Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপ্রীতির এন্তার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মো: শামসুল আলম খান : ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপ্রীতির নিয়োগে অনিয়মের মহোৎসব চলছে। যোগ্যদের বাদ দিয়ে পরিবারের স্বজন ও ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়োগের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এখন পারিবারিক স্বজন ও ছাত্রলীগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।    
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মোহিতউল আলমের ভাগ্নে আদনান মুন্নাকে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে চাকরি দেয়া হয়েছে। বাসার কেয়ারটেকারের আত্মীয় সারোয়ারকে লিয়াজোঁ অফিসে, ছেলের শ্যালক সামিউল ইসলামকে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, রেজিস্ট্রার আমিনুলের ভাতিজা সোহেলকে লিয়াজোঁ অফিসে, ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাবেক শিবির নেতা এহসান হাবিবের মামাতো ভাই মাহবুবুল ইসলামকে সরকারি চাকরির অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার, এহসানের ভাই বাকী বিল্লাহকে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক পদে, অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট রুহুল আমীনের ভাই রাকিবুল হাসানকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক, একই বিভাগের সৈয়দ মামুন রেজার স্ত্রী নুসরাত শারমীন তানিয়াকে শিক্ষক, সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক সুশান্ত কুমার সরকারের স্ত্রী ইন্দ্রানী কর্মকারকে শিক্ষক, স্টোর অফিসার নাজমুল হুদার সমন্ধি আল আমিনকে পরিবহন বিভাগের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ভিসির ছেলে ওয়াদুদ উল আলমকে ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক পদে এবং শিবির নেতা এহসানের আরেক ভাই ইমতিয়াজ হাবিবকে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া শেষ। এখন শুধু চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষা।   
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সূত্র জানায়, বর্তমানে নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিবুল হাসান রনি, ইব্রাহিম খলিল, মাহমুদুল হাসান লিমন, ছাত্রলীগ নেতা আরিফ, আবু বকর সিদ্দিক, হুমায়ন কবীর, ছাত্রলীগ নেতা মসিউজ্জামান খান, ফাহাদ্দুজ্জামান শিবলী।  
একাধিক নিয়োগ প্রার্থীর অভিযোগ, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে দেয়া হচ্ছে সাম্প্রতিক নিয়োগ। আর এ নিয়োগের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধায় একটি সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।    
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, নিয়ম অনুযায়ী সিন্ডিকেটের অনুমতিক্রমে নিয়োগ কমিটি না করেই ভিসি নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে নিয়োগ কমিটি করে গভীর রাতে ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় এ ধরনের উদাহরণ নেই।   
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়োগ প্রার্থীরা জানান, সেকশন অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিবুল হাসান রনি নকল করার অভিযোগে পরীক্ষার দশ মিনিটের মাথায় বহিষ্কার হলেও লিখিত পরীক্ষার রেজাল্টে তাকে উত্তীর্ণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এমনকি আভা নামের এক প্রার্থী একাধিক পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হলেও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলেও এহসানের ভাই ইমতিয়াজ জিপিএ ২ পয়েন্ট নিয়ে দাখিল ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিপিএ ২ পয়েন্ট পেয়ে এইচএসসি পাস করলেও তিনি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভায় অংশগ্রহণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিনুল হক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব নিয়োগই বিধি মেনে দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।    
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রিন্সিপাল জাকির হোসাইন বলেন, সিন্ডিকেটে এসব বিষয় উত্থাপন হয় না। যেগুলো উত্থাপন হয় সেগুলো নিয়েই আলোচনা হয়। তবে আগামী সভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।  
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহিতউল আলম বলেন, মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। নিয়োগে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ