Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশায় বুক বেঁধে আছি শীঘ্রই প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচিত হবে

| প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সংবাদ সম্মেলনে পরিবার
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা : সুন্দরগঞ্জের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ২৫ দিন পরও তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। এই নৃশংস হত্যাকা-ের কুশীলবরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এমপি লিটন হত্যাকা-ের প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এমপি লিটনের বড় বোন আফরুজা বারী লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, লিটন আওয়ামী লীগের একজন অকুতোভয় কর্মী ছিলেন। সুন্দরগঞ্জ এলাকায় তিনি সততা, নিষ্ঠা, উন্নয়ন, শান্তি ও প্রগতির ঝা-া উড়িয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সময়ে লিটন তার সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে সুন্দরগঞ্জের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা এমপি লিটনকে হত্যার মাধ্যমে এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে।
আফরুজা বারী আরো উল্লেখ করেন, খুনিরা লিটনকে হত্যার জন্য নিরাপদ জায়গা হিসেবে তার নিজ বাড়িকেই বেছে নেয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তার বাড়িটিই খুনিদের কাছে নিরাপদ বিবেচিত হলো কেন? কিভাবে খুনিরা পরিচয় না দিয়েই ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেল? তাছাড়া লিটনের অতন্দ্র প্রহরী জার্মান শেফার্ড কুকুর দুটো ওই সময়ে কোথায় ছিল? কেন গিয়েছিল? দুর্বৃত্তরা রিভলবারের ৫টি গুলি করার পরও কেন তার নিকটজনরা লিটনের কাছে এলো না? লিটন গুলিবিদ্ধ হবার পর কাউকে কাছে না পেয়ে নিজেকেই দৌড়ে বাড়ির ভেতরে আঙ্গিনার দিকে ছুটে যেতে হলো? তিনি আরো প্রশ্ন রাখেন, কেন লিটনের ঘনিষ্ঠজন, দলীয় নিবেদিত নেতাকর্মী এবং পরীক্ষিত সহযোদ্ধারা কেউই তার পাশে ছিল না, তাদের কি দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল?
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনও হতাশ নই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হত্যাকা-ের বিষয়টি দেখছেন। যারা তদন্ত করছে বা অন্য কাউকে দিয়ে তদন্ত করতে হবে তিনিই সেটি ঠিক করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি। শীঘ্রই প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি।
এমপি লিটনের শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদি ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বলেন, এ মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, তা দেখতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যেরে মধ্যে বক্তব্য রাখেন এমপি লিটনের মামলার বাদি ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী, চাচাতো ভাই তৌফিকুর রহমান আইনী মুকুট, ফুফাতো ভাই আনিসুর রহমান, ভাগ্নি মেহের নিগার মমি, চাচাতো বোন শিবলী আকতার।  
ইউপি মেম্বার ৩ দিনের রিমান্ডে
এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় গ্রেফতার সর্বানন্দ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার রেজাউল ইসলাম লিটন ওরফে ডিস লিটনের (৩৫) ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল (বুধবার) দুপুরে গাইবান্ধা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল হাসান ইউসুফ তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানায়, ২৩ জানুয়ারি ভোরে পার্শ্ববর্তী ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন থেকে ডিস লিটনকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ২৪ জানুয়ারি তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে বিচারক বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেন। রেজাউল ইসলাম লিটন একজন ক্যাবল (ডিস) ব্যবসায়ী। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্র কদমতলা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে।
মিসকিন মুকুল ও সাইফুলকে জেলহাজতে প্রেরণ
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ইমামগঞ্জ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও তারাপুর ইউনিয়নের চৈতন্যবাজার গ্রামের ডি এম মাসুদার রহমান মুকুল ওরফে মিসকিন মুকুল ওরফে ছোট এমপি (৪৪) ও শিবির ক্যাডার সাইফুল ইসলামের (২৫) তিন দিনের রিমান্ড গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মিসকিন মুকুল মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানার পলাতক আসামি জামায়াতের সাবেক জেলা আমির সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজের একান্ত সচিব (পিএস) ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ