পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
স্টাফ রিপোর্টার : এশিয়ার কয়েকটি দেশে অনলাইন বুলিং ও এর ঝুঁকি উদ্বেগজনক হলেও এর বিপরীতে দাঁড়ানো তরুণদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ডিজিটাল বুলিং-এর ধরন, তরুণ প্রজন্মের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব এবং তরুণরা কীভাবে ডিজিটাল বুলিং মোকাবিলা করছে এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস ২০১৭-তে’ সাইবার বুলিং নিয়ে টেলিনর গ্রæপের পরিচালিত একটি জরিপের এটি জানানো হয়। বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের ৩২০ জন প্রাপ্তবয়স্ক অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে জরিপটি ফেসবুকে পরিচালিত হয়। যদিও সবগুলো দেশেই সাইবার বুলিং ঘটছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, তারা তরুণদের সাথে সাইবার বুলিং নিয়ে আলোচনা করেন এবং তারা মনে করেন ক্রমেই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। আর এটা তাদের ডিজিটাল মাধ্যমে অশালীন আচরণ প্রতিহত করতে এবং ভুক্তভোগীদের অনুভূতির সাথে একাত্মতা পোষণে সহায়তা করবে। ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ফেসবুক ব্যবহারকারী যাদের অভিভাবকত্ব, পারিবারিক সমস্যা, শিশুকল্যাণ ও অনলাইনে নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে তাদের লক্ষ্য করে জরিপটি পরিচালিত হয়।
এ নিয়ে টেলিনর গ্রæপের সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি ডিরেক্টর জয়নাব হুসাইন সিদ্দিকী বলেন, ‘ডিজিটাল বুলিং এর বর্তমান অবস্থা ও এর বিস্তার, ডিজিটাল বুলিং এশিয়ার শিশুদের ওপর কি রকম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েই এ ব্যাপারে কি করতে পারে তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস উপলক্ষে আমরা এ ডিজিটাল জরিপ পরিচালনা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে, উৎসাহব্যঞ্জক বিষয় হচ্ছে, এশিয়া জুড়েই আমরা সাইবার বুলিং-এর বিরুদ্ধে সচেতনা বৃদ্ধির অনেক প্রয়াস লক্ষ্য করেছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানসহ অনেকেই এ নিয়ে শিশু, বাবা-মা ও বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। আমরা আশা করছি, এটা অনলাইনে দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
জরিপের ৪৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট ও অনলাইনে আচরণ নিয়ে সবসময়েই তাদের সন্তানদের সাথে কথা বলেন। ৩৯ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা মাঝে মাঝে তাদের সন্তানদের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন। মাত্র ১২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা কখনই তাদের সন্তানদের সাথে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। এশিয়ার প্রাপ্তবয়স্কদের একটা বড় অংশ মনে করেন, তারা অনলাইনে তরুণদের নিরাপত্তা নিয়ে অবগত এবং যথেষ্ট সচেতন। জরিপে অংশগ্রহণকারী ২২ দশমিক ৫ শতাংশ সন্তানদের সাইবার বুলিং-এর অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে বেশিরভাগই শত্রæভাবাপন্ন, বিরূপ মন্তব্য এবং অনলাইনে অবমাননাকর উক্তি জাতীয় সাইবার বুলিং-এর শিকার হয়েছে। উত্তরদাতাদের আরেকটা বড় অংশ জানিয়েছেন, তারা জানেন না তাদের সন্তানদের তালিকাভুক্ত কোনো সাইবার বুলিং-এ শিকার হওয়ার ঘটনার কথা। এরপরে উত্তরদাতাদের আরেকটি বড় অংশ জানিয়েছেন, সাইবার বুলিং নিয়ে তাদের সন্তানদের প্রশিক্ষণ দেয়ার ফলে এবং এ অবস্থার শিকার হলে তারা (সন্তানরা) কি করবে এটা জানার কারণে শিশুরা সাইবার বুলিং-এর শিকার হয়নি। সাইবার বুলিং-এর অভিজ্ঞতা সন্তানদের ওপর কি রকম প্রভাব ফেলছে এমন প্রশ্নের জবাবে অভিভাবকরা বলেন, শিশুরা কীভাবে অনলাইন বুলিং-এর মোকাবিলা করবে এবং কি করে এটাতে আক্রান্ত না হয়ে অগ্রাহ্য করবে এ বিষয়ে জানা শিশুদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। ২৯ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, সাইবার বুলিং শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তারা একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হতাশায় ভোগে। ২৪ শতাংশ জানিয়েছেন, এ অবস্থা শিশুদের আরও অনেক সাবধানী করে তোলে এবং তারা নিজেদের অনলাইনে আত্মরক্ষা করতে শেখে। আরও ২৪ শতাংশ মনে করেন, তাদের মনে হয় না তাদের সন্তানরা সাইবার বুলিং-এ আক্রান্ত। ৭ শতাংশ জানিয়েছেন, অনলাইন বুলিং-এ আক্রান্ত শিশুরা এ ব্যাপারে অন্য শিশুদের সহায়তা করতে উৎসাহিত বোধ করে। যাদের সন্তানরা অনলাইনে গেম খেলে তাদের সাইবার বুলিংয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনলাইনে যারা সাধারণ ব্রাউজিং করে তাদের চেয়ে বেশি। জরিপে ৭৯ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের সন্তান এবং পরিচিত শিশুরা বিশেষ করে ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনলাইন গেমস খেলার সময় শারীরিকভাবে আক্রান্ত হওয়ার হুমকির শিকার হয়েছে। এটা ঘটে বিশেষ ওয়েবসাইটে অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মে। ৪১ শতাংশ জানিয়েছেন, শিশুরা অনলাইনে যেসব আপত্তিকর মন্তব্যের শিকার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গালাগালি, বর্ণবাদী ও যৌনতাবিষয়ক মন্তব্য। জরিপে ২৭ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, শিশুদের অনলাইনে নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো তাদের জন্য কোন ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিরাপদ আর কোনগুলো থেকে তাদের দূরে থাকা উচিত এ সম্পর্কে শিশুদের অবগত করা। এরপরেই ছিল ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা এবং অনলাইনে অনেকেই নিজের পরিচয় লুকিয়ে বেনামে বিভিন্ন বিষয় পোস্ট ও শেয়ার করা সম্পর্কে জানা।
তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে প্রাপ্তবয়স্কের যে উদ্বেগ, সাইবার বুলিংÑ তারই একটি অংশ। শিক্ষার মাধ্যমেই ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন আচরণ প্রতিরোধ করতে হবে। ৫৫ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন তাদের সন্তানরা অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তির কাছে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়েছে। ৫১ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের সন্তানরা অনুপযুক্ত ওয়েবসাইটে গিয়েছে। অনলাইন স্ক্যাম এবং ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম বেড়ে যাওয়া সত্তে¡ও আশ্চর্যজনকভাবে উত্তরদাতারা জানিয়েছেন, তাদের সন্তান এবং পরিচিত শিশুরা ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যাকিং এবং এনএসএফডবিøউ (নট সেফ ফর ওয়ার্ক) ছবি বা ভিডিও শেয়ারিং মতো ঘটনার এর শিকার হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।