পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুই হাজার ৭১ কোটি টাকার ৮ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি অর্থবছরে সাত মাসে রেকর্ড পরিমাণ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো মোট উন্নয়ন ব্যয় করেছে ৩৯ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছিল ২৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এই হিসাবে এ বছর দেশের উন্নয়ন ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। মূলত বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ায় উন্নয়ন ব্যয়ে এই রেকর্ডÑ জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ২৮ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের হিসাবে এবার উন্নয়ন ব্যয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, টাকার অঙ্কে এ বছর এখন পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন সর্ববৃহৎ।
এদিকে একনেক বৈঠকে দুই হাজার ৭১ কোটি ৮০ লাখ টাকার আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- খুলনা শহর যেহেতু দিন দিন বড় হচ্ছে, সেজন্য পুরো শহরকে সংযোগ সড়ক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও টেক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এর মাধ্যমে বড় উড়োজাহাজ উঠানামা করতে পারবে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে শেখ কামাল সেতু, শেখ জামাল সেতু ও শেখ রাসেল সেতু নির্মাণ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। দু’টি সংযোগ সড়ক (নিরালা অ্যাভিনিউ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাভিনিউ) নির্মাণ প্রকল্প, ১২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি টাকা।
যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙন থেকে গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলা এবং গণকবরসহ ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীর অনুন্নত এলাকা উন্নয়ন এবং উন্নত এলাকার অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্র্নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি ২০ লাখ টাকা। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড এনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
জানুয়ারিতে জীবনযাত্রা ব্যয় সামান্য বেড়েছে
বছরের শুরুতেই দ্রব্যমূল্য কিছুটা বেড়েছে। ফলে সামান্য চাপ বেড়েছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১৫ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। তবে এই হার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার অনেকটা নীচেই রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ৫ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি বেঁধে রাখা।
খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১০ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতে মোটা চালের দাম বৃদ্ধি এবং বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তির সময় হওয়ায় এ ব্যয় বেড়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়েছে। সাধারণত জানুয়ারি ও জুনে দেশে মুল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। তবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫২ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।