Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেয়ার পরামর্শ

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বিএনপি’র প্রতি নাসিম

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম নির্দলীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য বিএনপির নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, দেশের নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে স্বচ্ছ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। কমিশনের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের নন। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আর কাজ শুরু করার আগেই কমিশনের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে বিএনপি। এটি তাদের রাজনৈতিক কৌশল ও অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। গত ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারা শুরুতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিএসসি) সমালোচনা করতে থাকেন। পরবর্তীতে ওই সিএসসি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে তাদেরকে (বিএনপি) ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে।
গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতি আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিএমএ সভাপতি প্রফেসর ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব প্রফেসর এহতেশামুল হক, প্রফেসর ডা. এনায়েত হোসেন, প্রফেসর ডা. আভা হোসেন প্রমুখ।
বিএনপিকে সাহস নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঘরে বসে অপপ্রচার না চালিয়ে সাহস থাকলে মাঠে আসেন। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক রণাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়ার দল নয়। নির্বাচন নিয়ে ভয় পায় না, নির্বাচন থেকে কখনো সরে দাঁড়ায় না। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। জনগণের রায় মেনে নেবে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের আমলের উন্নয়নের চিত্র দেখেন না বলে অভিযোগ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি একজন অন্ধ নেত্রী। দেখেও না দেখার ভান করেন তিনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের চিত্র উদাহরণ হিসেবে স্থান পাচ্ছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে  দেশটি বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বলেও গবেষণা প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে। দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে। দেশের এক প্রান্তের মানুষকে অন্য প্রান্তের মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে সহায়তা করছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিজেদের অর্থ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। গ্রামে গ্রামে জ্বলছে বিদ্যুতের আলো। শহরের অনেক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে গেছে গ্রামাঞ্চলে।  ঘরের কাছেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। উন্নয়নের  যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে একের পর এক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনেও দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকেই বেছে নিবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কথায় কথায় চিকিৎসকদের ওপর  আক্রমণ না করার জন্য রোগীর স্বজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, একজন প্রকৃত চিকিৎসক কখনো ইচ্ছে করে ভুল চিকিৎসা প্রদান করেন না। রোগীকে সঠিক সেবা ও চিকিৎসা প্রদান করতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তাই আবেগতাড়িত হয়ে কোনো চিকিৎসকের ওপর হাত তোলা ঠিক নয়। কোনো চিকিৎসকের  চিকিৎসার ওপর সন্দেহ থাকলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ করতে পারেন। অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিএমডিসি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
শর্ত পূরণ না হলে  মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করা হবে
মেডিক্যাল কলেজগুলোতে বিদেশি কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সার্ক অঞ্চলের বরাদ্দ আসনের বিপরীতে কোনো দেশের কোটা পূরণ না হলে খালি আসনগুলো অন্যান্য দেশের মধ্যে বন্টন করে দেয়া হবে। গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মেডিক্যাল কলেজে বিদেশি কোটা নীতিমালা সংক্রান্ত সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এতে সভাপতিত্ব করেন।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ নীতিমালার শর্ত পরিপূরণ করে কলেজ পরিচালনার জন্য পুনরায় আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় না কোনো কলেজ বন্ধ হোক। কিন্তু চিকিৎসা শিক্ষার মান অক্ষুণœœ রাখতে কলেজ পরিচালনায় নীতিমালা মেনে চলতে হবে। নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে না পারলে কলেজ বন্ধ করে দেয়ার মতো কঠোর অবস্থানে যেতে সরকার বাধ্য হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদসহ স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ