পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সবকিছু প্রস্তুত তবুও উদ্বোধন হচ্ছে না
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : সরকারি দলের কাঙ্খিত অভিভাবক না থাকায় যথা সময়ে খুলনায় গ্যাস আসছে না। আর আসলেও তার সুবিধা পাচ্ছে না ডোমেস্টিক লাইনে (বাসা বাড়িতে)। তবে জিটিসিএল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সংযোগ সম্ভব হতে পারে। এজন্য খুলনার আড়ংঘাটায় গ্যাস ট্রান্সমিশণ কোম্পানী লি: এর নিজস্ব ল্যান্ডিং স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেয়ার জন্য সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে।
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির দায়িত্বশীল একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বলেন, দিনক্ষণ নয় খুব শিগগিরি গ্যাস সংযোগ হচ্ছে। তবে গ্যাস সংযোগ বছরের পর বছর পিছিয়ে যাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক কারণও বিদ্যমান বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের। তাদের মতে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্বে বৃহত্তর খুলনাঞ্চলের মানুষ ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে আটঘাট বেধে রাজপথে নামা, আন্দোলনের চরম মুহূর্ত প্রদশর্ন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় এ অঞ্চলের মানুষ জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ভোটদান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাঘা প্রার্থীকে হারিয়ে বিএনপি’র জয় এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের অনেকেরই উদাসীনতা ও এ অঞ্চলে কোন পূর্ণমন্ত্রী না থাকায় বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফসল খুলনায় গ্যাস আসতে বিলম্ব হয়েছে। শিল্প বন্দর নগরী খুলনার ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি খুলনাসহ ১১টি জেলায় গ্যাসনির্ভর শিল্প গড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে পদ্মার এপার। তবে গ্যাস আসলে প্রথম গ্যাস সংযোগ হবে খালিশপুরের ২২৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ইতোমধ্যে ভেড়ামারা ও ভোলাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ হয়েছে। সরকারি ঘোষণার আগেই ৩ হাজার বাড়িতে পাইপ লাইনে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। এসব গৃহের মাসিক চার্জ মাত্র ৬৫০ টাকা। খুলনায় গ্যাস আসলেও বাসা বাড়ির সংযোগ হচ্ছে না আপাতত। কর্তৃপক্ষ বলছেন পুনরায় সরকারি নির্দেশনা পেলে খুলনার বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে। কিন্তু বার বার কেন খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস সংযোগ উদ্বোধন পিছিয়ে যাচ্ছে তা জনগণের বোধ্যগাম্য নয়।
নাগরিক নেতা অধ্যাপক এনায়েত আলী বিশ্বাস বলেছেন, খুলনাঞ্চলকি অভিভাবকহীন? নাকি বিএনপি অধ্যুষিত এ অঞ্চলে উন্নয়নে কর্তাব্যক্তিদের অনীহা? তিনি আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে বিশেষভাবে দায়ী করেছে। একইসাথে খুলনা সরকারি দলের শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সূত্রমতে, ২০০৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়ে ৩ বছরের মধ্যে ২০১১ সালে শেষ করার জন্য ৫৩২ কোটি টাকার বিতরণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। নির্ধারিত সময়ের পরে দু’বছর পার হলেও প্রকল্পটি মাঠ পর্যায়ে শুরুই হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ প্রকল্পটি শেষ করার জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারিত হয়। কিন্তু নতুন সময়ের মধ্যেও গ্রাহকপ্রান্তে গ্যাস পৌঁছে দিতে পারেনি সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী।
বিলম্বের কারণ হিসেবে জানা যায়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির গ্যাস বন্টন লাইন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যে ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে প্রণীত হয়েছিল অর্থাৎ এডিবির অর্থায়নের বিষয়টি যে ডিজাইনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত হয় তা’ পরবর্তীতে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয় সুন্দরবন গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, অনেক আগেই যমুনা সেতু পার হয়ে হাটিকুমরুল থেকে ভেড়ামারা হয়ে খুলনার উপকন্ঠ অর্থাৎ আড়ংঘাটা জিটিসিএল এর নিজস্ব ল্যান্ডিং স্টেশনে গ্যাস সংযোগের জন্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহে গ্যাস সংযোগ উদ্বোধনের কথা থাকলেও গত দু’মাসে তা বাস্তবায়ন হয়নি। খুলনাবাসী প্রত্যাশা করছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যারা খুলনাবাসীর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনীতি করছেন তারা এ লক্ষ্যে সোচ্চার হবেন-কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। অর্ধদশক যাবৎ প্রকল্পটি আজও কেন ঝুলে রয়েছে তার জন্য খুলনাবাসীর কাছে জবাবদিহি করবেন। একইভাবে যেসব কর্মকর্তা এবং কর্তাব্যক্তিদের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার দড়িতে ঝুলে রয়েছে তারা চক্রান্ত করেছেন কিনা তা’ খতিয়ে দেখবেন। সরকারের শীর্ষমহলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে কমিটমেন্ট থাকলেও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের এই ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাশুল দিতে হচ্ছে কয়েক কোটি মানুষকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।