবার দুপুরে কক্সবাজারে এসে পৌঁছান। বুধবার সন্ধ্যায় তারা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আবদুর রহমান এ তিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেন।
এছাড়াও গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন কফি আনান কমিশনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ৩১ জানুয়ারি মার্কিন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটসহ ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এতে করে রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক বিশে^র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) কান্ট্রি ডাইরেক্টর জানান, গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে কফি আনান কমিশনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। এছাড়াও ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও গণহত্যার ব্যাপারে অবগত হন।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানের কোন পথ নেই। রোহিঙ্গা ইস্যুটি সম্পূর্ণ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রোহিঙ্গারা শত শত বছর ধরেই মিয়ানমারের নাগরিক। তাদেরকে সেদেশে নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে পুনর্বাসন করাই এর একমাত্র সমাধান বলেই তারা মনে করেন।
হাজারের
বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা
সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার অভিযান চালিয়ে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করেছে। জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের আলাদা দুটি সংস্থার ওই দুই সিনিয়র সদস্য মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রয়টার্সকে তারা বলেছেন, এ পর্যন্ত শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন বলেছেন, এটি সম্ভবত কমই বলা হচ্ছে। আমরা হাজার হাজার খুঁজে পেতে পারি।
কিন্তু রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও শিশুদের হত্যাসহ বেসামরিক নাগরিকের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার সরকার। তবে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জ তাই দাবি করেছেন, বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযানে ১০০-এর কম রোহিঙ্গা জঙ্গি নিহত হয়েছে।
অভিযানকালে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে, জাতিসংঘের ওই দুই কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের বিষয়ে জ তাই বলেন, আমাদের পরিসংখ্যানের চেয়ে এ সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের ঘটনার মূলে গিয়ে তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে উত্তর রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে জাতিগতভাবে নির্মূল করতে দেশটির সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানকালে সেনবাহিনী ও পুলিশ রোহিঙ্গাদের কয়েকটি গ্রামে আগুন দিয়ে বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়। এ সময় রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের ধর্ষণসহ শিশু হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের আরাকান (উত্তর রাখাইন) রাজ্য থেকে প্রায় ৬৬ হাজার মুসলিম রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বর্তমানে সেই সংখ্যা ৬৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে।
এর আগে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল এবং ২০১৩ সালে দুই সন্তান নীতির দ্বারা রোহিঙ্গাদের আঘাত করা হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।