Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাদুল্যাপুরের নিখোঁজ অপর দুই নেতাও বাড়ি ফিরলেন

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা : সাদুল্যাপুরের নিখোঁজ ৪ নেতার অপর দুই ইউনিয়ন আ. লীগ নেতা মাইদুল ইসলাম প্রিন্স ও ইউনিয়ন যুবদল নেতা শফিউল ইসলাম শাপলাও এবার ১১ দিন পর শনিবার ভোর সাড়ে ৫টায় দিকে বাড়ি ফিরেছে।
এর আগে ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বাড়ি ফিরে নিখোঁজ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সহ-সভাপতি ও দামোদরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডল এবং দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক।
এই ৪ নেতা নিখোঁজ হওয়ার পর সাদুল্যাপুর থানায় অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরী করে নিখোঁজদের পরিবারের লোকজন। এছাড়া তাদের সন্ধান দাবিতে গত ১০ দিন ধরে উপজেলা শহর ও নলডাঙ্গায় মিছিল, মিটিং হরতাল-অবরোধ, মানববন্ধন, থানা ঘেরাও কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলন করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্বজনরা। তাদের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল সাদা পোশাকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের স্বজনদের তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু জেলা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এই ১১ দিনে তাদের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।
নিখোঁজ প্রিন্সের বড় ভাই নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম নয়ন জানান, শুক্রবার রাত দেড়টায় তার ভাই প্রিন্স মোবাইলে ফোন দিয়ে জানান, তারা দু’জন এখন দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় অবস্থান করছেন। এরপর সাদুল্যাপুর থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
ইউনিয়ন আ. লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স জানান, কয়েকজন সাদা পোশাক পড়া লোক শুক্রবার রাত আনুমানিক একটায় তাদের চোখ বাঁধা অবস্থায় মাইক্রোবাসযোগে একটি ফাঁকা জায়গায় নেমে রেখে যায়। তারপর তাদেরকে জানান, সামনের সড়কে তোমার মোটর সাইকেল রাখা আছে ওটি নিয়ে সোজা বাড়ি চলে যাও।
তিনি আরো জানান, তারা দুইজন ওই মোটর সাইকেলযোগে সামনের দিকে কিছুদূর যাওয়ার পর দিনাজপুরের পারবর্তীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় পৌঁছেন। সেখানে তারা দু’জন নিজেদের অসুস্থবোধ অনুভব করলে প্রিন্সের বড়ভাই চেয়ারম্যান নয়নকে ফোন করেন। পরে নয়ন মাইক্রোবাসযোগে রাত ৩টার দিকে এসে তাদেরকে বাড়ি নিয়ে আসেন।
মানসিকভাবে বিষণœ নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা জানান, কারা তাদের ধরে নিয়ে গেছেন এবং ১১ দিন তারা কোথায় ছিলেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে এক জায়গায় তাদেরকে পাশাপাশি কক্ষে চোখ বাঁধা অবস্থায় এ কয়েকদিন রাখা হয়েছিল।
তিনি আরো জানান, তাদের কোনো জিনিসপত্র খোয়া যায়নি। এছাড়া এর মধ্যে তিনি অসুস্থ হলে ডাক্তার ডেকে এনে তার চিকিৎসাও করানো হয়েছে।
সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, তাদের ফিরে আসার কথা শুনেছেন। তবে কীভাবে ফিরে এলেন। তা তিনি এখনও জানতে পারেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এমপি লিটন হত্যার পর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশসহ একাধিক আইনশৃংখলা বাহিনী তদন্ত কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় গত ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দামোদরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান জিম মন্ডল ও দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক লালবাজার থেকে মটর সাইকেলযোগে নলডাঙ্গা রওনা হয়। এরপর থেকে তারা মটর সাইকেলসহ নিখোঁজ। পরদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নলডাঙ্গা কাচারী বাজার এলাকা থেকে ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলাকে ও বেলা সাড়ে ১১টায় নলডাঙ্গা রেলগেট এলাকা থেকে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আ’লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্সকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে মোটর সাইকেলসহ তাদেরকে তুলে নিয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ