পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : ‘লিটল ম্যাগাজিন’ শব্দটি বাংলায় প্রথম ব্যবহার করেছিলেন বুদ্ধদেব বসু ১৯৫৩ সালের সাপ্তাহিক ‘দেশ’ কাগজের মে সংখ্যায় প্রকাশিত তার ‘সাহিত্যপত্র’ নামক প্রবন্ধে। উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় লিটল ম্যাগাজিনের যাত্রা শুরু। মূলত গতানুগতিক ধারা ও প্রথাবিরুদ্ধ একটি সাহিত্য আন্দোলন ছিল এই লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ। যাতে নতুন অখ্যাত লেখকরাই লিখতেন তাদের নিজেদের কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধসমূহ।
যারা দর্শন, সাহিত্য ও চিন্তাতে সমাজের বা রাষ্ট্রের প্রচলিত ধারা ও রীতিনীতির বিরোধী, তারাই এসব কাগজের প্রধান লেখক। লিটল ম্যাগাজিনের লেখকরা সমাজে অপরিচিতই থাকেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ম্যাগাজিনের সম্পাদক নিজেই প্রকাশকের ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা বা ব্যক্তি উদ্যোগে লিটল ম্যাগাজিনগুলো বাজারে আসে। অনিয়মিত এবং অবাণিজ্যিক প্রকাশনা ‘লিটল ম্যাগাজিন’-এর বিস্তার শুরু হয় ষাটের দশকে। পরবর্তীতে নবীন ও তরুণ লেখকদের সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে সমাদৃত হয়। পাশ্চাত্যের আদলে বঙ্গদেশে প্রথম লিটল ম্যাগাজিন প্রবর্তন করেন প্রমথ চৌধুরী। তার সম্পাদিত সবুজপত্র (১৯১৪)-কে আধুনিক লিটল ম্যাগাজিনের আদিরূপ বলে গণ্য করা হয়।
ষাটের দশকে লিটল ম্যাগাজিনগুলোকে কেন্দ্র করে যে সাহিত্য-আন্দোলন শুরু হয়, সেটি স্বাধীনতার পর আর অব্যাহত থাকেনি। সেসময় মানুষের চেতনাজগতে স্বতন্ত্রধর্মী পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, যা সাহিত্যেও প্রভাব ফেলে। এ সময় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। এ সঙ্কটময় পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কিছুসংখ্যক লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়, যা সত্তরের দশকের সাহিত্যচর্চার ধারাকে গতিশীল করে। এসব পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গ দেখা দেয় নতুন আঙ্গিকে। মূলত নিরীক্ষাধর্মী বিভিন্ন লেখা প্রকাশের মাধ্যমে লিটল ম্যাগাজিনগুলোকে আশ্রয় করে সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের সাহিত্য।
অমর একুশে বইমেলায় এসব লিটল ম্যাগাজিনের জন্য একটি নির্দিষ্ট চত্বর রয়েছে বাংলা একাডেমির অংশে, যা লিটল ম্যাগ চত্বর নামে পরিচিত। বইমেলার এদিকটা অনেকটা আড়ালেই থেকে যায়। এ স্টলগুলো মেলার অন্যান্য স্টলের মতো বড় ও জাঁকজমক নয়। মেলায় আসা বইপ্রেমীদের কাছে লিটল ম্যাগের চাহিদা তেমন নেই। তাই মেলার এই কর্নারটিতে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়ও কম থাকে। এ জন্য লিটল ম্যাগের লেখক-প্রকাশকরা কর্নারটির অবস্থানকে দায়ী করেন। প্রচারণার অভাবে পাঠকরা লিটল ম্যাগ সম্পর্কে সেভাবে জানতে পারে না। তারা বলেন, মেলার একেবারে পেছন দিকে এই চত্বরটি থাকাতে লোকজন এদিকে তেমন একটা আসে না। ফলে আমাদের বিক্রিও কম হয়।
লিটল ম্যাগ ‘কোরাস’-এর বিক্রয়কর্মী মনজুর রনি বলেন, আসলে এখানে পাঠকরা তেমন একটা আসে না। আর জায়গাটিও একেবারে পেছনের দিকে হওয়ায় পাঠকদের নজরে তেমন একটা স্থান পায় না লিটল ম্যাগ চত্বর। আরেকটি লিটল ম্যাগ ‘জলছবি বাতায়ন’-এর বিক্রয়কর্মী রুপা মণি বলেন, এদিকের স্টলগুলোতে তেমন একটা বিক্রি হয় না, যদিও হয় দেখা যায় সারাদিনে মাত্র ৪টা-৫টা বই বিক্রি হচ্ছে।
লিটল ম্যাগাজিনের এক পাঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র এম জয় বলেন, আসলে লিটল ম্যাগাজিনগুলো আমাদের সমাজে শিল্প-সাহিত্যের একটি অন্যতম ও মৌলিক মুখপত্র। তবে এখন অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন স্পন্সরের চাহিদা মোতাবেক এগুলো প্রকাশ করছে, যা এটির মূলধারাকে ব্যাহত করছে। অবাণিজ্যিক ধারায় থেকে নিয়মিতভাবে এগুলো প্রকাশিত হলে এটি আমাদের সমাজে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১২১টি এবং ৯টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মেলায় আজ পর্যন্ত সাত দিনে বই এসেছে ৫২২টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।