পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : অনিয়ম ও আইন বহির্ভূতভাবে বেশ কয়েকবার শেয়ার অবকাঠামো পরিবর্তন করায় লিংক থ্রি টেকনোলজিসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। এই কাজের জন্য এর আগে ন্যাশনওয়াইড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে কমিশন। কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় কমিশনের সর্বশেষ সভায় লিংক থ্রিকে জরিমানার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একইসাথে ভবিষ্যতে কমিশন বা সরকারের অনুমোদন ব্যতীরেকে শেয়ার কাঠামো পরিবর্তন না করার জন্যও সতর্ক করে দেয়া হয়।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, আইএসপি লাইসেন্সধারী লিংক থ্রি টেকনোলজিস প্রতিষ্ঠানটি কমিশন বা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই আইন বহির্ভূতভাবে পেইড-আপ ক্যাপিটাল তিনবার ও অথোরাইজড শেয়ার ক্যাপিটাল একবার বৃদ্ধি করেছে। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর এবং এর ফলে শেয়ারহোল্ডারের সংখ্যা দুই জন থেকে সাত জন করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডার আবু সায়ীদ মজুমদারের সম্পূর্ণ শেয়ার ইনতেখাব আহমেদ চৌধুরীর নামে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যদিও কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মূলধনে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১-এর ৩৭(২)(ঝ) এর বিধানে বলা হয়েছে, লাইসেন্সধারী কোনো কোম্পানি, সমিতি বা অংশীদারী কারবারের শেয়ার মূলধনে বা মালিকানায় এমন কোনো পরিবর্তন যার ফলে লাইসেন্স দ্বারা অনুমোদিত কাজ-কর্মের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরিত হয়, অথবা অন্য কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে একীভূত হলে অবশ্যই কমিশনের পূর্বানুমতি নিতে হবে। পূর্বানুমতি গ্রহণের কমিশনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে সরকার বিবেচনা করবে যে, প্রস্তাবিত পরিবর্তন বা একীভূতকরণের ফলে যে ব্যক্তি, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের নিয়ন্ত্রণ লাভ করবে, সেই ব্যক্তি, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান ওই লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য কি না এবং অনুমতি প্রদানের ফলে লাইসেন্সকৃত কাজ-কর্ম ব্যহত হবে কি না তা কমিশন বিবেচনা করবে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, লিংক থ্রি টেকনোলজিস ২০০০ সালের ২০ মে যুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হয়। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির দু’জন শেয়ার হোল্ডার ছিলেন চেয়ারম্যান শেখ রায়হান আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদ হায়দার পাশা। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি তাদের কোম্পানির পেইড আপ ক্যাপিটাল তিন কোটি আট লাখ টাকা বৃদ্ধি করে। ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি তাদের অথোরাইজড শেয়ার ক্যাপিটাল ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। এর কিছুদিন পরেই ৩০ এপ্রিল পুনরায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ক্যাপিটাল এক কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং ৮ মে চার কোটি ৮১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে। একই বছরের ৩০ মে ব্যবসা সম্প্রসারণের কারণে প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর করা হয় এবং পাবলিক লিমিটেডের বিধান অনুযায়ি দুইজন শেয়ারহোল্ডার থেকে সাতজনে বর্ধিত করা হয়। পরবর্তীতে আরো ২৩ কোটি ১৮ লাখ ছয় হাজার টাকা বৃদ্ধি করে। ২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আবু সায়ীদ মজুমদার তার সম্পূর্ণ শেয়ার ইন্তেখাব আহমেদ চৌধুরীর নিকট হস্তান্তর করে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ৯৮০ কোটি টাকার স্টক ডিভিডেন্ট ইস্যু করে লিংক থ্রি তাদের পেইড আপ ক্যাপিটাল পুনরায় বৃদ্ধি করে। সরকারের অনুমোদন ব্যতিরেকে আইন বহির্ভূত কাজ করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান এবং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কেন প্রশাসনিক জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এসব অনিয়ম ও আইন বহির্ভূত কাজের ব্যাখ্যা দিতে ৩০ দিনের সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে বিটিআরসি। অন্যত্থায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ২০০তম কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায়। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ি শোকজ নোটিশ প্রদান এবং এর প্রেক্ষিতে জবাবও দিয়েছে লিংক থ্রি। তবে আইএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কাঠামো পরিবর্তন বিষয়ে দেয়া জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজের বিষয়েও সতর্ক করে দয়া হয়। জানতে চাইলে লিংক থ্রি’র চিফ টেকনিক্যাল অফিসার রাশেদ আমিন বলেন, জরিমানার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি তাদের কাছে গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত পৌঁছায়নি। তবে কোম্পানির শেয়ার কাঠামোর পরিবর্তন বিষয়ে তিনি বলেন, ক্যাপিটাল ও শেয়ার বৃদ্ধি, প্রাইভেট কোম্পানি থেকে পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তর এবং শেয়ার হস্তান্তর করলে কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয় এই বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। এটি করার পরই আমরা জানতে পারি, সাথে সাথেই বিটিআরসিতে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ন্যাশনওয়াইড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ডাটা এডজ লিমিটেড কমিশনের অনুমোদন ব্যতীরেকে শেয়ার অবকাঠামো পরিবর্তন, শেয়ার মূলধন বৃদ্ধি এবং পরিচালক পর্ষদের পরিবর্তন করায় প্রশাসনিক জরিমানা করা হয়। ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর কমিশনের ১৯২তম সভায় প্রতিষ্ঠানটিকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনুমোদন ছাড়াই একাধিকবার শেয়ার হস্তান্তর করায় কমিশনের ১৯৭তম সভায় সেন্ট্রাল জোন আইএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান মিরাই কোম্পানিকে শোকজ এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।