Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ ও অপসংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে-জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে মূর্তি অপসারণ ও সকল অপসংস্কৃতি বন্ধের দাবীতে বাংলাদেশ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের উদ্যোগে সর্বদলীয় ইসলামী নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ইসলাম আল্লাহ তাআলা মনোনীত ঐশী ধর্ম।
ইসলাম ধর্মের আসমানী ও ঐশী কিতাব হচ্ছে পবিত্র কুরআন। মহান আল্লাহ তাআলা এই কিতাব নাজিল করেছেন রাসূল (সা.) এর উপর এবং রাসূল (সা.)কে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মূর্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য। তাই মূর্তি মানলে বা মূর্তি স্থাপনকে প্রশ্রয় দিলে আল্লাহর একত্ববাদকে অস্বীকার করা হয় এবং মুসলমানের ঈমান থাকবে না; এবং সে মুসলমানিত্ব থেকে খারিজ হয়ে যাবে। এ কারণেই মুসলমানিত্ব রক্ষার জন্য ঈমান হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ। দুনিয়ার সকল সম্পদ এমনকি মাতা-পিতা, স্ত্রী-কন্যা, উস্তাদ কোনো কিছুই ঈমানের ঊর্ধ্বে নয়। ঈমান রক্ষায় হযরত ইবরাহীম (আ.) তার পিতাকে ত্যাগ করেছিলেন। তাই ঈমান রক্ষায় জানমাল দিয়ে হলেও প্রত্যেক মুসলমানকে মূর্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। ইসলামী দলসহ অন্যান্য সকল দল ও নেতৃবৃন্দকে ঈমান রক্ষার জন্য মূর্তির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে সম্প্রতি ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনে বাংলাদেশের আপামর জনগণ বিস্মিত হয়েছে। এই মূর্তি স্থাপন সংবিধানের ১২ ও ২৩ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ২৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে,রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবার ও অংশগ্রহণ করবার সুযোগ লাভ করতে পারেন৷’ নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে মূর্তি অপসারণ ও অপসংস্কৃতি বন্ধ করা না হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। দলের নির্বাহী সভাপতি মুফতী মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের সভাপতিত্বে গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।  
মতবিনিময়ে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, জামিআ মুহাম্মদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশোয়ারী, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জমিয়তের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহা উদ্দীন জাকারিয়া, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নাল আবেদীন, মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা মতিউর রহমান, যুব জমিয়ত সভাপতি মাওলানা শরফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী, সেক্রেটারী মাওলানা গোলাম মাওলা, ছাত্র জমিয়ত সভাপতি মুফতি নাসির উদ্দীন খান, সেক্রেটারী মাওলানা উমর ফারুক, যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগর সভাপতি মুফতি জাবের কাসেমী, সেক্রেটারী তোফায়েল গাজালী, ছাত্র জমিয়ত মহানগর সভাপতি বুরহানুদ্দীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, এদেশ থেকে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান আকীদা তাহযীব তামাদ্দুন ধ্বংসের চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। মূর্তি সংস্কৃতি আমাদের ধর্ম, দেশ ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এসব চক্রান্তের মাধ্যমে দেশকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্য নিয়ে তোড়জোড় চলছে। নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, মতবিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দকে এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে কর্মসূচী নিতে হবে এবং হেফাজত সহ সকল ইসলামী দলকে আন্দোলনে নামতে হবে ।
খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর বলেন, মূর্তি ইসলামে সবচেয়ে বিরোধী অনুষঙ্গ। এটা মুসলমানদের ঈমান বিরোধী। সকল বাধা-বিপত্তি প্রতিহত করে ঈমান বিরোধী মূর্তি স্থাপন প্রতিহত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মুসলিম লীগ মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খায়ের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগের সামনে মূর্তি স্থাপন করে ইসলাম ও বিশ্ব স্বীকৃত আইন প্রণেতা রাসূল (সা.) এর অবমাননা করা হচ্ছে। মুসলমানদের সর্ব শ্রেষ্ঠ সম্পদ ঈমান রক্ষার জন্যই ঐক্যবদ্ধ কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম জনসংখ্যার দিক দিয়ে ৯৫ ভাগ মুসলমান, সরকারের প্রশাসনের বেশীরভাগ লোক মুসলিম। তাহলে কার সিদ্ধান্তে মুসলিম চেতনার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপন করা হলো, জাতি তা জানতে চায়। সরকার এ বিষয়ে কোনো ভাবেই দায় এড়াতে পারে না। তিনি মূর্তি অপসারণে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করার আহবান জানান। ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, মুসলমানের দেশে সর্বোচ্চ আদালতের সম্মুখে মূর্তি স্থাপন চরম অবমাননা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ