পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : বাংলাভাষীদের প্রাণের উৎসব এই অমর একুশে বইমেলা। তাই বইমেলাকে ঘিরে সবারই থাকে এক অন্যরকম আগ্রহ। বইমেলা আসা, বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করা, পছন্দের লেখকের বই কেনা, প্রিয়জনকে বই উপহার দেয়া একটি উৎসবের রীতি। সাধারণ মানুষের যখন বইমেলাকে ঘিরে এমনই আগ্রহ তখন কিছু মানুষ নিভৃতে কেঁদে যায়। অন্যের মতো করে বইমেলার সে আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ তাদের নেই। প্রকৃতির এক নিষ্ঠুর ভাগ্যলিপিতে তাদের চোখে দেয়া হয়নি কোনো আলো। কিন্তু ¯্রষ্টার দেয়া অন্তর আলোতে তারা দেখে এ বইমেলার সৌন্দর্য। উপভোগ করে বইমেলার যাবতীয় কোলাহল আর বইয়ের গন্ধ। তাদেরও প্রবল আগ্রহ থাকে অন্যদের মতো করেই।
এমনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অন্তর আলো জাগ্রত রাখতে প্রতিবারের ন্যায় স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা নিয়ে আসে তাদের আয়োজন। বাংলা একাডেমি চত্বরে ৮৪ এবং ৮৫ নম্বর স্টলে। তাদের এই স্টল দৃষ্টিহীন বইপ্রেমীদের দুঃখের সীমা হয়তো পুরোটা না হলেও অনেকখানি কমিয়ে আনে। কারণ নির্দিষ্ট সিলেবাসের পাঠ্যবইয়ের বাইরে তারা এখানে পাচ্ছেন বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকের লেখা গল্প, কবিতার বই। তাদের অ্যাকাডেমিক বইয়ের বাইরে সাহিত্য পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে এ সুযোগ তারা সব প্রকাশনী থেকে পেতে চান। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে প্রত্যেক প্রকাশনাকে কমপক্ষে একটি ব্রেইল প্রকাশ বাধ্যতামূলক করে দেয়ার দাবি করেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী শারমিন আক্তার রিমা বলেন, স্পর্শ ব্রেইল শুধুমাত্র আমাদের জন্য বই প্রকাশ করে থাকে। যদি সব প্রকাশনী বছরে একটি করে বইও ব্রেইল আকারে বের করে তাহলে আমাদের পড়ার সুযোগ বাড়ে। বাংলা একাডেমি চাইলে প্রত্যেক প্রকাশনাকে বাধ্যতামূলকভাবে ব্রেইলে একটি করে হলেও বই প্রকাশ করতে নির্দেশনা দিতে পারে।
চোখে আলো নেই বলে বইমেলার জন্য আগ্রহের কমতি নেই বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের ছাত্রী কবিতা আক্তারেরও। বইমেলা ঘুরে দেখেছেন। চোখের আলোতে না দেখলেও মনের আলোতে অনুভব করেছেন এর কোলাহল, উৎসব আর সৌন্দর্য।
এ বছর স্পর্শ ব্রেইল ৭টি নতুন ব্রেইল প্রকাশ করছে। ব্রেইলগুলো হলোÑ শোভনের ৭১, দলের নাম ব্ল্যাক ড্রাগন, ঈশপ গল্প সমগ্র, ৮০ দিনে বিশ্বভ্রমণ, গলদা মামার গোয়েন্দাগিরি, ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং স্পর্শ ছুরি।
স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনীতে দায়িত্ব পালনরত কর্মীরা জানান, মূলত মানুষের সচেতনতা বাড়াতেই আমরা এখানে স্টল দিয়েছি। আমরা চাই বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে প্রত্যেক বড় বড় প্রকাশনাকে বছরে অন্তত একটি করে হলেও ব্রেইল প্রকাশনা বাধ্যতামূলক করে দেয়া হোক।
বাংলা একাডেমির ৩৯ নম্বর স্টলে বার্ডো নামক একটি প্রতিষ্ঠান তাদের আয়োজন রাখে দৃষ্টিহীনদের ব্রেইল লেখা ও পড়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত যন্ত্র ও প্রশিক্ষণের সামগ্রী নিয়ে। তারা ব্রেইল লেখার নিয়ম ও তা পাঠ করার নিয়ম সম্বন্ধে ধারণা দিয়ে থাকে দৃষ্টিহীন নানা বয়সের লোকদের। তাদের এ স্টলে দেখা মেলে এমনই এক শিশুর। সে তার বাবার সাথে এসেছে এখানে। মুনিরা জাহান নামের তৃতীয় শ্রেণীর এই শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধুরা সবাই দেখতে পায় তারা অনেক মজা করে বই পড়ে। আমার অন্যদেরটা শুনে শুনে বুঝতে হয়। ব্রেইলে বই পড়তে পারলে আমিও একা একাই বই পড়তে পারব। এটা অনেক মজার। অন্য সবার মতো করেই আমিও আমার পছন্দের বইগুলো পড়ব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।