পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বাড়ি-ঘর। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় থেকে গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। অপরদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে ঠেঙ্গারচরে আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রীবাহী জাহাজ পাঠিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক।
জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে (আরাকান) অক্টোবর থেকে চালানো সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘প্রায়’ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে এবং সম্ভবত রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে চেয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের হত্যা করা হয়েছে। সেনা অভিযানের সময় প্রাণভয়ে পলায়নরত সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, বিপুলসংখ্যক নারী ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। শুধু তাই নয়, রোহিঙ্গাদের খাবারের উৎস ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের তদন্তকারীদের কাছে একজন রোহিঙ্গা নারী অভিযোগ করেছেন, তাকে যখন ধর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছিল, তখন তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে এসে রক্ষা করার চেষ্টা করছিল। তখন হামলাকারী সেনাসদস্যদের একজন তার মেয়েকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। তাঁর আট মাসের শিশুকেও হত্যা করা হয়েছে।
এ ধরনের আরও ভয়ঙ্কর সব ঘটনার সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড় করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরের কর্মকর্তারা। তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দুই শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। অর্ধেকের বেশি নারী বলেছেন, তারা ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জায়েদ রাদ আল হুসেইন এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা অবর্ণনীয়। যেসব এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান শেষ করেছে, সেই সব এলাকায় শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, গত অক্টোবরে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে যে, রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে ঠেঙ্গারচরে আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। গতকাল শুক্রবার রয়টার্সের এক সরেজমিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জায়গাটি ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা আর মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় না। তবে তারা ঠেঙ্গারচরে যেতেও ইচ্ছুক নয়।
অন্যদিকে অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রীবাহী জাহাজ পাঠিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে মালয়েশিয়া সরকার আমলে নেবে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কাজেরও ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মালয়েশিয়ার মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশি ত্রাণ সংগঠনগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণবাহী জাহাজের আয়োজন করেছে। এটি মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর এবং ইয়াঙ্গুন বন্দরের দিকে রওনা হয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারিতে জাহাজটি ইয়াঙ্গুনে ভিড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ফ্লোটিলা থেকে খাবার ও ওষুধসহ অন্যান্য প্রায় ৫০০ টন প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এরপর জাহাজটি তিনদিনের যাত্রায় বাংলাদেশের টেকনাফ বন্দরের দিকে রওনা হবে। মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজটি বিরূপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, মিয়ানমার জাহাজটিকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী ‘সিটওয়ে’ অভিমুখে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তবে ত্রাণ মিশনের প্রধান আব্দুল আজিজ আব্দুল বলেছেন, মিয়ানমার তাদেরকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানীতে যেতে দেবে এবং ত্রাণ বিতরণ করার সুযোগ দেবে বলেই তারা আন্তরিকভাবে আশা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।