Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শহীদ মিনারে খালেদা জিয়াকে বাধা দিয়েছে পুলিশ ও ক্ষমতাসীনরা

অতর্কিত লাঠিচার্জে বিএনপির ৫০ নেতাকর্মী আহত

প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খালেদা জিয়া শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণের সময় সংঘটিত ঘটনাবলির জন্য পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনকেই দায়ী করেছে বিএনপি। গতকাল রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, গতকাল একুশের প্রথম প্রহরে বিএনপি চেয়ারপার্সন তার বাসা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসা পর্যন্ত পুলিশ বারবার বাধা প্রদান করেছে। গুলশানে তার বাসভবনের সামনেই পুলিশ প্রথম ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। সব বাধা অতিক্রম করে চেয়ারপার্সনের গাড়িবহর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছাকাছি এলে পুলিশ দুই জায়গায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে এবং অপেক্ষামাণ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এ ঘটনায় প্রায় ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হন। চেয়ারপার্সনের গাড়িবহরকে বারবার বাধা প্রদান ও নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শহীদ মিনারে বিএনপির নেতাকর্মীরা জুতা পায়ে উঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি করেছে, একটি মিডিয়া জুতা পায়ের ফুটেজ দেখিয়েছেÑ এরকম প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, এটা ঠিক নয়। আমরা নিজেরা একুশের প্রথম প্রহরে সেখানে অবস্থান গ্রহণ করে নিজেরা দায়িত্ব পালন করেছি। আমার পায়ে যথেষ্ট সমস্যা আছে, রড লাগানো আছে। তারপরও খালি পায়ে শহীদ মিনারের যে মর্যাদা তা অক্ষুণœ রাখতে অবস্থান গ্রহণ করেছি। আমরা সেখানে কাউকে জুতা পায়ে আসতে দেখিনি।
এটা বানোয়াট, অসত্য, মিথ্যা ফুটেজ দেখিয়েছে। কারণ অনেক মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন সরকারের অত্যন্ত অনুগ্রহভাজন ও প্রিয়ভাজন। বিএনপির ভাবমূর্তিকে একটি বিশেষ দিবস উপলক্ষে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার যেমন নানাভাবে নানা বিষয়ে বলছেন। ঠিক তার সমান্তরালে এটা বলার জন্য এবং একটা কালিমালিপ্ত করার জন্য তারা যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, এটা তার অংশ।
জুতা পায়ে কারা উঠেছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের অঙ্গসংগঠনগুলো সদা তৎপর। তারা ছাড়া আর কেউ করতে পারে না।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, একুশ হচ্ছে আমাদের প্রথম জাতিসত্তার পরিচয় চিহ্ন। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত যে পরিণতি তার প্রথম সোপান হচ্ছে এই ভাষা আন্দোলন। অনেক ভাষাসৈনিক জাতীয়তাবাদী দল করেন। এটা শুধ যে শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের লোকজন আছেন, তাদের শ্রদ্ধাবোধ আছে আর আমাদের শ্রদ্ধাবোধ নেই। তাহলে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, কাজী মাহবুব হোসেনের মতো লোকরা যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন ও দিচ্ছেন, তারা বিএনপি করতেন না।
রিজভী আরো অভিযোগ করে বলেন, নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে স্থানীয় নেতা আলমগীর হোসেনকে হত্যা করে। ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ক্ষমতাসীনরা বিএনপির নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে যেতে দেয়নি।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র ক্রয় ও জমা দিতে বাধা দেয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, সাতক্ষীরায় কলারোয়া উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রবলভাবে বাধা দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করছে। তারা নির্বাচনের অফিসকে বাড়ি-ঘর করে ফেলেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল ইসলামসহ দুইজনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় সন্ত্রাসীরা প্রার্থীর সামনেই ছিঁড়ে ফেলেছে। এর উদ্দেশ্য একটাইÑ বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না দেয়া।
তিনি বলেন, কেবল তাই নয়, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাইফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। বাগেরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়নেও আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কিনতে দিচ্ছে না পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডাররা। বিভিন্ন জায়গায় হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশ বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গ্রেফতারের জন্য হানা দিচ্ছে। তাদের বাড়ি-ঘর সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর করছে। অনেক প্রার্থী প্রাণভয়ে এলাকা ছাড়া, পরিবারছাড়া।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Suvro ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:৩২ পিএম says : 0
    মিলেমিশে কাজ করা উচিত। আর উভয়পক্ষের মনে করা শত্রুকে কখন ছোট বা দূর্বল ভাবতে নেই। অপর্যাপ্ত শক্তি কখনো কখনো শত্রু হয়ে যেতে পারে। বরং নিজেকেই মনে মনে ছোট ভেবে কাজ করা উচিত।।
    Total Reply(0) Reply
  • Nayem Hasan ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:৩৪ পিএম says : 0
    এই আচরণ গ্রহণ যোগ্য নয়
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শহীদ মিনারে খালেদা জিয়াকে বাধা দিয়েছে পুলিশ ও ক্ষমতাসীনরা
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ