পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিক্ষোভ চালিয়ে যাবার ঘোষণা নারীদের
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেয়ার পরদিনই দেশটির একাধিক শহরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। নারীদের সম্পর্কে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিবাদে প্রথমে ওয়াশিংটনে ওই বিক্ষোভ মিছিল হওয়ার কথা থাকলেও পরে দেশটির আরো অনেক শহরে তা ছড়িয়ে পড়ে। মেক্সিকো সিটি, প্যারিস, বার্লিন, লন্ডন আর সিডনিতেও বিক্ষোভ হয়েছে। প্রধানত নারী সংগঠনগুলোর আয়োজনে ওয়াশিংটনে ওই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হলেও তাতে অনেক পুরুষও অংশ নেন। নারীদের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত ‘পুরুষতান্ত্রিক আচরণের’ প্রতিবাদ জানাতে এ বিক্ষোভ ডাকা হয়। নারী অধিকার কর্মীদের আশঙ্কা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তাদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সারা বিশ্বে অন্তত ৬০০ বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বলে জানা গেছে। সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয়েছে ওয়াশিংটনে। সেখানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ অংশ নেয়। মিছিল নিয়ে হোয়াইট হাউজের সামনে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মিছিলের পথজুড়েই লাখ লাখ বিক্ষোভকারী অবস্থান নেয়ায় তা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। সমাবেশে অংশ নিতে আসা মানুষের ভিড়ে ওয়াশিংটনের রেল ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে।
এই বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিতি ছিলো শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের চেয়েও বেশি, যাদের মধ্যে অনেক তারকা শিল্পীও রয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেনÑ সদ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, সংগীতশিল্পী ম্যাডোনা, গায়িকা কেটি পেরি, সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, অভিনেত্রী জুলিয়ান মোর ও স্কারলেট ইয়াহানসন, নারী অধিকারকর্মী গ্লোরিয়া স্টাইনহ্যাম। ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে অনেকেই সেøাগান দেন, ‘তুমি আমার প্রেসিডেন্ট নও’। বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসা’, ‘দেয়াল নয়, সেতু’ ইত্যাদি।
ওয়াশিংটনের এই বিক্ষোভ পরে যুক্তরাষ্ট্র্রের আরো কয়েকটি বড় শহরে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে দশলাখের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভ হয়েছে মেক্সিকো সিটি, প্যারিস, বার্লিন, লন্ডন আর সিডনিতেও। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও জাপানেও তার বিরোধীরা বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নারীদের
এদিকে নারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, এটা ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের শুরু মাত্র। আগামী দিনগুলোতেও এ আন্দোলন চলবে। বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের নারী, অভিবাসী ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ও বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদেই এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এ বিক্ষোভের পরই তারা থেমে যাবেন না। আরও বড় ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
বিশ্বব্যাপী নারীদের এই বিক্ষোভের আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী এভি হারমন বলেছেন, এটা মাত্র শুরু। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। এটা হচ্ছে গণমানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ। আমরা এই মানুষদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলছি এবং তাদেরকে নিজ নিজ এলাকার কংগ্রেস সদস্য ও গভর্নরদের কাছে লবিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এখান থেকেই এ কাজ শুরু হচ্ছে আমাদের।
হারমন জানান, তাদের ধারণামতে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি ছিল। আর বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভে অন্তত ৩০ লাখ নারী-পুরুষ অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া নারী জেনি ময়রিলা বলেন, মিছিলে অংশগ্রহণটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তি। আমরা কিছু একটা করতে চাই। কিন্তু এ জন্য আমাদের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে, যাতে এই ইস্যু নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি। আরও দুই অংশগ্রহণকারী খালিসা জ্যাকসব ও ইয়ায়ে দিওপ জানান, লড়াই চালিয়ে যেতে তারা উৎসাহবোধ করছেন।
ওয়াশিংটন ছাড়াও শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস ও বোস্টনে হাজার হাজার নারী গোলাপী টুপি ও পোশাক পরে রাজপথে বিক্ষোভ ও মিছিলে অংশ নেন। বোস্টনে সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনও নারীদের মিছিলে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে লন্ডন, সিডনি, টোকিও, বার্লিন, ডাবলিন, দিল্লি’র মতো বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন লাখ লাখ নারী।
ইরানবিরোধী পদক্ষেপ নিতে ট্রাম্পের সহায়তা চায় ইসরায়েল
তেহরানের দেয়া ইসরায়েল ধ্বংসের হুমকির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহায়তা চাইছে তেল আবিব। শনিবার ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, শিগগিরই নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি।
ভিডিওতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘শিগগিরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করেছি আমি। ইসরায়েলকে ধ্বংস করার জন্য ইরান সরকারের পক্ষ থেকে যে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় কীভাবে মোকাবেলা করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা করব।’
ভিডিওতে ইংরেজিতে বক্তব্য দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে সেখানে পার্সি ভাষায় সাবটাইটেল জুড়ে দেয়া হয়েছে। ভিডিওতে ইরানি জনগণকে আশ্বস্ত করে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা তোমাদের বন্ধু, শত্রু নই। সরকার নিষ্ঠুর- জনগণ নয়; শাসক আক্রমণাত্মক- জনগণ উষ্ণ...তোমাদের (ইরানিদের) গর্ব করার মতো ইতিহাস আছে। তোমরা অনেক সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দেশ। দুঃখজনকভাবে তোমরা এক ঐশ্বরিক শাসন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত’।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার আগে বেশ কয়েকবারই ট্রাম্পকে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির সমালোচনা করতে দেখা গেছে। ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় শক্তিধর দেশের মধ্যে হওয়া ওই চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করে শুরু থেকেই। ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে তাদের প্রথম দ্বিপাক্ষিক স্বার্থগত সংঘাতের চিহ্ন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল সেই ঘটনা। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইসরায়েলের অবস্থান অভিন্ন।
১৬ জানুয়ারি টাইমস অব লন্ডন এবং জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইরান পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে খুশি নন। এ চুক্তিকে এ যাবতকালের সবচেয়ে বাজে চুক্তি বলে মনে করেন তিনি। নির্বাচনি প্রচারণার সময় তিনি প্রায়ই বলতেন এ চুক্তি নিয়ে আবারও আলোচনা হবে। অবশ্য জয়ের পর এ ব্যাপারে কিছু বলেননি ট্রাম্প।
২০১৫ সালে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে পারমাণবিক চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় ইরানের পারমাণবিক তৎপরতা সীমিত করে আনার শর্তে দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সমঝোতা হয়। শুরু থেকেই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছেন নেতানিয়াহু। ডিসেম্বরে নেতানিয়াহু বলেন, ইরান পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের অনেক পথ আছে এবং তা নিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ করবেন। সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি, গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।