Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে তামাশা চলছে -ফরাসউদ্দিন

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হচ্ছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে তামাশা করা হচ্ছে। এখানে ১০০ টাকা স্থানান্তর করতে গ্রাহককে প্রায় দুই টাকা বা ১ টাকা ৮৬ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। যেখানে ব্যাংকিং সিস্টেমে খরচ হয় মাত্র ৪০ পয়সা। এ কারণেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উদ্যোগ নেয়া উচিত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এনবিআর আয়োজিত উপ-কর কমিশনার সম্মলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদেশিরা লাভবান হচ্ছেন। কিভাবে এটিকে ব্যাংকিং সিস্টেমের আওতায় আনা যায়, তা নিয়ে ভেবে দেখা জরুরি। কৃষিখাতে কর আরোপ করার সময় এসেছে উল্লেখ করে সাবেক এই গভর্নর বলেন, অনেকে কৃষিকে বাণিজ্যিক রূপ দিয়েছে। এছাড়া ভূমিকর, মিষ্টি ও ওষুধের দোকানের ব্যবসার ওপর কর আরোপের চিন্তার সময় এসেছে।
এনবিআরকে আধুনিক ও সম্পূর্ণ করবান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, এখানে কেউ ছোট-বড় নয়। যিনি কর দিচ্ছেন, তিনি দেশ গড়ার জন্য কর দিচ্ছেন। এটা বোঝাতে হবে। ব্যাংক হিসাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রয়োজন না হলে কোনও গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব এনবিআরের দেখা উচিত নয়। শুধু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেই গ্রাহকের হিসাব খতিয়ে দেখা যেতে পারে। কারণ, এটা মানুষের আমানত, তা রক্ষা করতে হবে।
এডিআরকে গতিশীল করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, মামলায় এনবিআরের প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা জড়িত রয়েছে। এডিআর গতিশীল হলে এখান থেকে অর্ধেক টাকা আদায় হবে, বাজেটের কিছু অংশ হলেও পূরণ হবে। তিনি কর্মকর্তাদের সম্মানীর ওপর কর আদায়, ব্যাংক একাউন্টধারীদের ই-টিআইএন বাধ্যতামূলক করা, মেইল অর্ডার ব্যবস্থাপনায় করারোপ, তামাকে উচ্চহারে করারোপ, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর নজরদারি, এনবিআরের অটোমেশন ব্যবস্থা জোরদার, আন্ডার ইনভয়েস ও ওভার ইনভয়েস বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, ওষুধ বিক্রিতে ভ্যাট আদায়ের আহ্বান জানান।
সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, অনাদায়ী রাজস্ব আদায়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) মামলায় এনবিআর কর্মকর্তাদের অভয় দিতে হবে। তারা যেন মামলায় হার-জিতকে প্রাধান্য না দেয়। তিনি বলেন, মামলায় হেরে যাওয়ার ভয় এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ করে। যে কারণে এই মামলাগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকছে। তিনি ৬৪ জেলায় এর কার্যক্রম বিস্তৃতি, আইন আরো শক্তিশালী করা, প্রতিটি করদাতার জন্য আলাদা আইডি নম্বর চালু, পাঠ্যবইয়ে ট্যাক্স বিষয়ে প্রবন্ধ চালু, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো জোরালো ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান সভাপতির বক্তব্যে ‘মার্চ মাসকে এডিআর শক্তিশালী’ করার মাস ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, এডিআরকে শক্তিশালী করা একটি চ্যালেঞ্জ। মার্চ মাসে এডিআর শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি কাজ করবে এনবিআর। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকার কর কমিশনার মো. আলমগীর হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ