পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড থেকে : ব্যাংকে মটগেজ রাখা ৩ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের দলিল জাল করে অভিনব কায়দায় একই জায়গা দিয়ে পুনরায় মোটা অংকের ব্যাংক লোন গ্রহণ ও আত্মসাতের চেষ্টা প- করে দিয়েছেন সীতাকু- ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রহুল আমিন। শুধু তাই নয়, উক্ত জাল দলিল সৃজনকারী চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছেন তিনি। ঘটনাটি এলাকার ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
সীতাকু- উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রহুল আমিন জানান, সীতাকু- সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের রেজিস্ট্রিকৃত ৫১৩০ নাম্বার দলিলের (ক্রমিক নং ৫১৫২) মূল মালিক মোঃ ইউনুস। এই দলিলের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২ একর ১৫ শতক। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বলে উল্লেখ রয়েছে। মালিক ইউনুস এই জমি একটি ব্যাংকের কাছে মটগেজ রেখে লোন নেন। লোন পরিশোধ না হওয়ায় জমির দলিলগুলি এখনো ব্যাংকের কাছে মটগেজ আছে। এদিকে দলিল ব্যাংকে রাখলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ফাঁকি দিয়ে জায়গাটি পুনরায় অন্য একটি ব্যাংকে মটগেজ দিয়ে টাকা আত্মসাতের কু-মতলবে সীতাকু- পৌরসদর বাজারের এক বেন্ডারের সাহায্যে দলিলটি জাল করেন মালিক নিজে! জাল দলিলে শুধু দলিল নম্বরটি ঠিক থাকলেও মালিকের নাম রয়েছে ওসমান গণি। যিনি সম্পর্কে ইউনুসের ভাগিনা বলে ইউনুস এসি ল্যান্ডকে জানিয়েছেন। ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর কমিশন রেজিস্ট্রি দেখানো দলিলটিতে ২৩৭, ৪৫৪৮, ৪৭৩৭, ৪৫২৪, ৪৫১৮, ৪৫৪০, ৪৫১৯, ৪৫৭২, ৪৫৩৯ ও ৪৫৪৪ দাগে দুই একর পনের শতক জায়গা ইউনুসের কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে ওসমান গণি মালিক হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। ভূয়া রেজিস্ট্রি দেখানোর পর নকল কাগজপত্র দিয়ে ইউনুস নিজেসহ উপস্থিত হয়ে জায়গাটি নকল মালিকের নামে নামজারি করিয়ে নেন। পরে নকল মালিক মোঃ ওসমান গণি ও আসল মালিক মোঃ ইউনুস প্রকাশ হাতকাটা ইউনুস অভিনব কায়দায় দলিলটি দেখিয়ে উক্ত সম্পত্তির বিপরীতে লোনের জন্য আবেদন করেন প্রিমিয়ার ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখায়। এদিকে জমিজমা নিয়ে নানান অপকর্ম ঘটতে থাকায় এবং সীতাকু-ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রহুল আমিন সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকে একটি চিঠি দিয়ে কোন কাগজপত্র সন্দেহজনক মনে হলে তার কাছে খতিয়ে নেবার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেই অনুরোধ মতই ওসমান গণির ৩ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের বিপরীতে লোনের আবেদনটি খতিয়ে দেখতে ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা সীতাকু- ভূমি অফিসে ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রহুল আমিনের সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের কাগজপত্র হাতে পেয়ে দলিলটি যাচাই করতে গেলে রহুল আমিন নিশ্চিত হন যে এই দলিলের প্রকৃত মালিক মোঃ ওসমান গণি নন। মালিক হলেন মোঃ ইউনুস প্রকাশ হাত কাটা ইউনুস। এরপরই ঘটনাটি নিয়ে ভূমি অফিস ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে তোলপাড় শুরু হয়। সীতাকু-ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রহুল আমিন প্রতিবেদককে বলেন, জনৈক ওসমান গণি কর্তৃক ব্যাংকে লোনের জন্য প্রদান করা জমিটি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমি দেখি এই দলিলের প্রকৃত মালিক তিনি নন। যাকে জমির দাতা দেখানো হয়েছে সেই মোঃ ইউনুসই হচ্ছেন মূল মালিক। স্বভাবতই একথা নিশ্চিত হবার পর প্রশ্ন জাগে তাহলে কেন তিনি নিজের অন্যের নামে লিখে ব্যাংকে জমা দিলেন ? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জমির আসল মালিক মোঃ ইউনুসকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জেলে পাঠানো বলে জানিয়ে দিলে। ইউনুস ম্যাজিস্ট্রেট রহুল আমিনের কাছে নিজ অপরাধ স্বীকার করে তাকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করেন।
এসময় ইউনুস বলেন, তার জমিটি আসলে অন্য একটি ব্যাংকে মটগেজ রেখে লোন নেওয়া হয়েছে। সেই লোন পরিশোধ না হওয়ায় মূল দলিল এখনো ব্যাংকে। তাই আবার টাকার দরকার হওয়ায় তিনি ওসমান গণিকে জমিটি বিক্রি করেছিলেন দেখিয়ে তার মাধ্যমে লোনের জন্য প্রিমিয়ার ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখায় আবেদন করেছিলেন। তবে আগে কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিলো তা বলতে চাননি ইউনুস। এরপর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য তদবির করতে থাকেন মোঃ ইউনুস। অভিযুক্ত ইউনুস উপজেলার বাড়বকু- এলাকার মৃত সিরাজুল হকের পুত্র। বর্তমানে তিনি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জোড়আমতল এলাকায় বসবাস করেন। ম্যাজিস্ট্রেট রহুল আমিন আরো বলেন, এটি একটি অভিনব প্রতারণা। এভাবে একটি ব্যাংকের সাথেও প্রতারণার মাধ্যমে বিরাট অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা হয়েছিল। তাই সামনে ওসিমান গণির নাম রাখলেও এর নেপথ্য গড ফাদার হচ্ছেন ইউনুস। তাই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।