Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রহস্য এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি প্রাডো গাড়ির

গাড়ির মালিক রিনা বেগম!

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামসুল হুদা লিটন কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে : কাপাসিয়া উপজেলার দস্যুনারায়নপুর বাজার সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধারকৃত কোটি টাকার বিলাসবহুল প্রাডো জীপ গাড়িকে ঘিরে রহস্যের জটলা খুললেও প্রাথমিক অনুসন্ধানে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের সূত্র ধরে ঢাকার মিরপুর থানা এলাকার একটি ঠিকানা পাওয়া গেছে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক জানান, নদী থেকে উদ্ধার করা গাড়িতে লাগানো নম্বর প্লেট (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-২০২৯) বিআরটিএ এর মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হয়েছে। এ নম্বরটি ঢাকার মিরপুরের রিনা বেগম, পিতা আবদুর রব, ২/এইচ, বাসা ৯/১৪ নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত। গাড়ির ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৬ সালের ১২ ডিসেম্বর। সবশেষ ১৯৯৯ সালের ১৩ জুলাই গাড়ির টেক্স টোকেন করা হয়।
কিন্তু পুলিশ উল্লেখিত ঠিকানায় অনুসন্ধান করে রীনা নামের কাউকে পায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, গাড়ীটি ফেলে দেয়ার সময় তাতে ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করা হতে পারে। এতে রহস্যের জট আরও ঘনীভূত হয়েছে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, কাপাসিয়া থানায় গাড়ি উদ্ধার সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। জিডিটি করেন থানার এসআই দুলাল মিয়া। সাধারণ ডায়রিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় জীপটি পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইঞ্জিনের সাথে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এর কোনো রকম ভিন্নতা আছে কিনা তাও আমরা দেখছি। যদি কোনো রকম ভিন্নতা থাকে যাচাই-বাছাইয়ের পর এটি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি আরো জানান, গাড়ী উদ্ধারের পর এনবিআরের পক্ষ থেকেও যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদের ইঞ্জিন নাম্বার দিয়েছি।
গাড়ি উদ্ধারের বিষয়ে দায়িত্বে নিয়োজিত থানার এসআই দুলাল মিয়া জানান, গাড়ির চেসিস নম্বর আর জেট জে ৯৫-০০৩১৯৬০ ইঞ্জিন নম্বর পাওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে।
এসআই দুলাল মিয়া আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন মাছ ধরার জন্য নদীতে জাল দিয়ে ঘের তৈরী করে। দুপুরে ঘের দেখতে গিয়ে জীপটি দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেয়। পরে শিকল লাগিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় জীপটি পানি থেকে উঠানো হয়। গাড়ির গ্লাসগুলো অক্ষত, তবে কিছু কিছু জায়গায় কাদা লেগে আছে। আমি নিজে বাদী হয়ে এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছি।
এদিকে, গাড়িটি উদ্ধারের পর তিন দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খোঁজ নিতে আসেনি কেউ। তবে এক নজর দেখার জন্য নানা শ্রেণীর মানুষ থানায় ভিড় করছেন। ছবিও তুলছেন। ফেসবুকেও ছেড়ে দিচ্ছেন উদ্ধারকৃত প্রাডো গাড়ির ছবি। এই প্রাডো গাড়িটি গত তিন দিন যাবৎ টক অব দ্য কাপাসিয়ায় পরিণত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাড়িতে চাবি লাগানো ছিল। পানিতে ডুবে জীপটির বিভিন্ন অংশে মরিচা পড়েছে। তবে গাড়ীর রং অনেকটাই সাদা। গাড়িটির পেছনে এক্সট্রা চাকাও রয়েছে। নিচের চারটি চাকার মধ্যে তিনটি চাকার মধ্যে হাওয়া রয়েছে। দুই পাশের জানালার গাসগুলো নামানো ছিল। তবে এর নাম্বার প্লেটে লেখা ছিলÑ ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-২০২৯।
প্রকাশ, এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে এবং সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে একটি প্রাডো জীপ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, কোটি টাকা মূল্যের প্রাডো মডেলের একটি গাড়ি নদীতে পাওয়ায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছে গাড়িটি আসলে কার। তবে তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, উদ্ধারকৃত প্রাডো গাড়ির সাথে বড় ধরণের অপরাধ চক্র জড়িত থাকতে পারে। কেন কোটি টাকার গাড়ি নদীতে ফেলা দেয়া হলো, গাড়ির প্রকৃত মালিক কে এসব নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে উৎসুক জনতার মনে। রহস্য উদ্ঘাটন হলে সব প্রশ্নের সমাধান মিলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ