Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কবি নজরুল বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার সাময়িক বহিষ্কার

ইনকিলাবের রিপোর্টে তোলপাড়

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রেজিস্ট্রারসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা
মো. শামসুল আলম খান : ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে গত  ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত রিপোর্টে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ের ভেতর-বাইরে সমালোচনাকে উপেক্ষা করে অবশেষে স্বজনপ্রীতির নিয়োগে ভিসির ছেলে ওয়াদুদ-উল আলমকে ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শনিবার রাতে বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এ নিয়োগ চূড়ান্ত হয়। এ নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।  
বিশ^বিদ্যালয়ের একটি ফেইসবুক ফেইজে মো. আসাদ চৌধুরী নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, উপাচার্য মোহিত-উল আলমের ছেলে ওয়াদুদ-উল আলম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা সত্ত্বেও তাকে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যার নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।
জানা যায়, সদ্য নিয়োগে ভিসির একান্ত আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত শিবির নেতা সহকারী রেজিস্ট্রার এহসানের ভাই ইমতিয়াজ হাবীব জিপিএ ২ পয়েন্ট নিয়ে দাখিল ও উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ২ পয়েন্ট পেয়ে এইচএসসি পাস করলেও তাকে বিশ^বিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যা অনিয়মের নিয়োগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এমন দাবি বিশ^বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার। এদিকে শিক্ষার্থীদের গরু মন্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলনের মুখে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন আলোচিত সহকারী রেজিস্ট্রার এহসান হাবীব। শনিবার রাতে বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অপরদিকে  শিক্ষার্থীদের গরু, আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্যের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী মডেল থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় দু’টি মামলা হয়েছে। পৃথক এসব মামলার বাদীরা হলেনÑ নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও নূরুল বাকী খান। মামলার আসামিরা হলেনÑ রেজিস্ট্রার আমিনুল ইসলাম, সহকারী রেজিস্ট্রার এহসান হাবীব, সহকারী রেজিস্ট্রার আফরোজা সুলতানা ও সহকারী রেজিস্ট্রার শিক্ষা আমিনুল ইসলাম। অপরদিকে নূরুল বাকী খান বাদী হয়ে দায়ের করা আরো একটি মামলায় রেজিস্ট্রার আমিনুল ইসলাম ও সহকারী রেজিস্ট্রার এহসান হাবীবকে আসামি করা হয়েছে।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।         
মামলার এজাহারে জানা যায়, আসামিরা বিশ^বিদ্যালয়ে জামায়াত শিবিরের রাজনীতির ধারক-বাহক। তাদের সাথে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারা বর্তমান সরকারকে অীস্থতিশীল করার অপকর্মে জড়িত। গত বছরের ১৬ আগস্ট আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সহকারী রেজিস্ট্রার এহসান হাবীব তার ফেসবুক আইডিতে আওয়ামী লীগকে হেয় করে স্ট্যাটাস এবং ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী, আমলা ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দেয়। এ ছাড়াও চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি এহসান হাবীব অন্যদের সাথে যোগসাজশে পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গরু মন্তব্য করে স্ট্যাটাস লিখেছে। যা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়।   
বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডক্টর মোহিত-উল আলম সহকারী রেজিস্ট্রার এহসান হাবীবের সাময়িক বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ