পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : সিলেটের শাহ আরেফিন টিলায় ৬ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাথর উত্তোলনের সময় ২৩ জানুয়ারি এসব পাথর শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে। ঘটনার পর থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনের নির্দেশে শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এখানে টিলা কাটায় রয়েছেন প্রায় ১০ সহস্রাধিক দিনমজুর। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের জন্যে টিলা খুঁড়তে গিয়ে মাটি চাপায় প্রতিনিয়ত অসংখ্য দিনমজুর মারা যাচ্ছে। কিন্তু এসব নিহত ব্যক্তিদের খোঁজ রাখছে না কেউ। প্রভাবশালী পাথর উত্তোলনকারীরা প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে লাশ গুমসহ ঘটনাগুলো ধামাচাপা দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে টিলায় পাথর উত্তোলনে জড়িত রয়েছে এলাকার একাধিক টিলা খোকো প্রভাবশালী। ২৩ জানয়ারি পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মনফর আলীর পুত্র মঞ্জু মিয়ার পাথর উত্তোলনকালে ৬ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। দৈনিক ৪শ’ টাকা বেতনে এরা পাথর উত্তোলন করতো বলে জানা গেছে। নিহতরা হলেন- পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন জানান, শাহ আরেফিন টিলায় পাথর উত্তোনের সময় মাটি চাপায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন- সুনামগঞ্জের আল-আমিন, আল হাদি, খোকন মিয়া, আব্দুল কাদির ও নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার তাহের ও আশিক। এ ছাড়া রফিক নামের আরো একজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, শাহ আরেফিন টিলার পাথর খেকোচক্রের টাকার ভাগ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্বশীলসহ সাংবাদিক পরিচয়ধারীরাও পেয়ে থাকেন। ফলে রহস্যজনক কারণে টিলা কাটা বন্ধে আইনী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
গতকাল স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, হযরত শাহ আরেফিন ওরফে শাহপিন শাহ টিলা নামে পরিচিত টিলার পাথর খেকোরা হচ্ছে- ২০/২৫টি সংঘবদ্ধচক্র। এদের মধ্যে বশর মিয়া, আনজু মিয়া, সোহরাব হোসেন, আব্দুল আউয়াল, আব্দুল করিম, রশিদ মিয়া, তেরাব আলী, কনাই মিয়া, আনাই মিয়া, আখদ্দুছ আলী, হারিছ আলী, হামজা, ফারুক আহমদ, শানুর মিয়া, কাহার আলম, আবদুর নুরসহ অনেকের নেতৃত্বে রাস্তায় চেয়ার টেবিল বসিয়ে আইয়ুব আলীর ছেলে ইসমাইল ও তার সহোদর আবদুল লতিফ ওরফে বিরাই, আবদুল গফুরের ছেলে লালু মিয়া, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে আবদুল মন্নান ও তার সহোদর, আবদুল হান্নানসহ অন্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে নদীর তীর ও পাহাড়ি সোনাই নদীর তলদেশে লালমাটি ফেলে ভরাটের জন্য প্রতি ট্রাক থেকে ২শ’ টাকা করে গড়ে প্রতিদিন ৩শ’ ট্রাক থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে যাচ্ছেন। এতে সরকারের সাড়ে ১০ কোটি টাকার রাবার ড্যাম প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। ঘটনার পর পরই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম বিল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এর আগে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে (২০১৪ সালের ২৫ জুলাই) আনসার সদস্যদের গুলিতে প্রাণহারায় জহুর আহমদ (৪০), ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি পাথর কোয়ারিতে মাটিচাপা পড়ে মারা যান সালেহ আহমদ (২০)। একই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মাটিচাপায় মারা যান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ীর এতিম হোসেনের ছেলে মইন (৪০), একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে দানা মিয়া (৪২), শাহজালালের ছেলে দেলোয়ার (২৪) ও ছিদ্দিক আলীর ছেলে এমদাদুল হক সেলিম (৪২), সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুরের অরিন্দ্র দাসের ছেলে চন্দন (৩০)। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ছাতকের মুনসিফ আলী (১৮) মারা যান।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আক্তার জানান, পাথর উত্তোলনের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পর সরকার পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখেছে। কিন্তু এরপরও অব্যাহতভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি পরিষ্কার। এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন অত্যন্ত ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ‘বিপজ্জনক’। পাশাপাশি এসব গর্তের পাশে শ্রমিকরা ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করেন। অনেক ক্ষেত্রে এসব ঝুপড়ি ঘর ভেঙে নিচে দেবে যায় এবং শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল ও এলাকাবাসী ছয়জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও পুলিশ জানিয়েছে এ ঘটনায় দু’জন নিহত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।