পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া জটিলতায় চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বেকুঠিয়ার কাছে কঁচা নদীর ওপর বাংলাদেশ-চীন অষ্টম মৈত্রী সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রায় ৩১ একর জমি অধিগ্রহণ করে চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছে চলতি মাসের মধ্যেই হস্তান্তর করার কথা। মাঠ পর্যায়ে খুব দ্রুত গতিতে এ কাজ সম্পন্ন হলেও ন্যূনতম ছয় মাস লাগবে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক বিভাগের কাছে বুঝিয়ে দিতে। তবে তার আগে অবশ্যই ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করতে হবে সড়ক বিভাগকে। অথচ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আগামী এপ্রিলের মধ্যে সেতুটির বাস্তব অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাচ্ছে। কিন্তু এ লক্ষ্যে সড়ক বিভাগ সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পুরো প্রকল্পটির কাজ শুরু করাই পিছিয়ে যাবার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে নির্ধারিত সময়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
পিরোজপুর সড়ক বিভাগ থেকে ইতোপূর্বে এ লক্ষ্যে বিভিন্ন কাগজপত্র সড়ক অধিদফতরে প্রেরণ করা হলেও নানা পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে তা আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সড়ক অধিদফতরে প্রেরণের পরে তা যাচাই-বাছাই করে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। সেখান থেকে তা আবার ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের পরে পিরোজপুর জেলা প্রশাসনকে ভূমি অধিগ্রহণের অনুমতি প্রদান করার কথা।
অথচ চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে জমি বুঝে নিয়ে ‘ওয়ার্ক সেড’-এর নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাচ্ছে। এমন কি চীনা সরকার এপ্রিলের মধ্যে সেতুর বাস্তব অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরুর লক্ষ্যে সব ধরনের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলেও জমি বুঝিয়ে দিতে না পাড়ায় জটিলতা বাড়ছে। এ লক্ষ্যে চীনা প্রতিষ্ঠান সেতুটির চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ করেছে। সড়ক অধিদফতর ইতোমেধ্য সেতুটির ‘প্রকল্প প্রস্তাব সারপত্রÑডিপিপি’ পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছে। যা ‘প্রি-একনেক’সহ ‘একনেক’এর চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সেতুটি নির্মাণে ২০১৫-এর ১১ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন এবং মহাসড়ক বিভাগের সচিব ও চীনা চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স-এর মধ্যে একটি ‘মিনিটস অব মিটিং বা এমওএম’ স্বাক্ষরিত হয়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ‘লেটার অব এক্সেঞ্জ’ও স্বাক্ষরিত হয়। চীনা প্রেসিডেন্টের বিগত ঢাকা সফরকালে এ লক্ষে সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা প্রদানের চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এক হাজার ৪৯৩মিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-চীন ৮ম মৈত্রী সেতুটি ২০১৯ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্নকরার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চূড়ান্ত নকশাও প্রণয়ন করেছে চীনা কারিগরি প্রতিষ্ঠান।
কঁচা নদীর ওপর মৈত্রী সেতুটি নির্মিত হলে দেশের তিনটি সমুদ্র বন্দরসহ চট্টগ্রাম-বরিশাল-খুলনা বিভাগের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বরিশাল ও খুলনার মধ্যে ১০৫কিলোমিটার সড়ক পথটিতে কোনো ফেরি পারপারের বিড়ম্বনা থাকবে না। চীনা আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় কঁচা নদীর ওপর অষ্টম বাংলাদেশÑচীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে চীন সরকার ৩শ’ মিলিয়ন ইউয়ান অনুদান প্রদানে সম্মত হয়েছে। সড়ক অধিদফতর সেতুটি নির্মাণের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে সম্ভব্যতা যাচাইও সম্পন্ন করে। চীনা কারিগরি প্রতিনিধি দলও সেতু এলাকায় জরিপ সম্পন্ন করে চূড়ান্ত নকশাও প্রণয়ন করেছে। সম্প্রতি চীন প্রেসিডেন্টের সফরকালে এ লক্ষ্যে চূড়ান্ত চুক্তিও স্বক্ষরিত হয়। তবে চীন সরকার মূল সেতুটি নির্মাণের অর্থ অনুদান হিসেব প্রদান করলেও প্রায় আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ তহবিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এক হাজার ৪৯৩মিটার দীর্ঘ চার লেনের এ সেতুটির মূল নদীর অংশ ৮৯২মিটার। সেতুটির সংযোগসড়ক থাকছে প্রায় দুই কিলোমিটার। বলেশ্বর নদীর ওপর ৬০ফুট উচ্চতার বেকুঠিয়া সেতুটির মূল অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে সমুদয় অর্থই চীন সরকার অনুদান হিসেবে প্রদান করছে
২০০২সালে ঐ সড়কের ঝালকাঠীর গাবখানে ‘বাংলাদেশÑচীন পঞ্চম মৈত্রী সেত’ুু উদ্বোধনকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বেকুঠিয়াতে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে সময় সড়ক অধিদফতর সেতু এলাকায় প্রাথমিক জরিপ ও সম্ভাব্যতা যাচাইও সম্পন্ন করে। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও ওই সেতুটি নির্র্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরে সেতুবিভাগ নতুন করে সম্ভাব্যতা যাচাই ও জরিপ সম্পন্ন করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করেছিল। তবে বহিঃসম্পদ বিভাগের জোড়াল পদক্ষেপের অভাবে দাতা না মেলায় বেকুঠিয়াতে সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় সে সময়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এসব বিষয়ে বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব জমি অধিগ্রহণের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।