পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব রিপোর্ট : এবার রেলের তেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে পার্বতীপুরের লোকো মাস্টার (এলএম) আব্দুল কাদের জিলানী ও তার সহকারী (এএলএম) বেদানুর রহমান। গত শনিবার রাত পৌনে ১১টায় দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ের লোকোসেডসংলগ্ন রহমতনগর রেল কলোনির পাশে রেল ইঞ্জিন (নম্বর- ৬৫১১) থেকে ২৪০ লিটার তেল বিক্রি করার সময় রেলওয়ে পুলিশ তাদেরকে হাতেনাতে আটক করে। এ ঘটনায় এলএম আব্দুল কাদের জিলানী ও এএলএম বেদানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জিলানীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেছেন, এবার যেনো তারা পার না পায়। অপরাধীরা বার বার পার পেয়ে গেলে রেলের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। এর আগেও ট্রেন চালক জিলানী এরকম ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। বার বার অপরাধ করেও সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে তিনি পার পেয়ে গেছেন।
জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট মাসে ৪শ’ লিটার তেল চুরির সময় ঢাকা লেকো শেডে রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়েন লোকো মাস্টার এ কে জিলানী। রহস্যজনক কারণে সেই তেল চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে যায়। নাম প্রকাশ না করে ঢাকা শেডের একজন জানান, জিলানীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে তখন তদবির করেন রেল শ্রমিক লীগের কয়েকজন নেতা। এর আগে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি নাটোরের লালপুর উপজেলার আব্দুলপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী ও রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী দু’টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন সামান্য ব্যবধানে মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পায়। এতে প্রাণে বেঁচে যান দু’টি ট্রেনের শত শত যাত্রী। দিনাজপুরগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিগনাল অমান্য করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ট্রেনের চালক ছিলেন আব্দুর কাদের জিলানী ও সহকারী চালক ছিলেন বেদানুর রহমান। স্থানীয় রেলওয়ে সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ৮টায় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ডাউন ৭৫৪ নম্বর সিল্কসিটি আন্ত:নগর এক্সপ্রেস ট্রেন আব্দুলপুর স্টেশনের ৫নং লাইন থেকে ছেড়ে পুর্ব রেল ক্রসিং পয়েন্ট হয়ে যথারীতি চলে যায়। ওই সময় ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী আপ ৭৫৭ নম্বর দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটির স্টেশনে প্রবেশের সময় হলেও সিল্কসিটি পার করার জন্য সিগন্যাল দেয়া ছিল না। কিন্তু সিল্কসিটি ট্রেনটি পার হতে না হতেই ৮টা ৩২ মিনিটে ৩নং লাইন থেকে ৫ নং লাইনে ঢুকে দুর্ঘটনা কবলিত হয় দ্রুতযান এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে আব্দুলপুর স্টেশন মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাজশাহী-ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার করার জন্য সময় হলেও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইন ক্লিয়ার দেয়া ছিল না। সিগনাল উপেক্ষা করে চলতে গিয়ে ট্রেনটি মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজ লাইনে ঢুকে পড়ে। এ ব্যাপারে দুর্ঘটনাকবলিত দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক আব্দুল কাদের জিলানী বলেছিলেন, ঘন কুয়াশায় সিগন্যাল দেখতে না পেয়ে তিনি ট্রেনটি নিয়ে ঢুকে পড়েন। কিন্তু ওই ট্রেনের যাত্রীরা জানান, সেদিন খুব একটা কুয়াশা ছিল না। একজন চালকের সামনের সিগনাল সম্পর্কে ধারণা থাকে। রেল সূত্র জানায়, ঘন কুয়াশার দোহাই দেয়া হলেও সেদিনও একইভাবে চলন্ত ট্রেন থেকে তেল পাচার করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও রেলওয়ের তদন্তে রহস্যজনকভাবে সে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় জিলানী ও তার সহকারী বেদানুরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে আবার তারা চাকরিতে যোগ দেয়।
সূত্র জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন মিটার গেজের চালকদের দিয়ে শর্টট্রিপ চালানোর সিদ্ধান্ত হলে ব্রডগেজের চালকরা তাতে আপত্তি জানায়। সে সময় ব্রডগেজের চালকরা জিলানীসহ মিটার গেজের কতিপয় চালকদের বিরুদ্ধে তেল চুরির অভিযোগ এনে বলেছিলেন, তাদের সাথে এক ইঞ্জিনে কাজ করতে গেলে চুরির দায় আমাদের কাঁধেও আসতে পারে। সে কারণে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের ইঞ্জিন পার্ব্বতীপুরে পরিবর্তন করা হতো। অর্থাৎ মিটার গেজের চালকদের কাছে থেকে ইঞ্জিনের চার্জ নিতেন না ব্রডগেজের চালকরা। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই আশঙ্কা সত্যি হলো। তেল চুরির দায়ে ধরা পড়লেন জিলানী ও তার সহকারী বেদানুর। বিষয়টি নিয়ে এ কারণেই তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।