পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চার ওমরাহ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত
শামসুল ইসলাম : ওমরাহ’র নামে সউদী আরবে মানবপাচারকারী চক্র আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত ২৩ অক্টোবর থেকে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ ওমরাহ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু শুরু করেছে। গত ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে প্রথম ওমরাহ যাত্রীদের ফ্লাইট শুরু হয়েছে। শতাধিক ওমরাহ এজেন্সি’র মাধ্যমে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রী ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামের শাহ আমানত (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে ওমরাহ’র নামে ১৪ জন নারী-পুরুষকে সউদী আরবে মানবপাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। ইমিগ্রেশন পুলিশ এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইট থেকে সউদী গমনেচ্ছু ১৪ জন ওমরাহ যাত্রীকে নামিয়ে এনে আটক করে। সউদীর ওমরাহ ভিসাযুক্ত উল্লেখিত যাত্রীদের পাসপোর্টও পুলিশ জব্দ করে। এ ব্যাপারে পতেঙ্গা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১৯/১৯। ওমরাহ’র নামে সউদী আরবে মানবপাচারের ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। হাবের একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ওমরাহ’র নামে সউদীতে মানবপাচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যারা ওমরাহ’র নামে সউদীতে মানবপাচার শুরু করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়েরের পর পরই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল জলিলের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (হজ-১) মোঃ আবুল হাসান গত ১৯ জানুয়ারী ওমরাহ’র নামে সউদী আরবে মানবপাচারের অভিযোগে ৪টি ওমরাহ লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করেন। কিন্তু প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস লিমিটেড (৩৬৪) চলতি বছর ওমরাহ যাত্রী প্রেরণের প্রক্রিয়াই শুরু করেনি তার পরেও উক্ত ওমরাহ লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী আবিদ নাসরুল্লাহ তার লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করার আদেশ পেয়ে হতবাক হন। গতকাল শনিবার তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ওমরাহ প্রক্রিয়া শুরুই করিনি সউদী কাউন্টার কোম্পানীর সাথে চুক্তির বই ও পাসওয়ার্ডও হাতে পাইনি, তার পরে কিভাবে সউদী আরবে ওমরাহ’র নামে মানবপাচারের অভিযোগে আমার ওমরাহ লাইসেন্স বাতিল করা হলো তা’ বোধগম্য নয়। একটি মহল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমার ওমরাহ লাইসেন্স প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস লিমিটেডের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যে মূলকভাবে ফৌজদারী মামলায় ঢুকিয়েছে। তিনি বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো যাচাই বাছাই না করেই নির্দোষ একটি ওমরাহ এজেন্সির (প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস) লাইসেন্স বাতিল করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আজ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে ওমরাহ লাইসেন্স বাতিলের আদেশ দ্রুত প্রত্যাহারের জন্য লিখিত আবেদন পেশ করবেন। কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করেই তড়িঘড়ি করে ওমরাহর নামে সউদীতে মানবপাচারের অভিযোগে প্যারামাউন্ট ট্রাভেলসের লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (হজ-১) মোঃ আবুল হাসান বলেন, ধর্মমন্ত্রী ও ধর্ম সচিবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই গত ১৯ জানুয়ারী চারটি ওমরাহ লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের হলে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। সিনিয়র সহকারী সচিব আবুল হাসান বলেন, বাতিলকৃত প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস যদি আপীল করে তারা ওমরার কার্যক্রম না করে থাকলে অবশ্যই সুবিচার পাবেন।
সউদীতে ওমরাহর নামে মানবপাচারের অভিযোগে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্তকৃত ওমরাহ লাইসেন্সগুলো হচ্ছে, টপ ওয়ান এভিয়েশন (৪০৭), সউদী বাংলা এয়ার সার্ভিস লিমিটেড (৩৬০), সামিট এয়ার ইন্টারন্যাশনাল (৩৩৮) ও প্যারামাউন্ট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস লিমিটেড (৩৬৪)। ২০১৫ সালে ওমরাহ’র নামে সউদী আরবে ১০৪টি ওমরাহ এজেন্সি প্রায় ১১ হাজার মানবপাচারের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছিল। এতে সউদী সরকার এক বছর ওমরাহ ভিসা বন্ধ রেখেছিল। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এসব দায়ী ওমরাহ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। শাস্তি প্রাপ্ত অনেকে ওমরাহ এজেন্সিই আইনের ফাঁক-ফোকরে এবং দফায় দফায় আপীল করে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে অবমুক্তি পেয়েছে। হাবের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ্যাসুরেন্স ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী শহিদুল্লাহ মাষ্টার বাতিলকৃত ওমরাহ এজেন্সি সউদী বাংলা এয়ার সার্ভিস লিমিটেড ভাড়া নিয়ে ওমরাহ যাত্রী পাঠিয়ে আসছিলেন। মাসুদ ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী খালেদ মোঃ আবু সায়েম মাহফুজুর রহমানের টপ ওয়ান এভিয়েশন ভাড়া নিয়ে ওমরাহ যাত্রী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হাবের ঐ নেতা বলেন, দু’বছর আগে ওমরাহ নিয়ে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টির পর চলতি বছর ধর্মপ্রাণ ওমরাহ যাত্রীরা নির্বিঘেœ ওমরাহ পালন করে আসছিলেন। কিন্তু অসাধু মানবপাচারকারী চক্র আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এদের শুরুতেই দমাতে হবে না হয় প্রকৃত ওমরাহযাত্রীদের নিয়ে আবার অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।