Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রংপুর ও বগুড়ায় ৭ জনের মৃত্যুদন্ড

| প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : গতকাল রংপুরের পীরগাছায় স্টুডিও ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম চুন্নু হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদ- ও বগুড়ায় স্কুলছাত্র হত্যার দায়ে ২ জনের মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। এছাড়া লক্ষ্মীপুরে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে।
স্টুডিও মালিক হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদ-াদেশ
রংপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, রংপুরের পীরগাছায় স্টুডিও ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম চুন্নু হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
গতকাল বুধবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান এ রায় দেন। দ-াদেশপ্রাপ্তদের মধ্যে ১ জন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক আছেন।
রংপুর জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি ফারুখ মোঃ রেয়াজুল করিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রংপুরের পীরগাছা উপজেলা সদরের শহিদুল ইসলাম চুন্নুর দিনা নামের একটি ফটো স্টুডিও ছিল। ২০১২ সালের ২৩ আগস্ট রাতে একই এলাকার আসামি জুয়েল চুন্নুকে মোবাইল ফোনে ডাকলে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে তার দোকানের দিকে যান।
রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় তার স্ত্রী নার্গিস বেগম স্বামী চুন্নুর মোবাইলে ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পায়। এ ঘটনায় পরের দিন সকালে পীরগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন তিনি।
২৪ আগস্ট পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার নীলাকুঠি এলাকায় রাস্তার ধারে গলাকাটা অজ্ঞাত লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। খবর পেয়ে নিহত চুন্নুর স্বজনরা মর্গে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করে। পরে নিহত চুন্নুর বড় ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামি জুয়েল ও শাহীন নিহত চুন্নুর মোটরসাইকেল বগুড়ায় বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। জুয়েল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চুন্নুকে গলা কেটে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।
তদন্ত শেষে পুলিশ ৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলে বিজ্ঞ আদালত ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আসামী সিরাজুল ইসলাম, জুয়েল, শাহীন, সুজন, আলম ওরফে আসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকরের আদেশ দেন।
দ-াদেশ প্রাপ্ত ৫ আসামীর মধ্যে সিরাজুল ইসলাম রায়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। আর বাকি আসামি জুয়েল, শাহীন, সুজন, আলম ওরফে আসলাম পলাতক রয়েছেন। তারা গ্রেফতার হলে তাদের রায় কার্যকর হবে।
বগুড়ায় ২ জনের ফাঁসির আদেশ
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় স্কুল ছাত্র নাঈমুল ইসলাম নাঈম (১৩) হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসি এবং প্রত্যককে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অপর একজনের ৭ বছর সশ্রম কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান এ রায় প্রদান করেন।
ফাঁসির দ-প্রাপ্তরা হলো, কাহালু উপজেলার উলট পূর্বপাড়ার আব্দুল মান্নানের ছেলে জাকারিয়া (২৭), একই এলাকার আলীমুদ্দীনের ছেলে ডালিম (২৩) এবং ৭ বছর কারাদ-প্রাপ্ত হলো একই এলাকার আহম্মেদ আলী সরকারের ছেলে আব্দুল মতিন ওরফে মতি (৩২)। জরিমানা অনাদায়ে ৩ জনের প্রত্যককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত দু’জন জাকারিয়া ও ডালিম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কাহালু উপজেলার রুস্তমচাপড় এলাকার রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে ৭ম শ্রেণীর ছাত্র নাঈমুল ইসলাম নাঈমকে মুক্তিপণের দাবিতে গত ২০১২ সালের ৫ এপ্রিলে অপহরণ করে। পরেরদিন শ্বাসরোধে হত্যার পর  ইটভাটায় পুড়িয়ে লাশ গুম করা হয়। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামী করে নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম তালুকদার বাদী হয়ে কাহালু থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার এস আই আনোয়ার হোসেন ১০ জনের মধ্যে ৪ জনকে বাদ দিয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন ২০১২ সালে ১১ ডিসেম্বরে আদালতে দাখিল করেন। আদালত দীর্ঘদিন শুনানী শেষে বহুল আলোচিত হত্যা মামলার রায় বুধবার ঘোষণা করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি এ্যাড. নাসিমুল করিম হলি জানান, এ হত্যা মামলায় ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আসামী আব্দুল মতিন ওরফে মতির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়। তবে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুই আসামী জাকারিয়া ও ডালিম পলাতক রয়েছে। মামলার আসামী শাকিল মোল্লা বয়স কম হওয়ায় নারী ও শিশু আদালতে তার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বাকী দুই আসামী আসাদুজ্জামান ওরফে জামান ও আনিছার রহমান উচ্চ আদালতে আবেদন করায় মহামান্য আদালত তাদের বিচারকার্য স্থগিত করে দিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুরে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে ওসমান ও তাসলিমাসহ দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। বুধবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. একেএম আবুল কাশেম এই রায় দেন।
একই সময় আদালতের বিচারক আসামী ওসমানকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছর এবং তাসলিমাকে ২৫ হাজার টাকা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদ- দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার করাপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের ২০০৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে ফেরদৌসি বেগমকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ