পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দি নিউইয়র্ক টাইমস : যুক্তরাষ্ট্রের নয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শনিবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম দিনটিকে সংবাদ মাধ্যমের উপর তিক্ত আক্রমণ চালানোর কাজে ব্যবহার করেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে তার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে বিরোধ আবিষ্কার ও তার অভিষেক অনুষ্ঠানে আগত জনতার সংখ্যা ইচ্ছাকৃতভাবে কম বলার মিথ্যা অভিযোগ আনেন।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিআইএতে তার সফরের উদ্দেশ্য ছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি তার সমর্থন প্রদর্শন। এর মধ্যে দিয়ে ট্রাম্প গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমালোচনা করে তার বারংবার দেয়া প্রকাশ্য বক্তব্যকেই উপেক্ষা করলেন। এক সপ্তাহ আগেও তিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নাজিদের সাথে তুলনা করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বিশে^র সবচেয়ে অসৎ মানুষ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, তার অভিষেকে ১৫ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। তবে তার দাবি সমবেত মানুষের তোলা ছবি দ্বারা সমর্থিত হয়নি।
পরে হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেস সেক্রেটারি সীন স্পাইসারকে পশ্চিম শাখার ব্রিফিং কক্ষে পাঠান। স্পাইসার সাংবাদিকদের তিরস্কার করেন ও এক গাদা মিথ্যা কথা বলেন।
স্পাইসার বলেন, সংবাদ সংস্থাগুলো শুক্রবার ট্রাম্পের অভিষেকে উপস্থিত জনতার সংখ্যা সম্পর্কে ভুল কথা বলেছে। তিনি বলেন, ট্রাম্প যখন দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন তখন এটা হচ্ছে বিভক্তির বীজ বপণের চেষ্টা। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নয়া প্রশাসনের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।
শনিবার লাখ লাখ লোক যখন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল সে সময়ই নয়া প্রেসিডেন্ট ও তার মুখপাত্রের কাছ থেকে এই বক্তব্য এল। আগের দিন ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে বহু সংখ্যক প্রতিবাদকারীও হাজির ছিল। তাদের বাদ দিলে সমাবেশে ট্রাম্পের সমর্থকদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কথা। একজন প্রেসিডেন্টের মেয়াদের শুরুতেই আক্রমণাত্মক ও অসন্তোষের লক্ষ্যণীয় নিদর্শন এবং তা তখনি যখন হোয়াইট কাউস জাতীয় ঐক্য রচনা ও নয়া নেতার প্রতি আস্থা সৃষ্টির জন্য কাজ করছে।
শনিবার হতে পারত ভার্জিনিয়ার ল্যাংলিতে সিআইএ সদর দফতরে উপস্থিতির মধ্য দিয়ে গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সাথে ট্রাম্পের বিরোধ মিটানোর দিন। প্রেসিডেন্ট তার ১৫ মিনিটের বক্তৃতায় তার সংবাদ পরিবেশনার জন্য অভিযোগ ও দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমালোচনায় ব্যয় করেন। তিনি অন্যান্য বিষয়েও কথা বলেন যেমন, তার অভিষেকে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা, তার রাজনৈতিক সমর্থনের মাত্রা, তার মানসিক বয়স ও তার বুদ্ধিবৃত্তিক ওজন।
ট্রাম্প লবিতে তার বক্তব্য শুনতে জড়ো হওয়া প্রায় ৩শ’ কর্মচারীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই যে আমি আপনাদের পিছনে আছি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে রাশিয়া তার পক্ষে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। ট্রাম্পের ব্যাপারে অসমর্থিত দাবি সম্বলিত একটি ডোশিয়ের প্রকাশের পর তিনি তা ফাঁসের অনুমতি দেয়ার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দায়ী করেন এবং টুইটারে লেখেন যে আমরা কি নাজি জার্মানিতে বাস করছি?
শনিবার তিনি বলেন, তিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজের পূর্ণ সমর্থক ননÑ এ রকম কোনো বক্তব্যের জন্য সাংবাদিকরা দায়ী। ট্রাম্প বলেন, মিডিয়ার সাথে আমার লড়াই চলমান। তারা পৃথিবীর সবচেয়ে অসৎ মানুষ। তারা এ রকম কথা বলতে চায় যে গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সাথে আমার বিরোধ রয়েছে।
ট্রাম্প তার অভিষেকে যোগদানকারীদের সংখ্যা নিয়ে সংবাদপত্রগুলো রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে তার অভিষেকে লোক সমাগম হয়নি এটা বোঝাতে সংবাদ মাধ্যম একটি ফাঁকা মাঠের কিছু ছবি ব্যবহা করেছে। ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, তারা এর জন্য বড় মূল্য দিতে যাচ্ছে।
স্পাইসার বলেন, ট্রাম্পের অভিষেকে এ যাবতকালের বৃহত্তম জনসমাগম হয়েছিল। তার বক্তব্য জনসমাগমের ছবি থেকে স্পষ্টভাবে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, অভিষেক অনুষ্ঠানের ছবিগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে ন্যাশনাল মলে সমবেত অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি কম করে দেখানো হয়েছে। স্পাইসার তার উভয় বক্তব্যের সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেখাননি।
২০০৯ সালে বারাক ওবামার অভিষেক ও ট্রাম্পের অভিষেকের ছবি থেকে পরিষ্কার দেখা যায় যে শুক্রবারের অভিষেকে জনতার সংখ্যা যথেষ্ট কম ছিল। স্পাইসার এই অসমতার জন্য নতুন হোয়াইট গ্রাউন্ড কাভারিংকে দায়ী করেন।
স্পাইসার বলেন, অভিষেকের ঔৎসুক্যকে মøান করার এ চেষ্টা লজ্জাকর ও ভুল। তিনি শুক্রবার এক সাংবাদিককে ভুল রিপোর্টিংয়ের জন্য সতর্ক করে দেন যিনি বলেন যে ট্রাম্প ওভাল অফিস থেকে রেভারেন্ড ড. মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র-এর আবক্ষ মূর্তি অপসারণ করেছেন। তবে দ্রুতই এ খবরকে গুরুতর ভুল বলে আখ্যায়িত করা হয়।
২০১৩ সালে ওবামার অভিষেকের দিনের চেয়ে শুক্রবার দিন সাবওয়ে ব্যবস্থায় আরোহীদের সংখ্যা বেশী ছিল বলে স্পাইসারের দাবি ভুল। ওয়াশিংটন এলাকার ট্রানজিট কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, সে বছর আরোহীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৮২ হাজার, পক্ষান্তরে এ বছর সে সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭১ হাজার।
স্পাইসার আরো বলেন, এ বছর ন্যাশনাল মলের অধিকতর নিচের দিক পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করার কারণে লাখ লাখ লোক অভিষেক অনুষ্ঠান দেখতে পারেনি। কিন্তু সিক্রেট সার্ভিস বলে, এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। দীর্ঘ লাইন বা বিলম্বের রিপোর্ট ছিল খুব অল্প।
তার চিন্তার সাথে পরিচিত কিছু লোকের মতে, শুক্রবার অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার সংখ্যার ব্যাপারে ট্রাম্প ক্রমশ ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন।
শনিবার ট্রাম্প তার উপদেষ্টাদের বলেন যে তিনি অসৎ মিডিয়া কভারেজের শক্ত জবাব দিতে চেয়েছিলেন বিশেষ করে নিউইয়র্ক পোস্টের এক সাংবাদিকের টুইটার পোস্টের যিনি শুক্রবার ট্রাম্পের অভিষেক ও ২০০৯ সালে ওবামার অভিষেকের দিনের ছবি পাশাপাশি প্রদর্শন করেন। কিন্তু তার উপদেষ্টাদের অধিকাংশই প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ কার্যদিবসের সময় অফিসের দায়িত্ব পালন করার আবেদন জানান।
সিআইএ সদর দফতরে বক্তৃতায় তার বক্তব্যের বেশিরভাগই ছিল সংবাদ মাধ্যমের উপর তার আক্রমণ। স্পাইসার দিনের পরের দিকে হোয়াইট হাউসে ব্রিফিং রুমে থিমটি গ্রহণ করেন।
সিআইএ সদর দফতরে ট্রাম্পের উপস্থিতি বিষয়ে বর্তমান ও সাবেক কিছু গোয়েন্দা কর্মকর্তা প্রচ- প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
শুক্রবার পদত্যাগকারী সিআইএর সাবেক পরিচালক জন ও. ব্রেনানের চিফ অব স্টাফ নিক শাপিরো বলেন, সংস্থার বীরদের সিআইএ মেমোরিয়াল হলের সামনে ট্রাম্পের আত্মপ্রচারমূলক ঘৃন্য প্রদর্শনী ব্রেনানকে ভীষণভাবে মর্মাহত ও ক্রুদ্ধ করেছে। শাপিরো বলেন, ট্রাম্পের নিজের সম্পর্কে লজ্জিত হওয়া উচিত।
হাউজ ইন্টেলিজেন্স কমিটির বিশিষ্ট ডেমোক্র্যাট ক্যালিফোর্নিয়ার রিপ্রেজেন্টেটিভ এডাম বি. শিফ বলেন যে তার অত্যন্ত আশা ছিল যে ট্রাম্পের এ পরিদর্শন প্রেসিডেন্ট ও গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষত উপশমের পদক্ষেপের সূচনা করবে। কিন্তু ট্রাম্পের বাঁকা মন্তব্য তা বিনষ্ট করে দিয়েছে।
শিফ বলেন, দেশের সেবায় যে সব সিআইএ সদস্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতিনিধিত্বকারী তারকার সামনে দাঁড়িয়ে থাকাকালে ট্রাম্প তাদের সেবা ও আত্মত্যাগের ভাসা ভাসা স্বীকৃতির চেয়ে সামান্য বেশী কিছু দিয়েছেন। সিআইএকে প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার না করে তার আরো বেশী কিছু করা প্রয়োজন যদি তিনি বিশে^র সেরা গোয়েন্দা সংস্থার নারী ও পুরুষদের সম্মান অর্জন করতে চান।
পরিদর্শনের সময় ট্রাম্প সাদ্দাম হোসেনের কাছে ব্যাপক গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলা লোকদের মত সিআইএ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সম্পর্কে কিভাবে উপহাসমূলক মন্তব্য করেছিলেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
তিনি এ কথাও বলেননি তিনি কিভাবে প্রেসিডেন্টের জন্য তৈরি করা প্রাত্যহিক গোয়েন্দা ব্রিফ গ্রহণ করবেন। সিআইএ প্রেসিডেন্টকে তাদের প্রধান দর্শক হিসেবে দেখে। তার দৈনিক ব্রিফিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নাকচ করা সে সব লোকদের মনোবল বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যারা বিশ^াস করে যে তাদের হোয়াইট হাউসে সম্মান পায় না।
নির্বাচনের সময় থেকে নয়া প্রশাসন সিআইএ-তে শক্তি ও ধারণার এক প্রেরণা সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছিল, ট্রাম্প ও তার অনুগতরা যা পরিকল্পনা করছেন তাতে তা অপসৃত হচ্ছিল। তবে সাবেক পদাতিক অফিসার মাইক পম্পিওকে সিআইএর নেতৃত্বের জন্য মনোনয়ন সংস্থার মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।