পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংসদে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল তা-ব ও সন্ত্রাসী জনগণকে সঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এমপি লিটন। গতকাল রোববার অধিবেশন শুরুর পরপরই স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তবাটি সংসদে উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। এরপর রেওয়াজ অনুযায়ী মূলতবি রাখা হয় সংসদের অধিবেশন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকেও তার এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি। এটাই হয়তো ছিল এমপি লিটনের বড় অপরাধ। এলাকার মানুষের শান্তি ও স্বস্তি নিশ্চিত করেছিল বলেই হয়তো তাকে এভাবে অকালে জীবন দিতে হলো। এ হত্যাকা- অবশ্যই মেনে নেয়া যায় না। আমরা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেভাবে কঠোর অবস্থা নিয়েছি, তেমনিভাবেই লিটন হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জাতীয় সংসদে। এদিকে এমপি লিটনের শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপিরা মরহুমের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তার রূহের মাগফিরাত কামনা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি জানানোর পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তার দাবি তুলেন। ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আসম ফিরোজসহ সব এমপিই অধিবেশনে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। জবাবে প্রধানমন্ত্রীও তার বক্তৃতায় এমপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এমপিদের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয় সেই ব্যবস্থা করা হবে। এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে এটাই আমরা চাই। লিটন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই ধরা হবে এবং শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে বিএনপি জামায়াত কত মানুষকে যে হত্যা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। লিটন এমন একটি এলাকা থেকে নির্বাচিত যে এলাকাটি সন্ত্রাসীদের আখড়া, জামায়াত শিবিরের আখড়া। ২০১৩ সালে ওই এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। দেড় থেকে দুই শতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ঘরবাড়ি দোকানপাট পুড়িয়ে তা-ব চালানো হয়েছে। উপজেলার একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এরপর দুইজন পুলিশ হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালে বিএনপি জামায়াত মিলে শত শত স্কুল পুড়িয়ে দেয়। জামায়াত সেখানে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল। এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লিটন রুখে দাঁড়িয়েছিল। সেখানকার মানুষের জীবনে লিটন শান্তি ফিরে এনেছিল। এই এলাকার মানুষের জীবনে স্বস্তি এনেছিল। এটিই তার কাল হয়েছে। সৌরভকে লিটন গুলি করেনি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কেন একজন শিশুকে গুলি করতে যাবেন? আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি। এর প্রতিশোধ নিতেই বিএনপি-জামায়াত লিটনকে হত্যা করেছে।
একই জেলার এমপি ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, স্বাভাবিক মৃত্যু তার হয়নি। তাকে গুলি করে পাখির মতো হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, লিটন কোনো শিশুকে গুলি করেনি। ওইসময় আমরা মিডিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিলাম। লিটন সেই সময় আত্মরক্ষার জন্য গুলি করেছিলেন। কিন্তু শিশু সৌরভের পায়ে লাগে। কি পরিকল্পনায় তাকে হত্যা করা হয়েছিল আমরা তার সঠিক তদন্ত চাই।
চিফ হুইপ আসম ফিরোজ বলেন, যাকে নিয়ে আলোচনা করছি তাকে কিন্তু এই সংসদে অনেকেই চেনেন না। কারণ তিনি নিরবে সংসদে আসতেন, নিরবে বাসায় চলে যেতেন। তার বাসায় পুলিশী পাহারা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কথা বলে পুলিশ তুলে নেয়া হলো। তার অস্ত্র ছিল। কিন্তু সেটাও সিজ করে নেয়া হয়েছে। তাই এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র। এসময় এমপিদের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
হুইপ মাহবুব আরা গিনি বলেন, লিটনকে আমরা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারিনি। তাকে একজন এমপি হওয়া সত্ত্বেও শিশুকে গুলি করার অপরাধে অন্তবর্তীনকালীন জামিন নিতে হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সেদিন আমরা সবাই হতবাক হয়েছিলাম। স্তম্ভিত হয়ে ছিলাম। লিটন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। জামায়াতের নেতাকে মিটিং করার জন্য তিনি ওই এলাকায় ঢুকতে দেননি। এ জন্য তাকে হত্যা করা হতে পারে। আমাদের চৌকস পুলিশ বাহিনী সেখানে কাজ করছে। এই হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের অবশ্যই ধরে বিচার করা হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এই হত্যার মূল নায়ক জায়ামাত শিবির আর বিএনপি। আর এক নম্বর আসামি বেগম খালেদা জিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অবিলম্বে চিরুনি অভিযান চালান। হত্যাকারীদের ধরুন।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শামীম ওসমান ও জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।