পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোটর্িার : দায়িত্ব পালনে কোনো ব্যক্তি, দল বা প্রভাবের কাছে মাথা নত করবেন না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, তাঁর কাছে কোনো বিশেষ দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর গুরুত্ব নেই। তিনি বলে, আমার বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার। নিরপেক্ষতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সংবিধানের ধারাকে সমুন্নত রাখব। এর বাইরে আর কিছু নেই। আসছে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করাই নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ও লক্ষ্য। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান সিইসি। আর রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন করেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নতুন নির্বাচন কমিশনাররা।
নিজ বাসভবনে দেয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজানোর নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন গণমাধ্যমের কাছে। এ সময় তিনি বলেন, বিগত দিনের সমালোচনা, তর্ক-বির্তকের উর্ধ্বে থেকে কাজ করবে তার নেতৃত্বে কমিশন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে আমাদের বহুদিনের বিচরণ— এটি একটি অভিজ্ঞতা। পূর্বসরিদের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং যে সমস্ত দিক-নির্দেশনা তারা রেখে গেছেন সেগুলোর আলোকেই কাজ করে যাবো।
বিগত দিনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে আস্থার সংকট বিভিন্ন সময়ে তৈরি হয়েছে, তা দূর করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কথাও বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা ছাড়া এতো বড় দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়— আমি আশা করি সকলের সহযোগিতা পাবো।নিরপেক্ষভাবে আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করাই প্রধান উদ্দেশ্য এ কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের নতুন সিইসি বলেন, আমার উদ্দেশ্য হলো যে, নিরপেক্ষভাবে ও সাংবিধানিক পদ্ধতিতে আইন মোতাবেক নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করা।
একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আইন তৈরির যে দাবি বিভিন্ন মহল থেকে দীর্ঘদিন ধরে উঠেছে, সেবিষয়টি সরকারের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি। আর নির্বাচন কমিশনে সচিব হিসেবে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কথা বলেন নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। নতুন কমিশনে একমাত্র নারী কবিতা খানম। বিশ্বের বড় বড় গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নির্বাচনের উদাহরন টেনে তিন জনই বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ দিন যে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতো সে প্রথা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বের করে আনার চেষ্টা করবে এই নতুন নির্বাচন কমিশন।
কে এই নুরুল হুদা ঃ নতুন সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সচিক কে এম নুরুল হুদা। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী। সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে নিয়েই আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। তাকে জনতার মঞ্চের ব্যাক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশের মিডিয়াগুলো। বিএনপিও তার নিয়োগে আশাহত। প্রশ্ন হচ্ছে কে এই নূরুল হুদা?
মূলত সাবেক এই আমলা ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। একজন প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতার নামে ’৭৩ ব্যাচ’ হিসেবে পরিচিত নুরুল হুদা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও পদে ভূমিকা পালনের পর তিনি বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদমর্যাদা লাভ করেন। আর ২০০৬ সালে সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে যান। কে এম নুরুল হুদা কুমিল্লা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয় যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের পদে ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর ২০১০ সালে তাকে বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বসানো হয়। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন ৫ বছর। তবে তারও আগে জেমকন গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ), নর্থ ওয়েস্ট জোন কোম্পানির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। নুরুল হুদার জন্ম ১৯৪৮ সালে পটুয়াখালীর বাউফলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আর যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টার ইউনিভর্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি নেন। ১৯৭২-৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতির সম্পাদক ছিলেন। লেখাপড়া শেষ করে আদমজী জুট মিলে কিছুদিন চাকরি করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুল হুদা পটুয়াখালীতে জেড র্ফোসের অধিনায়ক মেজর জলিলের নেতৃত্বে ৯ নম্বর সেক্টরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ব্যক্তিগত জীবনে ৩ ছেলেমেয়ের জনক। তার স্ত্রী হুসনে আরা। ছেলে কামরুল হুদা খঅন কানাডা প্রবাসী প্রকৌশলী, বড় মেয়ে সাইদা পারভীন লুনা পেশায় প্রকৌশলী থাকে যুক্তরাষ্ট্রে। ছোট মেয়ে সাজিয়া পারভীন বর্তমানে কানাডায় উচ্চতর ডিগ্রি নিচ্ছেন। তার নকে ভাই আবু তাহের খান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাকরি করতেন অন্য ভাই কে এম নাসির উদ্দিন বাউফলের নওমালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। সরকারি চাকরিবিধি লংঘনর করে জনতার মঞ্চে নের্তৃত্ব দেয়ায় ২০০১ সালে বিএনপি জোট সরকার কে এম নুরুল হুদাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। অতপর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি সর্বোচ্চ আদালতে লড়ে তিনি চাকরি বজায় রাখেন। তবে চাকরি ফিরে পেলেও ২০০৬ সালে তাকে ফের ওএসডি করা হয়। পরে আক্ষেপ নিয়েই অবসরে যেতে হয় সাবেক এই সচিবকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।