Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার কচ্ছপের পিঠে

| প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মংলা সংবাদদাতা : এবার স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে কচ্ছপের পিঠে। আর এ ট্রান্সমিটার পিঠে নিয়ে সুন্দরবন উপকূলের জলসীমাসহ সমুদ্র বুকে ঘুরে বেড়াবে কচ্ছপ। ফলে বিচরণ-আবাসস্থলসহ পারিপার্শিক স্বচিত্র তথ্য পাওয়া যাবে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে। পৃথিবী থেকে বিলুপ্তপ্রায় ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে এর বংশবিস্তারের জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে দু’টি কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মোহনার আদাচাই এলাকায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
বন বিভাগ, টারটেল সারভাইভাল এলায়েন্স, ভিয়েনা জু ও প্রকৃতি জীবন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা এর কার্যক্রম শুরু করেন। এর ফলে কচ্ছপের জীবনাচরণের তথ্য ও পরিবেশগত ছবি সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। এ গবেষণার মধ্য দিয়ে জানা যাবে এ প্রজাতির কচ্ছপের স্বভাব, খাদ্য সংগ্রহ, বিচরণ, পরিবেশসহ সাগেরর গভীর/অগভীর কোন পানিতে থাকতে পছন্দ করে, সে সব বিষয়। এছাড়া এ কচ্ছপ বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশ ছেড়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কা অংশে যায় কিনা জানা যাবে তাও। এখন থেকে দীর্ঘ এক বছর ধরে কচ্ছপটির গতিবিধি পর্যালোচনা করা হবে। পর্যলোচনা ও গবেষণা শেষে সুন্দরবন এবং বঙ্গোপসাগরে এ প্রজাতির কচ্ছপের আরো বাচ্চা অবমুক্ত করা হবে। এ লক্ষে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন এলাকায় ২০১৪ সালে গড়ে তোলা হয় ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র। এ কেন্দ্র থেকে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে কচ্ছপের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার পর সেগুলো প্রাপ্তবয়স্ক হলে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন এ প্রকল্পের বিশেষজ্ঞরা। এর মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় এ কচ্ছপ প্রজাতিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন এলাকায় ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে মাত্র ১০০টির মতো। এ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা অস্ট্রিয়াজুভিয়েনা বিজ্ঞানী ডা. পিটার জানান, উৎপাদিত কচ্ছপের জীবনাচরণ সংরক্ষণ ও তাদের নিরাপত্তার জন্য অবমুক্তকালীন সময়ে এদের পিঠে বিশেষব্যবস্থায় বসিয়ে দেয়া হয় স্যাটেলাই ট্রান্সমিটার সংযোগ যন্ত্র। এ যন্ত্রের সাহায্যে কচ্ছপ দু’টি প্রেরণ করবে তাদের গতিবিধি অবস্থান ও ওই এলাকার সার্বিক অলোকচিত্র। প্রায় এক মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে সুন্দরবনের করমজল প্রজনন কেন্দ্রে স্যাটেলাই ট্রান্সমিটার সংযুক্ত কচ্ছপ দু’টি পর্যবেক্ষণ শেষে অবমুক্ত করা হলো। বিজ্ঞানীরা এ থেকে আশানুরূপ সুফল পাবে বলে তিনি আশাবাদী। এ কচ্ছোপ দু’টি প্রতিনিয়ত তাদের সাথে থাকা স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার ও ক্যামেরা থেকে তাদের অবস্থান ও ভৌগোলিক ছবি প্রেরণ করবে যাতে করে বিজ্ঞানীরা তাদের জীবনাচরণ নিয়ে গবেষণা করতে পারেন। এ গবেষণা এই প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ট্রান্সমিটার সংযুক্ত কচ্ছপগুলোর প্রেরিত তথ্য ছবি তাদের জি.পি.আর.এস, ম্যাপ, অবস্থান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে পাওয়া যাবে। কচ্ছপ অবমুক্ত করার সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল খুলনার বনসংরক্ষক জাহিদুল কবির, অস্ট্রেলিয়ার টাটাল আইল্যান্ডের প্রধান বিজ্ঞানী ড. পিটার প্রাসাগ, পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: সাইদুল ইসলাম ও প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ