পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো। চীন থেকে আমদানীকৃত সাদা কোচ পাচ্ছে রংপুর এক্সপ্রেস। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে সাদা কোচের নতুন রংপুর ও মহানগর এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আমরা অনেক আগেই রংপুর ও মহানগর এক্সপ্রেসে সাদা কোচ সংযোজন করার প্রস্তাব রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন করেছে। এখন অপেক্ষা উদ্বোধনের জন্য। জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, রংপুর এক্সপ্রেস ও মহানগর এক্সপ্রেসে সাদা কোচ সংযোজনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি নতুন কোচের এই দুটি ট্রেন উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। এখন ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই দিন সকালে রেলমন্ত্রী নতুন কোচের দুটি ট্রেন উদ্বোধন করবেন। আর কোনো ট্রেন সাদা কোচ পাচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, তূর্ণা, প্রভাতী ও গোধূলীর অবমুক্ত কোচ থেকে ঢাকা-সিলেট রেলপথের আরও একটা ট্রেনকে সাদা কোচ দেয়া হতে পারে। এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে গতকাল একটি খবরে বলা হয়েছে ঢাকা-সিলেট রেলপথের জয়ন্তিকা ও উপবন এবং চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের পাহাড়িকা-উদয়নে নতুন কোচ যুক্ত হচ্ছে। একই সাথে এই চারটি ট্রেনে কোচ সংখ্যাও বাড়ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের তূর্ণা-প্রভাতীর অবমুক্ত কোচগুলো এই চারটি ট্রেনকে দেয়া হবে। এই খবর পড়ার পর উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশের হাজার হাজার রেলফ্যান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান ফোরাম ও বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েস্ট জোন নামক ফেসবুক পেজে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করনে। অনেকে রেল মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। সারাদিন এ নিয়ে ঝড় প্রবহমান থাকে ফেসবুক পেজে।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-রংপুর রেলপথে রংপুর এক্সপ্রেস ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে মহানগর এক্সপ্রেসকে অবমুক্ত সাদা কোচ দেয়ার জন্য একটি প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে অনুমোদন মিলেছে। তবে উদ্বোধনের তারিখ আমাদেরকে জানানো হয়নি। এটা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সাথে সাথে ফোন করলে তিনি জানান, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই দিন সকালে কমলাপুর স্টেশনে রেলমন্ত্রী সাদা কোচের মহানগর ও রংপুর এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান জানান, রংপুর এক্সপ্রেসের লোড বাড়িয়ে ১৪/২৮ করা হয়েছে। থাকবে এসি কেবিনসহ এসি চেয়ার কোচও।
এদিকে, পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে দ্রুতই এগিয়ে চলছে সাদা কোচের রিপিয়ারিংয়ের কাজ। প্রায় ১০ বছর আগে চীন থেকে আমদানীকৃত সাদা কোচগুলো পুরোপুরি খুলে সেগুলোর চাকা থেকে শুরু করে সবকিছু নতুন করে সংযোজন করা হচ্ছে। রিপিয়ারিং শেষে কোচগুলোতে নতুন করে রং করা হচ্ছে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির আগেই ১৪/২৮ লোডের রেক ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের এক প্রকৌশলী।
২০১১ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা-রংপুর রেলপথে চালু হওয়া রংপুর এক্সপ্রেস প্রায় সাড়ে ৫ বছর ধরে চলছে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে মেরামত করা অতি পুরাতন ইরানী কোচ দিয়ে। উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, খুব শিগগিরই রংপুর এক্সপ্রেসের কোচগুলো পাল্টে ফেলা হবে। কিন্তু সাড়ে ৫ বছরেও তা হয়নি। শুরুতে ১১টি কোচ দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরে এসি কেবিনসহ দুটি কোচ কেটে ফেলা হয়। পুরাতন কোচ নিয়ে চলাচল করলেও রংপুর এক্সপ্রেসের গতি বেশি। সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার গতিতে চলে এই ট্রেন। এমনকি এই ট্রেনের স্টপেজও কম। সে কারণে উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের পছন্দের ট্রেন এটি। ইন্দোনেশিয়া থেকে লাল সবুজ কোচ আমদানীর পর রংপুর এক্সপ্রেসে এই নতুন কোচ দেয়ার দাবি উঠেছিল। রংপুর রেল স্টেশনে এ দাবিতে রংপুরবাসী মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ করেছে। এমনকি এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত লাল সবুজ কোচ না পেলেও ১০ বছরের পুরাতন কোচ পাওয়ার খবরেও খুশিই ছিল রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা। গতকাল হঠাৎ করে একটি খবরে তাদের আশার আকাশে কালো মেঘ জমে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যানস ফোরামের এডমিন বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ওই খবর পড়ার পর থেকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। বার বার নিজেকে প্রশ্ন করি, এও কী সম্ভব? তিনি বলেন, রংপুর এক্সপ্রেস সাদা কোচ প্রাপ্তি থেকে বাদ পড়লে উত্তরাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ তাদের সামান্যতম অধিকার থেকে বঞ্চিত হতো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।