পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আনোয়ারুল হক আনোয়ার : বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি বিরাট অংশকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গারচরে পুনর্বাসনের নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে ২০ কিলোমিটার নদীপথ পেরিয়ে ঠেঙ্গারচরের অবস্থান। আয়তন প্রায় ৮০ বর্গকিলোমিটার। স্থানীয় জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, ১০৯০ সালের দিকে এখানে ডুবোচর দেখা যায় এবং ১৯৯৫ সালের দিকে মেঘনার বুক চিড়ে বিশাল ভূমি জেগে ওঠে। পরবর্তীতে চরটির আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং একই সময় ঠেঙ্গার চরের দক্ষিণে আরো একটি চর জেগে ওঠে। স্থানীয় জেলেদের কাছে এটি গাঙ্গুরিয়ার চর নামে পরিচিত। ঠেঙ্গার চরের তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অর্থাৎ হাতিয়া মূল ভূখন্ডের পূর্ব দিকে ইসলাম চর নামক আরো একটি চর রয়েছে। চল্লিশ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ইসলাম চরটি বিলীন হয়ে এখন পনের বর্গকিলোমিটারে এসেছে। ঠেঙ্গার চরের পূর্বদিকে সন্দ্বীপ উপজেলা এবং উত্তরে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্বর্ণদ্বীপ। ঠেঙ্গার চরের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর দিকে প্রচুর ভূমি জাগছে। বিশাল চরটিতে মহিষের কয়েকটি বাথান রয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শিকারীরা মাঝে মধ্যে এখানে সাময়িক বিশ্রাম গ্রহণ করে। হাতিয়ার মূল ভূখ- থেকে ট্রলারযোগে ঠেঙ্গারচর যেতে সোয়া ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়। কয়েক বছর পূর্বে স্থানীয় বন বিভাগ এখানে বনায়ন শুরু করে। ফলে ঠেঙ্গার চরের বিভিন্ন অংশে গাছ-গাছালি দেখা যায়। একসময় ঠেঙ্গারচরসহ সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চল নৌদস্যু ও বনদস্যু অধ্যুষিত থাকলেও এখন পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টেছে। বিশেষ করে হাতিয়ার জাহাইজ্যার চর বর্তমান স্বর্ণদ্বীপে সেনাবাহিনীর বিশাল প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপনের পর দস্যুদের দৌরাত্ম্য হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া নিঝুমদ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে দমার চরে নৌবাহিনী একটি ক্যাম্প স্থাপনের চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানা গেছে। এতে সমগ্র উপকূলীয় ও চরাঞ্চল নৌদস্যুমুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মেঘনাবেষ্টিত হাতিয়া উপজেলা চর্তুদিকে ছোটবড় মিলিয়ে ১৪টি চর রয়েছে। আগামী এক দশকে আরো ৬টি বিশাল চর জেগে ওঠার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এমনিতেই হাতিয়া উপজেলার বর্তমান আয়তন একটি বৃহৎ জেলার আয়তনের সমান। নতুন চর জেগে ওঠার সুবাদে হাজার হাজার গৃহহীন পরিবার তাদের নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। ভোলা, লক্ষীপুর ও বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার গৃহহীনরা এখানে বসতি গড়ে তুলছে। ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন পেশাজীবীর সাথে আলাপকালে তারা ইনকিলাবকে জানায়, মানবিক দিক বিবেচনা করে পুনর্বাসন করা যায়, তবে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়টিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনে ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। হাতিয়া আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরেদৌস ইনকিলাবকে জানান, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এবং এদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুকে সম্পূর্ণ মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে সরকার হাতিয়ার ঠেঙ্গারচরে পুনর্বাসনের যে মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। তিনি আরো বলেন, হাতিয়ার মূল ভূখন্ডের ২০ কিলোমিটার পূর্বে স্বর্ণদ্বীপে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠেছে। এছাড়া অবহেলিত হাতিয়ার সার্বিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত যে কোন উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।