পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, বিভিন্ন অপরাধের কারণে ২০১৬ সালে ডিএমপিতে কর্মরত ৪০০ পুলিশ সদস্যকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কখনও অপেশাদার আচরণ সহ্য করা হয় না। ডিএমপির ৪২তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে নাগরিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। ২০১৬ সালে ঢাকা মহানগর পুলিশের ১৭ সদস্য কর্তব্য পালন করা অবস্থায় নিহত হয়েছেন। ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। দুজন সহকর্মী দেশপ্রেমের প্রমাণ দিয়ে জীবন দিয়েছে। আমরা সবসময় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। নাগরিকদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমি ডিএমপির কমিশনার হিসেবে শাহবাগের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি। সমবেদনা জানিয়েছি এবং দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, এই বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়।
তবে পুলিশের অপেশাদার আচরণ কমে আসছে দাবি করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খল ঘটনা অনেক কম হয়েছে। তাছাড়া হাজার হাজার ঘটনা আছে, ভালো স্মৃতি আছে, দুঃসময় আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছি।
অন্য পেশার মানুষের সঙ্গে পুলিশের বিরোধ ঘটার নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধান করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান বলেন, এই ঘটনা কেন ঘটলো, তা গবেষণা করতে হবে। পর্যালোচনা করতে হবে। এটা ভাবার বিষয়। রাষ্ট্র, সমাজ এবং আমাদের সবাইকে তা ভাবতে হবে। এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, জনগণের সঙ্গে আমরা কেন খারাপ ব্যবহার করবো?
তবে পরেই আবার পুলিশের এমন আচরণের কারণ উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, একটা লোকের দায়িত্ব পালন করার কথা আটঘণ্টা। কিন্তু সে যখন আট ঘণ্টার জায়গায় ১৬ ঘণ্টা ডিউটি করে তখন তার স্বাভাবিক ব্যবহার নষ্ট হয়ে যায়। তবে মোটাদাগে আমি বলতে পারি, কোনও অপেশাদার আচরণ সহ্য করা হবে না।
ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশের অপরাধপ্রবণতা কমেছে বলে দাবি করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আমরা বহুবার বলেছি। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী একটি বিধি-বিধান অনুযায়ী চলে। যদি দায়িত্ব পালনের সময় তার আচরণে কোনও বিচ্যুতি ঘটে, যদি কেউ অপেশাদার আচরণ করে অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই। ২০১৬ সালে এমন অপেশাদার আচরণের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৪০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে- পদোন্নতি বন্ধ, নিম্নপদে নামিয়ে দেয়া, বেতন কর্তন, বেতন বাড়ানো বন্ধ, চাকরি থেকে অব্যাহতি ও চাকরিচ্যুত করা।
কমিশনার বলেন, একটি সুশৃঙ্খল পেশাদার বাহিনীতে কখনও অপেশাদার আচরণ সহ্য করা হয় না বা ক্ষমা করা হয় না। এটা আমাদের শৃঙ্খলার অংশ। যেহেতু আমরা সশস্ত্র ও সুশৃঙ্খল বাহিনী, আমাদের অভ্যন্তরীণ চেইন অব কমান্ড রয়েছে, তাই মিডিয়ার সামনে ব্যবস্থার কথা বলা যায় না। তাতে আমাদের চেইন অব কমান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে যে কথা আমি বলতে পারি, কোনওভাবেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে পার পাওয়ার কোনও অবকাশ নেই।
সম্প্রতি শাহবাগে দুই সংবাদকর্মীকে পুলিশের মারধরের ঘটনায় ডিএমপির করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাহবাগের ঘটনায় আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। আমাদের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেটা পর্যালোচনা করছেন। পর্যালোচনা শেষে অপরাধের মাত্রানুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা অতীতে বলেছি, আমরা মিথ্যা বলি না, ভণিতা করি না। অন্যায় হলে সেটা বলবো, স্বীকার করবো। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেই চেষ্টা করবো। কিন্তু একটা অপরাধকে ঢাকা দিয়ে, ধামাচাপা দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, আমরা একসঙ্গে অনেক ভালো কাজ করছি। দুই একটি সমস্যা হচ্ছে। এটিকে ওভারকাম করতে হবে। মনোভাব বদলাতে হবে এবং সব মহলের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সব দায়িত্ব পুলিশের ওপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। সাংবাদিক বলি, অন্য পেশাজীবী বলি প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। এসব নর্মস মেনে চলে, সবাই যদি দায়িত্বশীল আচরণ করি তাহলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব।
১৯৭৬ সালে ১ ফেব্রুয়ারি ১২টি থানা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কার্যক্রম শুরু হয়। তখন ৪১ লাখ নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য ১২টি থানা ও ছয় হাজার জনবল ছিল। বর্তমানে এই মহানগরীতে প্রায় দেড়কোটি নাগরিকের নিরাপত্তায় ৪৯টি থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ডিএমপি এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও ঢাকার নাগরিকের তুলনায় তা কম। পুলিশের পক্ষ থেকে বার বারই জনবল বৃদ্ধির দাবি ওঠায় গত বছর ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ পায়। সেখান থেকে কেবল সাতশ’ সদস্যকে ডিএমপিতে দেয়া হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ধীরে ধীরে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।