Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আত্মপক্ষ সমর্থনের পরবর্তী শুনানি ৯ ফেব্রুয়ারি

বিচারকের প্রতি খালেদা জিয়ার অনাস্থা

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা এবং এ মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দুটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া টেরিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ দিয়েছেন বিচারক।  
ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
পুরান ঢাকার বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার আবেদন নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের তুমুল হট্টগোল চলে।
বেগম খালেদার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ কয়েকজন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মোশাররাফ হোসেন কাজল।
বিকালে আদালত নেমে যাওয়ার পর কাজল গণমাধ্যমে জানান, আদালত পিটিশন রিজেক্ট করেছে। ৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির নতুন তারিখ রাখা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে পৌঁছালে জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিন এ মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। পাশাপাশি আগের দিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মামলাটি পুনঃতদন্তের যে আবেদন করেছিলেন, সে বিষয়েও শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালত পুনঃতদন্তের আবেদনের শুনানির আগে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি করতে চাইলে বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানান তার আইনজীবীরা।  
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে করা ওই আবেদনে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, এ আদালতে তারা ন্যায়বিচার পাবেন না বলে মনে করছেন এবং আদালত ও বিচারক পরিবর্তনের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিচারকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলতে থাকলে দুদকের আইনজীবী কাজল বলেন, আপনিতো শুনানির অন্য দিনগুলোতে আদালতে আসেন না। যেদিন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে আসেন শুধুমাত্র সেদিন তাকে দেখানোর জন্য আপনি এজলাসে উপস্থিত হন। আপনি ন্যায়বিচার চান না। ন্যায়বিচারে হস্তক্ষেপ করার জন্য আপনি ভূমিকা নেন।
এ পর্যায়ে বিচারক খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বলেন, আমি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অধীনে এ মামলার বিচার করছি। এখানে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ‘নো কনফিডেন্স পিটিশন’ কীভাবে দিলেন?
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এ সময় বলেন, দুদক আইনেও অনাস্থা জানানো যায়। আর দুদক আইনে যদি কিছু না থাকে বা দুদক আইন যদি কোন বিষয় অসম্পূর্ণ থাকে তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসরণ করে তা করা যায়।
এরপর দুই পক্ষের তুমুল তর্ক-বিতর্কের মধ্যে বেলা সোয়া ২টার দিকে আদালত দুপুরের খাবারের বিরতিতে যায়। বিরতির পর এজলাসে ফিরে বিচারক বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের করা অনাস্থার আবেদন নাকচ করে দেন। সেই সঙ্গে মামলা পুনঃতদন্তের আবেদনও নাকচ করা হয়।
আদেশে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের তিন বছর পরে মামলার শেষ পর্যায়ে এসে এ ধরনের আবেদনের সুযোগ নেই।
এই আদেশ নিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তুমুল হট্টগোল শুরু করেন। পরে এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রক্রিয়া শুরু করে আদালত জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলার ৩২ সাক্ষীর দেওয়া সাক্ষ্য পড়ে শোনাতে শুরু করেন।
সাক্ষ্য পড়ে শোনানোর পর বিচারক মামলার আসামি বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান- তিনি দোষী না নির্দোষ। এ সময় বেগম খালেদা জিয়া আদালতকে বলেন, তার আইনজীবীরা আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন, তিনিও এ আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছেন।
পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সময় চেয়ে আবেদন করলে বিচারক দুই মামলার শুনানির জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে দেন। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে খালেদা জিয়া আদালত থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ