পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল চুক্তি বাতিল ও বিদ্যুৎ-গ্যাস সমস্যা সমাধানে ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি হরতাল পালন করছে। তবে নগরজীবনে এই হরতালের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। যদিও সরকারদলীয় সমর্থকরা শক্তি প্রর্দশনের মহড়া দেখাতে রাজধানীর শাহবাগ-যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে হরতালবিরোধী মিছিল-সমাবেশ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকায় এ হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
হরতালের সমর্থনে মিছিল করতে গিয়ে রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারগ্যাস, গরম পানি, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি বেনজীর আহত হন। আহতের মধ্যে লাকি আক্তার, উম্মে হাবিবা, রায়হান, ফারজানা, লাবনী ম-ল, কাকন বিশ্বাস, নাসিরউদ্দিন ঢামেক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
মিছিলে যোগ দেয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাজিদ বলেন, সরকার পেশীশক্তির মাধ্যমে সবকিছু করতে চায়। আমাদের ওপর সকাল থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ ৬ দফা হামলা করেছে। টিয়ার শেল, রাবার বুলেটে আমাদের নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছে। পুলিশি হামলার নিন্দা জানান। সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগে অবস্থান করতে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বামদল ও তাদের সমর্থক ছাত্রসংগঠনগুলোকে মিছিল করতে দেখা গেছে। এসব মিছিল থেকে হরতালের সমর্থনে নেতা-কর্মীরা লিফলেট বিতরণ করছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হরতালের সমর্থনে নগরীর পল্টন থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি কাকরাইল হয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এ হরতালে বিএনপি নৈতিক সমর্থন জানালেও তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সকাল ১০টায় যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্নার নেতৃত্বে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী হরতালবিরোধী শোডাউন দিয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-৪৮নং ওয়ার্ড কমিশনার আবুল কালাম অনু, সভাপতি গিয়াস উদ্দিন গেসু, আলী হোসেন রানা, মো. বোরহান, সাইদ মিলনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলটি হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে উত্তর যাত্রাবাড়ীতে গিয়ে সমবেশে মিলিত হয়। এর আগে বিভিন্ন রাস্তাা প্রদক্ষিণ করে। হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-হারুনর রশীদ মুন্না। তিনি বলেন,
একাত্তরে যারা দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, এখনো তারা দেশের বিরুদ্ধে লড়ছে। এখনো তারা হাঙ্গামা তৈরি করার ষড়যন্ত্র করে। তার প্রমাণ আজকের এই হরতাল।
এদিকে, এলাকায় জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক দেখা গেছে। সায়েদাবাদ থেকে আশপাশের জেলায় বাস চলাচল করছে। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন গন্তব্যেও বাস চলাচল করছে।
জনজীবন স্বাভাবিক : সকাল থেকেই নগরীর যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। রাস্তায় প্রচুর প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা গেছে। অফিসমুখী মানুষের ভিড়ও রয়েছে অন্য স্বাভাবিক দিনের মতোই। ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচলে কোনো বিঘœ ঘটেনি। স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন সার্ভিসও।
তবে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে প্রচুরসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশকে এসব স্থানে কড়া প্রহরায় অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ আনিছুর রহমান জানান, হরতালে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমরা রাস্তায় অবস্থান করছি।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পকে ‘সর্বনাশা’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে ১২ হাজার টনের কয়লার জাহাজ যাতায়াত করবে। এই প্রকল্পে প্রতি বছর অন্তত ৪৭ লাখ টন কয়লা পোড়ানো হবে। এর ফলে পানি, বায়ু ও মাটি ভয়াবহ দূষণের শিকার হবে। এতে পর্যায়ক্রমে এ অঞ্চলের ৪০ লক্ষাধিক মানুষ তাদের জীবিকা হারাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫ কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদ অরক্ষিত হয়ে পড়বে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশ-বিদেশের সচেতন মানুষ, ইউনেস্কোর উদ্বেগ-বিরোধিতা আগ্রাহ্য করে মহাজোট সরকার ভারতের এনটিপিসিসহ দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থে রামপাল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে বলেও তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। না বুঝেই এ প্রকল্পের বিরোধিতা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।