Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শিশু পাচারকারী চক্রের ৬ এবং প্রতারক চক্রের ৬১ জন গ্রেফতার

র‌্যাবের অভিযান

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২ নারীসহ শিশু পাচারকারি চক্রের ৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য। অপহরণের শিকার একটি শিশুও উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের অপর একটি টিম মিরপুর ও পল্লবী এলাকা থেকে মোবাইল সিম ও জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৬১ জনকে গ্রেফতার করেছে।
র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে দু’জন নারী সদস্যও রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ শিশু অপহরণ চক্রের মূল হোতা জাকির হোসেন (৫৫),  মর্জিনা বেগম (৪০), জেসমিন বেগম (৩৭),  টিটু (২৯), হোসেন সাগর (২২), এবং মো. আসলাম (২৮)। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, ১০২০ পিস ইয়াবা, অজ্ঞান করার জন্য ব্যবহৃত ২৩টি চেতনানাশক ইনজেকশন, সিরিঞ্জ ও ১৭টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। এদের সবার বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, শিশু অপহরণকারীরা কমলাপুর রেল স্টেশন, সদরঘাট এবং ঢাকা ও আশপাশের এলাকার তুলনামূলক গরিব পরিবারকে টার্গেট করে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বায়েজিদ (৯) নামে এক শিশু ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়। অপহৃত বায়েজিদকে ১৮ জানুয়ারি উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারি চক্রটি যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, নারায়ণগঞ্জ এবং চিটাগাং রোড এলাকার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, কমলাপুর রেলস্টেশন এবং সদরঘাট এলাকায় ছদ্মবেশে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। তারা মূলত বাড়ি থেকে রাগ করে বের হয়ে আসা বা কোনোভাবে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বাচ্চাদেরকে মাইক্রোবাসে করে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় তাদের নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতো। এরপরে মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে আবার তাদেরকে ছেড়ে দিতো। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করেছে, অতিরিক্ত চেতনানাশক প্রয়োগের কারণে আকাশ (১০) ও নাজমুল (৯) নামে দুটি শিশু মারা যায়। তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে বস্তায় ভরে ফেলে দেয়া হয়। চক্রটি এ পর্যন্ত ১৭টি শিশু অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। এর মধ্যে মুক্তিপণের বিনিময়ে ৮ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ৬ জনকে বিদেশে পাচারও করেছে তারা। এ চক্রের সদস্যরা চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে শিশু অপহরণ, বিদেশে পাচার এবং হত্যা ও লাশ গুমের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর মিরপুর পল্লবী এলাকা থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচপত্র তৈরি করে সিম বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬১ জনকে আটক করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার র‌্যাব-৪ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান জানান, এ চক্রটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করতো। পরে সীম রেজিস্ট্রেশনের জন্য এ সব জাতীয় পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ লোকজনের সাথে প্রতারণা করতো। চক্রটি এসব করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ