পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : চট্টগ্রাম আদালতের এজলাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বরাবর চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির অনুমতিক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, এজলাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বার কাউন্সিল। নতুবা এরূপ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো যাবে না। আইনের শাসন ভেঙে পড়বে এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট (হাকিম) আদালতের এজলাস ভাঙচুরের ঘটনার পর সেখানে কর্মরত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) বদলির পরামর্শপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে বরাবর পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। প্রশাসনিক কারণে সিএমএম মো. শাহজাহান কবীরকে বদলি করে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে পদায়নের পরামর্শ দেয়া হয়। আর মৌলভীবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একিউএম নাসির উদ্দিনকে চট্টগ্রামের সিএমএম করার পরামর্শ দেয়া হয় বলেও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার কাউন্সিল ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছি। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের চিঠি হাতে পাওয়ার পর ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনুযারী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন।
এর আগে প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রী চট্টগ্রামের আইনজীবীদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেও যোগ দেননি।
১৯ জানুয়ারী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আদালতে ভাঙচুরের যে ঘটনা ঘটেছে, তা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ ঘটনা ন্যক্কারজনক। আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনাদের কাজ অপরাধীদের রক্ষা করা নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। এছাড়া ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের সৈয়দ আমিনুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন-হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ ও চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুসেইন মো. রেজা। কমিটির সদস্যরা সরেজমিন পরির্দশন করেন। এরপর কয়েকজনের নাম বেরিয়ে আসে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা আদালতের নথি ছুড়ে মারেন। আইনজীবী চন্দন বিশ্বাস, শাকিল, আউয়াল খান, টিআর খান, প্রদীপ দাশ, শিবলী, মাসুদ পারভেজ ও মুস্তাফিজসহ আরও কয়েকজন আদালত প্রাঙ্গণে সেøাগান ও বিচারকের নাম উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ আদালত কক্ষ, বিচারকের খাসকামরা ভাঙচুর করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি এজলাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবী ও তার স্ত্রীর জামিন ও রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুরের পর কোনো কারণ ছাড়াই চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কতিপয় আইনজীবী নজিরবিহীনভাবে অনাকাক্সিক্ষত পেশাগত অসদাচরণ করেন। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, আইনজীবীরা আইন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের কাছ থেকে কখনই এজলাস ভাঙচুর ও মামলার মূল্যবান নথি তছনছের যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা কখনই কাম্য নয়। নিঃসন্দেহে এহেন কর্মকা- নিন্দনীয় ও গুরুতর পেশাগত অসদাচরণের শামিল। এরূপ আচরণকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্প নেই। এমতাবস্থায় আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বার কাউন্সিল এ ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জানুয়ারি মানবপাচার আইনে করা একটি মামলায় গ্রেফতার হওয়া আইনজীবী জামাল হোসেন ও তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (এসিএমএম) শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া। জামিন না দেয়ায় আইনজীবীরা ওই হাকিম আদালতের এজলাসে ভাঙচুর, মামলার নথি তছনছ ও বিচারকের খাসকামরার বাইরের জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। এমনকি বিচারককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে চাপের মুখে চট্টগ্রামের সিএমএম আদালতের অন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট ওই জামিন আবেদনের শুনানি করেন এবং তাদের জামিন দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।