পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : দূরে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একসময় একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। রানারের ডাক শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত প্রিয়জনের অপেক্ষায় থাকা প্রতিটি মুখ। ভালোবাসার মানুষটি থেকে শুরু করে পরিবারের খোঁজ নেয়া এবং সরকারি-বেসরকারি সকল দাপ্তরিক কাজে একসময় চিঠিই ছিল একমাত্র ভরসা। পোস্ট-অফিসগুলো ছিল কোলাহলময় ও কর্মব্যস্ততার ভিড়ে চঞ্চল। প্রতিদিন নতুন ডাকটিকিট জমানো ছিল সেই সময়ের এক অভিজাত শখ। আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযুদ্ধাদের জরুরি খবর আদান-প্রদান ও গোপন সংবাদের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই চিঠি। সেইসব চিঠিই আজ মুক্তিযুদ্ধের দলিল হিসেবে আমাদের সঠিক ইতিহাস জানাচ্ছে। কিন্তু প্রযুক্তি উৎকর্ষে এখন মানুষ মুঠোফোনের মাধ্যমে মুহূর্তেই জেনে নিতে পারে তার প্রিয়জনের সর্বশেষ অবস্থা। দোয়াত-কলমের জায়গায় স্থান করে নিয়েছে ছোট স্ক্রিনের ক্ষুদেবার্তার বক্স। ইন্টারনেটের বদৌলতে ই-মেইল, ফেসবুুক, টুইটার ইত্যাদির ভিড়ে এখন কেউ আর চিঠির কথা প্রয়োজনই মনে কওে না। পোস্ট-অফিসের কোলাহল আজ কালের গর্ভে কোথায় হারিয়ে গেছে তা আজ অনেকে খোঁজও রাখে না ঠিকমত। পোস্ট-অফিসগুলোর কাজ এখন শুধু ব্যক্তিপরিচয় নির্ধারণের জন্য ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ।
তাই এখনকার তরুণদের সামনে পোস্ট-অফিসের সেই সোনালি অতীতগুলোকে তুলে ধরতে বইমেলায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের স্টল ‘বাংলাদেশ ডাক বিভাগ’ রেখেছে তাদের কিছু আয়োজন।
তাদের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম প্রকাশিত ডাকটিকিট থেকে আজ পর্যন্ত প্রকাশিত সকল ডাকটিকিটের নমুনা। তারা ডাকটিটিটের একটি স্মারক পাতা রেখেছে যাতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রকাশিত এযাবৎ অনেক ডাকটিকিটের নমুনা পাওয়া যায়, যেমন: যুদ্ধ জয়ের গল্প-৫২ থেকে ৭১, বাংলাদেশের জীবনযাত্রা, শিল্প-সাহিত্যে বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও বাংলাদেশের পাখি। এছাড়াও স্টলে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত বিশেষ স্মারক ডাকটিকিটসমূহও। এর মাঝে রয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ডাকটিকিট, বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী স্মরণে প্রকাশিত ডাকটিকিট, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সচেতনতামূলক ডাকটিকিট ইত্যাদি। এখানে রয়েছে অমর একুশে ও বইমেলা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ডাক বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট। একুশের ডাকটিকিট নিয়ে তাদের রয়েছে আলাদা একটি আয়োজন। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা শহীদদের নাম ও ছবি সম্বলিত ডাকটিকিটের এক অনন্য আয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ভাষা সৈনিক ও বাংলাভাষা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ডাকটিকিটেরও দেখা মেলে তাদের এ স্টলে। যা তরুণ প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে।
স্টল ঘুরে দেখা যায় যে, ডাক বিভাগ কর্তৃক বিভিন্ন সেবাও তারা দিচ্ছে আগত দর্শনার্থীদের এর মাঝে আছে ই-কমার্স সেবা, পোস্ট ই-সেবা, আর পোস্ট ক্যাশ কার্ড সেবা।
স্টলের বিক্রয়কর্মী উত্তম কুমার চন্দ্র বলেন, আমরা আগত দর্শনার্থীদের অনেক সাড়া পাচ্ছি। ডাকটিকিট সংগ্রহ করা একটা শখের বিষয়। তাই এখানে বেশিরভাগ দর্শনার্থীই আসছেন ডাকটিকিট সংগ্রহ করতে। আগত দর্শনার্থীদের মাঝে বেশিরভাগই তরুণরা।
এসময় কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী সামিয়া রহমান, হেলেন ফকির ও সুমি উর্মির সঙ্গে। তারা জানান আসলে এখনতো আর আগের মতো চিঠিপত্রের কোন ব্যবহারিক কাজ নেই। তবুও এটা একটা ঐতিহ্যের মতো সভ্যতার সাথে মিশে আছে। প্রাচীন কাল থেকেই চিঠি যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। আমরা এখন ই-মেইলের মাধ্যমেই চিঠির সকল কাজ করে ফেলি, ফলে এ ব্যবস্থাটি দিন দিন তার অবস্থান হারাচ্ছে। সরকারের উচিত এ বিভাগটিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে আবার সচল করা। আর চিঠির সবচেয়ে মজার দিকটি হচ্ছে ডাকটিকিট জমানো। মূলত ডাকটিকিটের জন্যই এই স্টলে আসা।
গ্রন্থমেলায় এমাজউদ্দীনের গণতন্ত্র এখন ও গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বই দু’টি হলো- গণতন্ত্র এখন ও নিবন্ধ সংকলন গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র, প্রকাশ করেছে দি ইউনিভার্সেল একাডেমি। প্রচ্ছদ এঁকেছেন অরূপ মান্দি।
গতকাল সোমবার বিকালে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা আমার একটি নিবন্ধের সংকলন নিয়ে গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র বইটি প্রকাশিত হয়েছে। আর দেশের গণতন্ত্রের কাঠামো, কিভাবে তার প্রাণে স্পন্দন তৈরি করা যায় তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে গণতন্ত্র এখন বইটিতে।
এমাজউদ্দীন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিলেন তাদের অধিকাংশেরই স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্রের যথার্থ বাস্তবায়ন। তাদের স্বপ্নের কথাগুলো বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
বইয়ের প্রকাশক মো. শিহাব উদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, বই মেলায় এমাজউদ্দীন স্যারের বইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে বই দুটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার আ হ ম দেওয়ান মানিক। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকুমল বড়–য়া, খ্যাতিমান সাংবাদিক ড. আব্দুল হাই সিদ্দীক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, দি ইউনিভার্সেল একাডেমির পরিচালক ও প্রকাশক অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক মিনহাজ ভূঁইয়া প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।