Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে পিতা-পুত্র

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছে পিতা-পুত্র। পিতা-পুত্র একসাথে দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় বসায় আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। পুত্রের সাথে পিতা পরীক্ষায় বসায় তরুণ প্রজন্মকে পড়ালেখায় আরো আগ্রহী করবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঈশ্বরগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসেছে কম্পিউটার ট্রেডে ডিএস কামিল মাদরাসার ভোকেশনাল শাখার ছাত্র ইফতেখার জাহান রাফি। অন্য দিকে, মাইজবাগ ইউনিয়নের পীতাম্বরপাড়া হুসাইনিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে রাফির পিতা ফানুর আশরাফুল উলুম মাদরাসার ভোকেশনাল শাখার ছাত্র মাসুদ কবীর ছোটন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর দত্তপাড়া গ্রামের আব্বাছ মিয়ার সাত ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মাসুদ কবীর ছোটন। ছোটনের বয়স যখন ছয়, তখন দলিল লেখক বাবা মারা যান। বয়স ৩৬ হলেও এসএসসি পাস করার বাসনা ছোট বেলা থেকেই দেখতেন ছোটন। মাসুদ কবীর ছোটন বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর ভাইয়েরা নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তার পড়ালেখায় অনেক আগ্রহ থাকলেও অষ্টম শ্রেণিতেই আটকে যায় পড়ালেখা। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ঈশ্বরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে কাজ শিখতে শুরু করেন। পরে নিজেই স্ট্যাম্প ভ্যান্ডারের কাজ করে জীবন চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই ম্যাট্রিক পাস করার ইচ্ছা থাকলেও পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়া তা পূরণ হয়নি। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। দ্বিতীয় ছেলে ইফতেখার জাহান রাজু অষ্টম শ্রেণিতে, আর মেয়ে সায়মা নার্সারি ক্লাসে পড়ালেখা করে। সন্তানদের পড়ালেখা দেখে নিজের ভেতরে ফের এসএসসি পাস করার আগ্রহ জাগে। মাসুদ কবীর ছোটন বলেন, ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি হয়ে কাজের পাশাপাশি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বাবা-ছেলে পরীক্ষা দেয়ায় স্ত্রী জাহানারও উৎসাহ দিয়ে সহযোগিতা করছে। গতকাল রোববার ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা শেষে তিনি বলেন, দু’টি পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আশা করছি, আমার ম্যাট্রিক পাস করার স্বপ্ন পূরণ হবে। মাসুদ কবীর ছোটনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ছেলের সাথে স্বামী পড়ালেখা করে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এ জন্য স্বামীকে উৎসাহ দিয়ে পড়ালেখা করতে সহযোগিতা করছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছফিউল্লা সরকার বলেন, শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে বাবা পড়ালেখা করছে, এটাতে আরো মানুষ উৎসাহিত হবে। বিষয়টি জেনে উজ্জীবিত হবে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ