পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মো: শামসুল আলম খান : বক্তার তালিকায় ৪০ জন। একে একে সবাই বক্তৃতা করছেন। আর মঞ্চে অলস বসে আছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী। সময় অপচয়ও কম না। আধা ঘণ্টার জায়গায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা! ফলে ঠা-া মাথার এ রাজনীতিক আর চুপ থাকতে পারলেন না। তাকে ‘খুশি’ করতে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও স্থানীয় পৌর মেয়র এ.বি.এম.আনিসুজ্জামানের নানা উপমায় ভূষিত করার থেরাপিও শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি।
স্পষ্টই সৈয়দ আশরাফ বললেন, ময়মনসিংহে ৪ ঘণ্টা বক্তৃতা শুনে এখানেও সাড়ে ৩ ঘণ্টা বক্তৃতা শুনলাম। সাড়ে ৭ ঘণ্টা বক্তৃতা শুনা দুরূহ কাজ। এতে বক্তারাও খেই হারিয়ে ফেলেন। জনসভায় এখন মানুষ বেশি হয় না। পুরনো কথার পুনরাবৃত্তি করলে কেউ আকৃষ্ট হয় না। একটি অনুষ্ঠানের কার্ডে ৪০ জন বক্তার নাম থাকলে সেটি সভার জাতও না।’
শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশালের ঐতিহ্যবাহী নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গৌরবের ৫০ বছর পূর্তি ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেই ঘটলো এমন ঘটনা।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাউল আলম, দুর্নীতি দমন কমিশনের ড.শামসুল আরেফিন, জেলা আ’লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মোহিত উল আলম, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ৭০’র নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু ময়মনসিংহে এসেছিলেন। আমাকে বলেছিলেন, ৫০ থেকে ৬০ জনকে নিয়ে জনসভা করবো। আমি আনন্দমোহন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ৫০ থেকে ৬০ জনকে জড়ো করলাম। সেখানে আমি সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রধান অতিথি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের শেখালেন কীভাবে মানুষের কাছে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু বললেন তোমরা ঘরে ঘরে যাবা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মানুষ সম্মান করে। তার নির্দেশে আমরা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু এভাবেই আমাদের, দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তাই আমাদের শিখতে হবে কীভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করবো।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী প্রযুক্তির এ যুগের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, এ যুগে ইণ্টারনেট ব্যবহার করতে যে শিখবে না সে মূর্খ। এটার ব্যবহার শিখলে সবকিছু আপনার হাতের মুঠোয়। এখন আর লাইব্রেরিতে গিয়ে বই খুঁজতে হবে না। ইণ্টারনেটে সব বই আছে। রাজনীতিতে টেকনোলজির ব্যবহার করতে হবে।
দেশের রাজনীতি কলুষিত হয়ে যাচ্ছে এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখনকার ছাত্র সংগঠনগুলোর স্পিরিট নেই। সেই ধারও নেই। এটি শুধুমাত্র রাজনীতির নামে রাজনীতি।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, অনুষ্ঠানের কার্ডে প্রায় ৪০ জন বক্তার নাম। তাদের প্রায় সবাই বক্তৃতা করেছেন। এ স্টাইলের অনুষ্ঠান পরিবর্তন প্রয়োজন। ভারত, ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লক্ষাধিক লোকের উপস্থিতিতে বক্তৃতা করেন মাত্র একজন।’
ফলে বিরক্তিকর এ অনুষ্ঠান শেষ করেই দুপুরের খাবার না সেরেই সোজা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন আশরাফ। আর এতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি, পৌর মেয়র আনিসুজ্জামান। সৈয়দ আশরাফ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পর মেয়র আনিস নিজের রাগ ঢালেন পৌরসভার কয়েক কর্মচারীর ওপর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নানাভাবে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক সৈয়দ আশরাফের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মেয়র আনিস। কিন্তু তার এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে জনপ্রশাসনমন্ত্রী চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফলে নিজে হিট হবার পরিবর্তে এমন কান্ড ঘটিয়ে এখন উল্টো মানসিক অস্বস্তিতেই রয়েছেন মেয়র, এমন গুঞ্জন-গুঞ্জরণ চলছে গোটা উপজেলায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।